‘আওয়ামী লীগের’ লোকেরাও আন্দোলনে যোগ দেবে, আশা আমীর খসরুর

এই বিএনপি নেতার ভাষায়, “আমরা দুই হাজার লোক যদি প্রাণও দিই, তাহলেও শেখ হাসিনার পতন সম্ভব না। এই জন্য লাখ লাখ লোক নিয়ে আন্দোলনে নামতে হবে।“

সরকার হটানোর আন্দোলনে ‘জোয়ার শুরু হয়েছে’ মন্তব্য করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের কর্মীরাও তাদের আন্দোলনে যোগ দেবেন বলে তিনি আশা করছেন।

শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বিএনপির ‘ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি সফল করতে’ বিভাগীয় প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।

আমীর খসরু বলেন, “নেতাকর্মীদের সাহস দেখতে পাচ্ছি। সমর্থকরাও রাস্তায় নেমে আসছে। বাংলাদেশে এবং বিদেশে একটি কথা উঠছে, শেখ হাসিনা আর কতদিন থাকবে।

“আওয়ামী লীগ এই বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ। তাদের নেত্রী, সাধারণ সম্পাদকের কথায় বুঝতে পারছেন, তাদের মধ্যে একটা বড় ধরনের হতাশা কাজ করছে। তারা ইতোমধ্যে তর্জন গর্জন শুরু করেছে। যত গর্জে তত বর্ষে না। সময়ের অপেক্ষা, হাসিনার লোকজনও আন্দোলনে চলে আসবে।”

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “আমাদের তর্জন গর্জনের দরকার হবে না। আমাদের গর্জন হবে কাজের মধ্য দিয়ে। বেশি কথা বলে আন্দোলন এগিয়ে যাবে না। আমাদের আন্দোলন পরিকল্পিত। সুতরাং বক্তব্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে সরানো যাবে না। পরিকল্পিত আন্দোলনে সরকারের পতন হবে।

“আমাদের কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য সুশৃঙ্খল ও জনসম্পৃক্ততা। এই সরকারকে পতন ঘটাতে হলে, জনসম্পৃক্ততাকে কাজে লাগাতে হবে। কারণ আন্দোলনে আমাদের সুবিধা হলো, দেশের জনগণ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলে গেছে। তারা টাকা দিয়ে, মাস্তান দিয়ে যে কাজটি করতে পারবে না, সেটি আমরা সাধারণ জনগণকে দিয়ে করতে পারব।”

আমীর খসরু আরও বলেন, “আমরা দুই হাজার লোক যদি প্রাণও দিই, তাহলেও শেখ হাসিনার পতন সম্ভব না। এই জন্য লাখ লাখ লোক নিয়ে আন্দোলনে নামতে হবে। মানুষ যখন রাস্তায় নেমে যাবে, তখন শেখ হাসিনার আশপাশের লোকজনও এদিকে ধাবিত হবে।”

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মো. নাছির উদ্দিন বলেন, “চট্টগ্রাম মহানগরে এক ঘণ্টার ডাকে পুরো নগর অচল করার মত নেতা আছে। কোনো জেলায় যদি আন্দোলনের নেতা প্রয়োজন হয়, তাহলে চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে যান। এদের নখদর্পণে পুরো নগর।”

বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, “ফেইসবুকের ছবি তোলার জন্য এই আন্দোলন নয়, কঠিন আন্দোলন করতে হবে। চট্টগ্রামের নেতারা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে তাহলে চট্টগ্রাম থেকেই সরকারের পতন হবে। আমাদের কথা হবে কম, কাজ হবে বেশি।”

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন ফারুক, মামুন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, উপজাতি বিষয়ক সম্পাদক ম্যা মা চিং, মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, সহ ধর্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, মনি স্বপন দেওয়ান ও কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বক্তব্য দেন।