চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ এলাকায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এর একটি দল পাহাড় কাটা ও খাল ভরাটের ঘটনা পরিদর্শনে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের এ ঘটনায় আকবর শাহ থানায় গিয়ে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলার কথা জানিয়েছেন সংগঠনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মুনীরা পারভীন।
তবে সংগঠনটি যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন সেই ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিম দাবি করছেন, বাধা দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তার এলাকা থেকে কাট্টলী পর্যন্ত খালের পুরোটাই উন্মুক্ত আছে।
এদিন দুপুরে বেলা’র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নেতৃত্বে একটি দল নগরীর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের লেকসিটি আবাসিক এলাকায় পাহাড় কাটা পরিদর্শনে যান। এরপর কালির ছড়া খাল ভরাটের এলাকায় গেলে তারা বাধার মুখে পড়েন। পরে প্রতিনিধি দলটি কাজ অসমাপ্ত রেখেই কাটা পাহাড় এলাকা হয়ে বায়েজিদ লিংক রোডে চলে যায়।
সেখানে তারা জানতে পারেন ওই তরুণরা লেকসিটি আবাসিক এলাকায় তাদের গাড়িটি আটকে রেখেছেন; তখন বিষয়টি আকবর শাহ থানায় জানানো হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান মুনীরা পারভীন।
এ বিষয়ে আকবর শাহ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম সাকের আহমেদ জানান, কিছু লোকজন তাদের গাড়ি আটকে রেখে তাড়া করেছিল এবং হুমকি দিয়েছিল। পরে পুলিশ গিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করেছে।
থানায় অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মুনীরা বলেন, উত্তর পাহাড়তলীর সুপারি বাগান এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড় কাটা এবং কালির ছড়া খাল ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিমের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন বাধার সৃষ্টি করে এবং আক্রমণাত্বক অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে। তারা বারবার পরিদর্শনকারীদের কেন এসেছেন, কোথা থেকে এসেছেন ইত্যাদি প্রশ্ন করতে থাকেন।
খবর পেয়ে পুলিশ চালকসহ গাড়িটি উদ্ধার করে বায়েজিদ লিংক রোডে পাঠালে গাড়িতে ওঠার সময় তাদের লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়া হয় বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে রিজওয়ানা হাসানকে মোবাইলে কল করা হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে বলেন, “সভা শেষ হলে কথা বলতে পারব।”
পরিদর্শক দলটির সঙ্গে কয়েকজন সংবাদকর্মীও ছিলেন; তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ মুনীরার।
অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর জসিম বলেন, “আমি সেখানে যাইনি। ওয়ার্ড কার্যালয়ে ছিলাম। আমার লোকজনও সেখানে যায়নি। বেলা’র উনারা দুপুর ১২টায় এসে আড়াইটা পর্যন্ত সেখানে ছিলেন। পরিদর্শনসহ বিভিন্ন কাজ করেছেন বলে শুনেছি।”
গাড়ি আটকে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, “পুলিশ আগে থেকেই সেখানে ছিল। গাড়ি আটকে রাখার কোনো ঘটনা ঘটেনি।”
কালির ছড়া খাল দখলের বিষয়ে পাল্টা অভিযোগ করে মো. জসিম বলেন, “আমার এলাকা থেকে কালীর ছড়া খাল কাট্টলী পর্যন্ত পুরোটাই উন্মুক্ত আছে। এখন কেউ যদি ফিরোজ শাহর নালাকে বা কারও বাসাবাড়িকে খাল দাবি করেন সেটা তো হয় না।
“আমি খালের দুপাড়ে গাইডওয়াল করে দিয়েছি। ডিসি অফিসের লোকজন এবং এসি ল্যান্ড এসে খালের পরিস্থিতি দেখে গেছেন। দখলদার যারা তারাই এখন কাহিনী করছে। উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাচ্ছে। দুয়েকদিনের মধ্যে আমি আপনাদের দখলদারদের বিষয়ে রিপোর্ট দিব।”
আকবর শাহ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম সাকের আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে এজাহারে পেয়েছি। মামলা নিব।”