চট্টগ্রামে ডিবির অভিযানকালে ‘অসুস্থ’ হয়ে মৃত্যু

চুরির ঘটনায় নাছিরের সম্পৃক্ততা পেয়ে তাকে ধরতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2023, 12:01 PM
Updated : 3 Feb 2023, 12:01 PM

চট্টগ্রামে এক বাসায় ডিবি পুলিশের অভিযানকালে ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়ার পর গৃহকর্তা নাছির উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে।

নগরীর পশ্চিম শহীদ নগর এলাকায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতের ওই অভিযানে স্থানীয়দের ইটপাটকেল নিক্ষেপে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি ফেরদৌস জাহান জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ফটিকছড়ি থানায় গরু চুরির মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে নাছির উদ্দিন (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে অভিযানে যায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এ সময় আসামি নাছির অসুস্থবোধ করায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।”

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন জানান, “গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে নাছিরের নাম এসেছিল। তিনি গরু চোরদের অর্থ লগ্নি করতেন এবং চোরাই গরু কিনে নিতেন।

“বিষয়টির সত্যতা পেয়ে বায়েজিদ থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রাত দেড়টার দিকে নাছিরের বাসায় অভিযানে যায়।”

অভিযানের বর্ণনায় ডিবি কর্মকর্তা আরিফ বলেন, “প্রথমে দরজা না খুলে পুলিশকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখে নাছির। পরে দরজা খোলার পর পুলিশ ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় নাছির আগে দুবার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া এবং তার হার্টে রিং থাকা ও হার্ট ২৮ শতাংশ কাজ করার বিষয়টি পুলিশকে জানায়।

“এ সময় গোয়েন্দা পুলিশের দলটি সকালে নাছিরকে বায়েজিদ থানায় গিয়ে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে চলে আসছিল। তখন তিনি বুকে ব্যাথা করছে বলে জানান। পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”

তবে দরজা ভেঙে পুলিশ বাসায় প্রবেশ করেছে অভিযোগ করে নাছিরের শ্যালক শহীদুল ইসলাম বলেন, “রাত ৩টার দিকে বিষয়টি জানতে পেরে আমি দুলাভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। এ সময় পুলিশের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তারা রাজি হয়নি। অসুস্থ বোধ করায় স্থানীয়দের সহায়তায় অ্যাম্বুলেন্স ডেকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।”

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ অভিযানে বাসায় যায় অভিযোগ করে নাছিরের ছেলে ইফতেখার উদ্দিন বলেন, গভীর রাতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তাদের বাসায় যায়। ওই সময় বাসায় তার বাবা ছাড়া অন্য কোনো পুরুষ ছিলেন না।

“পুলিশ বাসায় অভিযানে গেলেও তাদের কাছে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল না। বাসায় পুলিশ আসার পর আমার বাবা তাদের সঙ্গে কথা বলেন, পরে খবর পেয়ে আমিও বাসায় যাই। তাদের কাছ থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর দেয়নি।”

কয়েক বছর আগে নাছিরের হার্টে রিং পরানো হয়েছিল জানিয়ে ইফতেখার বলেন, “পুলিশ দেখে আমার বাবা অসুস্থবোধ করেন। এ সময় তাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”

পরোয়ানা না থাকার বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফ বলেন, “নাছিরের নাম এসেছে জবানবন্দিতে। বিষয়টি আমরা যাচাই-বাছাই করে সম্পৃক্ত থাকার সত্যতা পেয়েছি। তার অতীতের রেকর্ডও ভালো না।

“আসামির জবানবন্দিতে কারও নাম আসলে সত্যতা পাওয়া গেলে পুলিশ যে কাউকে আটক করতে পারে।”