“বিমান বাংলাদেশের যে উড়োজাহাজে সোনা চোরাচালান হয়েছে সেটিও অভিযুক্ত, তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাইবো।”
Published : 26 Dec 2024, 10:57 PM
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে দুবাই থেকে আসা উড়োজাহাজ থেকে ২০টি সোনার বার উদ্ধারের পর সেটি ‘কাগজে কলমে’ জব্দের কথা বলছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা উড়োজাহাজটির (বিজি-১৪৮) একটি আসনের নিচ থেকে ২ কেজি ৩২০ গ্রাম ওজনের ২০টি সোনার বার জব্দ করা হয়।
এরপর রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উড়োজাজাহাজ জব্দের খবর দেয় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়েছে, প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা মূল্যের সোনা চোরচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে রজশাহী শহরের বোয়ালিয়ার আতিয়া সামিয়া নামের এক নারীকে আটক করা হয়েছে। তিনি সোনার ব্যবসায় করেন।
এ ঘটনায় জব্দ করা উড়োজাহাজটি বোয়িং-৭৭৭ মডেলের একটি উড়োজাহাজ।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিনহাজ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিমান বাংলাদেশের যে উড়োজাহাজে সোনা চোরাচালান হয়েছে সেটিও অভিযুক্ত।
তিনি বলেন, “ফ্লাইটের ভেতরে চোরাচালান হবে আর সেখানকার কর্মীরা টের পাবে না সেটা তো হয় না। এ ব্যাপারে তাদের ব্যাখ্যা চাইবো।
“এটা ডকুমেন্টারি জব্দ, উড়োজাহাজ তো আর ফিজিক্যালি জব্দ হয় না। জব্দ করা আমাদের উদ্দেশ্য না।”
শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, “প্রায় ৮ থেকে ৯ বছর আগে একইরকম অভিযোগে দুটো উড়জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটে। আমরা মূলত চোরচালানের বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য উড়োজাহাজটি জব্দ করেছি।”
জব্দ করা উড়োজাহাজটি যাত্রী পরিবহন করতে পারবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মিনহাজ বলেন, “যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। যেহেতু উড়োজাহাজটি ফ্লাইট পরিচালনা করে, তার সঙ্গে একটা আর্থিক যোগ রয়েছে, এটি বসে থাকলে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ গুণতে হয়।”
জব্দ করার ঘটনায় তাহলে কী প্রভাব পড়বে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিমানের স্টাফ, কেবিন ক্রুসহ সংশ্লিষ্টদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
“একইসাথে তাদের আরো জবাবদিহিতার আওতায় আনার এবং বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে এদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার অনুরোধ করা হবে।”
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের কমিশনার বিমান কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা চাইবেন।
মাসখানেক আগে দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোকে এ বিষয়ে সতর্ক করে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে এই শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, “আমরা মনে করি যে এয়ারলাইন্সের বডিতে করে চোরচালান করা হয়, সেটির সঙ্গে ওই এয়ারলাইন্সের কর্মীরা জড়িত না থাকলে চোরাচালান সম্ভব নয়।”
শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিন বলেন, “আমরা এসব সোনার বার সিটের নিচে পাই। ওই সিটের যাত্রী একজন নারী। উনার ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি অনলাইনে সোনার ব্যবসার পাশাপাশি দুবাইয়ে একটি সোনার দোকানের কর্মচারীও।”
ওই নারী মৌখিকভাবে এসব সোনার বার আনার বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে শুল্ক কর্মকর্তা মিনহাজের দাবি। তিনি বলেন, “তার ভিজিটিং কার্ডেও লেখা আছে তিনি সোনা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।”
সোনার বার জব্দের পর বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে বাকি যাত্রীদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা বলেছেন বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর।
তিনি বলেন, বিমানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য কাগজে কলমে জব্দ করা হয়েছে বলে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিন আমাদের জানিয়েছেন। তবে বিমানের ওই ফ্লাইটটি সাধারণভাবে যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে।
আরো পড়ুন: