মঙ্গলবার দুপুরে সীতাকুণ্ডের ওই ডিপোর গেটের সামনে আবদুল মনির হোসেনের (৩০) ছবি আর ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে সবাইকে দেখাচ্ছিলেন আবদুল করিম। সঙ্গে রয়েছেন মনিরের বন্ধু মো. রানা।
করিম বলেন, “যদি কেউ আমার ভাইকে কোথাও দেখেন, যদি খবর পাই, এ আশায় এসেছি।”
শনিবার রাতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের যৌথ বিনিয়োগের কোম্পানি বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের সময় সেখানে কর্মরত ছিলেন ‘ফর্ক লিফট অপারেটর’ মনির। এরপর থেকে তার আর খোঁজ মেলেনি।
তিনি বলেন, “সেদিন রাত ৯টার দিকে স্ত্রীকে ফোন করেছিল মনির। জিজ্ঞেস করেছিল খাবার আর ওষুধ খেয়েছে কি না।”
সেসময় ডিপোতে আগুন লেগেছে জানিয়ে টেলিফোনে মনির বলেছিলেন, “পরে ফোন করবে। পরে আর ফোন করেনি। আমরাও কল করে বন্ধ পেয়েছি।”
এরপর ছোট ভাইয়ের খোঁজে শনিবার রাতে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে গেলেও সন্ধান পাননি বড় ভাই করিম।
“রাত ১২ টার দিকে আসি। অনেক খুঁজেও পাইনি। তারপর চট্টগ্রাম মেডিকেলে যাই। সব সরকারি হাসপাতালে যাই। এমনকি সিএমএইচেও গেছি। কোথাও ভাইয়ের দেখা পাইনি।”
তবু আশা ছাড়েননি। তিনি বলেন, “ঢাকায় লোক পাঠিয়েছি। সেখানে কোনো হাসপাতালে আছে কি না দেখতে।”
ডিপোতে আগুন লাগার পর দুই দিন পেরিয়ে গেলেও সেখানে জ্বলছে কিছু কিছু কন্টেইনার। ফায়ার সার্ভিসসহ সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা অংশ নিচ্ছেন অগ্নি নির্বাপন ও উদ্ধার তৎপরতায়।
এদিন বিএম কন্টেইনার ডিপোর পোড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে আরো দুটি ‘দেহাবশেষ’ উদ্ধারের কথা জানান তিনি। ভয়াবহ ওই ঘটনায় এর আগে গত রোববার পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল জেলা প্রশাসন।
উদ্ধার হওয়া ৪১ জনের লাশের মধ্যে ২৪ জনকে সোমবার পর্যন্ত শনাক্ত করা গেছে। বাকিদের দেহ এতটাই পুড়ে গেছে, যে চোখের দেখায় পরিচয় বোঝা সম্ভব না।
সেজন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে বুথ বসিয়ে স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছে সিআইডি।
সোমবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছেন বলে জানান নিখোঁজ মনিরের বড় ভাই করিম।
আরও পড়ুন: