ডিপোর পোড়া ধ্বংসস্তূপে আরো দুটি ‘দেহাবশেষ’

সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোর পোড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে আরো দুটি ‘দেহাবশেষ’ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। 

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2022, 08:50 AM
Updated : 7 June 2022, 09:19 AM

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগের উপ পরিচালক মো. আনিসুর রহমান মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১টার দিকে ডিপো এলাকায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “দুইজনের দেহাবশেষ আমরা পেয়েছি আজ। এর মধ্যে একজন আমাদের ফায়ারের বলে মনে হচ্ছে আলামত দেখে। আর অন্যজন তখন ডিউটিতে থাকা ডিপোর সিকিউরিটি বিভাগের কর্মী বলে আলামতে মনে হচ্ছে।”

ভয়াবহ ওই ঘটনায় রোববার পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল জেলা প্রশাসন, যাদের মধ্যে নয়জনই ফায়ার সার্ভিস কর্মী। সোমবার নতুন করে কারও লাশ উদ্ধার বা মৃত্যুর খবর আসেনি। এক দিন বাদে দুজনের দেহাবশেষ পাওয়ার কথা জানালো ফায়ার সার্ভিস। 

আনিসুর রহমান বলেন, “এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের নয় জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত। আরো তিনজন এখনো মিসিং। ডিএনএ টেস্ট করা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে হয়ত নিশ্চিত হওয়া যাবে।” 

এর আগে উদ্ধার হওয়া ৪১ জনের লাশের মধ্যে ২৪ জনকে সোমবার পর্যন্ত শনাক্ত করা গেছে। বাকিদের দেহ এতটাই পুড়ে গেছে, যে চোখের দেখায় পরিচয় বোঝা সম্ভব না। সেজন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে বুথ বসিয়ে স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছে সিআইডি।  

চট্টগাম শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ওই কন্টেইনার ডিপোতে গত শনিবার আগুন লাগার পর দুই দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও জ্বলছে কিছু কিছু কন্টেইনার। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরাও অংশ নিচ্ছেন অগ্নি নির্বাপন ও উদ্ধার তৎপরতায়।

বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের দুই কোম্পানির যৌথ বিনিয়োগে বেসরকারি এই ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোটি গড়ে তোলা হয় ২০১১ সালে। বাংলাদেশের স্মার্ট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকানা আছে সেখানে।

ওই গ্রুপের আরেক কোম্পানি আল রাজী কেমিকেল কমপ্লেক্সে উৎপাদিত হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানির জন্য রাখা ছিল কনটেইনার ডিপোতে। ওই রাসায়নিকই আগুনকে ভয়ঙ্কর রূপ দিয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা। 

ডিপোতে রাসায়নিকের কত কন্টেইনার আছে জানতে চাইলে আনিসুর রহমান বলেন, “কন্টেইনারের বিষয়ে এখনো ডিপোর মালিকপক্ষ নিশ্চিত করেনি। কখনো ২৮টি, কখনো ৩০টি বলছে। তাদের বলেছি রাসায়নিকের কন্টেইনারগুলো সরিয়ে নিতে। 

“কিছু কন্টেইনার থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এখন না জেনে যদি ফায়ার ফাইটিং করতে যাই, তাহলে কন্টেইনারের ভিতরে দাহ্য বস্তু থাকলে আগুন বাড়তে পারে।

“যাতে আর কোনো দুর্ঘটনা না হয় সেজন্য রাসায়নিকের কন্টেইনার রিমুভ করে ডিপোর অন্য অংশে নিতে বলা হয়েছে। মালিকপক্ষ বলেছে- তারা চেষ্টা করছে। তবে রিমুভ করাও ঝুঁকিপূর্ণ, দ্রুত করা সম্ভব নয়।” 

রোববার ডিপোতে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করলেও এখন দুটি ইউনিট কাজ করছে বলে জানিয়ে আনিসুর বলেন, “আগুন এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। সীমিত হয়ে এসেছে।”

আশপাশের প্রায় সব পুকুরের পানি শেষ হয়ে যাওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের পানির গাড়িতে করে দূর থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর কাজ চলছে বলে জানান তিনি।