জঙ্গল সলিমপুরের মশিউর আবার গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পাহাড়ের অবৈধ বসতি নিয়ন্ত্রণে রেখে চাঁদাবাজি, খুন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মামলায় জামিনে থাকা কাজী মশিউর রহমানকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2021, 12:49 PM
Updated : 6 Dec 2021, 01:05 PM

অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার বস্তির বাইরে বের হওয়ার তথ্য পেয়ে দুর্গম পাহাড় জঙ্গল সলিমপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাব-৭ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোস্তফা জামান জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, পাহাড়ের ওই বসতি নিজম্ব বাহিনী দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখেন মশিউর। পাশাপাশি চাঁদাবাজি, জায়গা দখলসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজেও যুক্ত তিনি। সর্বশেষ ২০১৭ সালে তাকে গ্রেপ্তার হয়। জামিনে বের হয়ে আবার ‘এলাকায়’ সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

“মশিউরকে আটকের পর তার কোমড়ে গোজানো অবস্থায় একটি বিদেশি পিস্তল এবং হাতে থাকা ব্যাগ থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, দুটি এলজি, একটি দোনলা বন্দুক ও একটি ম্যাগাজিনসহ ১৩ রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়।”

র‌্যাব বলছে, মশিউরের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, দখলসহ বিভিন্ন থানায় অন্তত ২৭টি মামলা আছে।

২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে মশিউর বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন মশিউর। তখনও তার বাসা থেকে বিদেশি পিস্তলসহ ১৬টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ২৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে র‍্যাব।

জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড় কেটে সরকারি খাস জমিতে অবৈধ বসতি গড়ে তোলার পেছনে ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদ’ নামের যে সংগঠন রয়েছে, তার সাধারণ সম্পাদক এই মশিউর।

গত এক যুগ ধরে কয়েকশ একর এলাকায় পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হয়েছে ৪০ হাজার মানুষের অবৈধ বসতি। সমিতির নামে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে ‘দুর্ভেদ্য সাম্রাজ্য’।

র‌্যাব বলছে, মশিউর জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় নিজের একটি বাহিনী গড়ে তুলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। সমিতিকে টাকা দিলে তবেই সেখানে বসবাসের অনুমতি মেলে।

দুর্গম ওই এলাকায় প্রশাসনের খুব একটা প্রভাব না থাকায় গ্রেপ্তার এড়াতে বড় বড় সন্ত্রাসীরাও সেখানে গিয়ে আশ্রয় নেয় বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।

পাহাড়ে ওই অবৈধ বসতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০০৪ সালে একাধিক পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ২০১০ সালে স্থানীয় লাল বাদশা ও আলী আক্কাসের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

২০১০ সালের ২৩ মে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ নিহত হন আলী আক্কাস। পরে ছিন্নমূল বস্তিবাসী সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে আসেন বর্তমান সভাপতি গাজী সাদেকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মশিউর।

পুরনো খবর