বৃহস্পতিবার সিসিসির ষষ্ঠ পরিষদের নবম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মত তুলে ধরেন।
নগরীর আন্দরকিল্লায় পুরাতন নগর ভবনের কেবি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় মেয়র রেজাউল বলেন, “নগরীতে সরকারের যে সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে, সেগুলো যেন ঝুঁকি ও ঝামেলামুক্ত থাকে, নাগরিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় ও জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে না দাঁড়ায় এবং নির্বিঘ্নে কাজ সম্পাদন হতে পারে, সে জন্য দেখভাল, তদারকী ও সমন্বয় সাধনের দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও কর্তব্য পালনে সিসিসিকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
“সিটি করপোরেশনের কর্মপরিষদ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত। যে কোনো কর্মকাণ্ডে জবাবদিহিতা দায়বদ্ধতার বিষয়টি অন্যান্য সেবা সংস্থার তুলনায় সিসিসিরই সবচেয়ে বেশি।”
তিনি বলেন, নগরীর চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সিডিএ, ওয়াসা, বিদ্যুৎ বিভাগসহ অন্যান্য সেবা সংস্থার বড় ধরনের সংশ্লিষ্টতা থাকলেও সে তুলনায় সিসিসির সম্পৃক্ততা ‘সামান্য’।
“কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রমের অনেক ক্ষেত্রেই নানান সমস্যা, ভোগান্তি এমনকি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাণহানি ঘটছে। এসবের দায় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের হলেও সাধারণ মানুষের সমালোচনার তীর থাকে সিটি করপোরেশনের দিকেই। কারণ সিসিসি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত।”
সম্প্রতি খাল-নালায় পড়ে একাধিক মৃত্যুর ঘটনায় জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং সিসিসি পরস্পরের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে।
এমনকি সবশেষ সোমবার নগরীর বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের র্যাম্পের পিলারে ফাটল দেখা দেওয়ার ঘটনায় ‘ভারী যান চলাচল’কে দায়ী করে দুই সংস্থা এরজন্য পরস্পরকে দোষারোপ করছে।
নাগরিক সেবা নিশ্চিতে নিজ পরিষদের কাউন্সিলর এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিও আহ্বান জানান মেয়র রেজাউল।
তিনি বলেন, “আমি ক্লিন সিটি দেখতে চাই। পরিচ্ছন্ন বিভাগে কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে, তাদের তদারকি করছেন কাউন্সিলরগণ। তারপরও চট্টগ্রাম পরিপূর্ণ ক্লিন সিটি হয়ে উঠতে পারেনি।
“এখন থেকে এর দায় বর্তাবে কাউন্সিলরদের উপর। নগরীর আলোকায়নের বিষয়ে কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। তার চুরি হয়েছে, বাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে, এসব ঠুনকো কারণ দাঁড় করানো যাবে না। আলোকায়নের ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেওয়া যাবে না।”
পলিথিনমুক্ত নগরী গড়ার অঙ্গীকারও করেন রেজাউল। জলাবদ্ধতার নিরসনে নালা-নর্দমা-খালের উপর স্ল্যাব ও স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতেও বলেন তিনি।
নগরীর বহদ্দারহাট মোড় থেকে রোজ গার্ডেন পর্যন্ত এবং ডিটি রোডের কিছু অংশের দুরবস্থা নিয়েও অসন্তোষ জানান তিনি।
জন্মনিবন্ধন নিয়ে জটিলতা সম্পর্কে সভায় মেয়র বলেন, “এই প্রক্রিয়াটি খুবই টেকিনিক্যাল। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রমকে অধিকতর গতিশীল করা হবে।”
সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলররা।