মির্জা ফখরুলের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরামর্শ হাছান মাহমুদের

বয়সের কারণে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘মতিভ্রম ঘটেছে’ মন্তব্য করে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 June 2021, 03:02 PM
Updated : 20 June 2021, 03:02 PM

রোববার চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বেতাগী বহলপুর আশ্রয়ন প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের কবুলিয়তনামা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তার এমন বক্তব্য আসে।

প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাড়ে ৫৩ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতক জমিসহ সেমিপাকা ঘর দেওয়ার এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশের সমস্ত অর্জন জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হয়েছে। যেখানে সবাই প্রশংসা করছে, সেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কি বলেন!

“দেশের ৫০ বছরের অর্জন নিয়ে তিনি যে কথা বলেছেন, তাতে মনে হচ্ছে বয়সের কারণে উনার মতিভ্রম ঘটেছে। বিএনপির ডাক্তারদের সংগঠন ড্যাবকে অনুরোধ জানাব, মির্জা ফখরুলের মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করাতে।”

শনিবার ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, “পঞ্চাশ বছরে আমরা যত অর্জন করেছিলাম এই সরকার সব কিছু শেষ করে দিয়েছে। আমাদের শিক্ষা শেষ করেছে, আমাদের স্বাস্থ্য শেষ করেছে, আমাদের অর্থনীতিকে শেষ করেছে।

“একটা লুটেরা অর্থনীতি চালু করেছে, সম্পূর্ণ লুটেরা অর্থনীতি। কিচ্ছু হয় না আপনার, লুট ছাড়া। আপনার ১০ হাজার কোটির টাকার একটা প্রজেক্ট হয়ে যায় ৪০ হাজার ৫০ হাজার কোটি টাকা এবং এই ৪০/৫০ হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যায়।”

তার সেই বক্তব্যের জবাবে রোববার হাছান মাহমুদ বলেন, “দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪১ শতাংশ ছিল, সেখান থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।

“আজকে বিশ্বের পত্রপত্রিকায় লেখা হচ্ছে- এক সময়ের ঋণ গ্রহিতা বাংলাদেশ এখন অন্য দেশকে ঋণ দেয়। বিএনপি এবং তাদের মিত্ররা এই সমস্ত উন্নয়ন দেখতে পায় না। প্রতিদিন মিথ্যা কথা অব্যাহত রেখেছে। তাদের রাজনীতির মূল বিষয় হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য এবং তারেক রহমানের শাস্তি।”

অনুষ্ঠানে রাঙ্গুনিয়া প্রান্ত থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান ও উপকারভোগী জাহানারা বেগম প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলে নিজেদের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।

এসময় ইউএনও জানান, দুই দফায় রাঙ্গুনিয়ার ১৬৫টি গৃহহীন অতিদরিদ্র পরিবারের মাঝে দুইশতক জমিসহ সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে হস্তান্তর করা হয়েছে। দলীয়ভাবেও আরো কিছু ঘর নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, “আগে অনেক মানুষের মানসম্মত ঘর ছিল না, বঙ্গবন্ধুকন্যার ঘোষণা অনুযায়ী এখন গৃহের সমস্যারও সমাধান হয়েছে। এখন যারা ঘর পেয়েছে তারা কখনো স্বপ্নেও ভাবেনি এভাবে জমিসহ ঘর পাবেন, এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলবেন।

“স্বপ্নকেও হার মানিয়েছে তাদের প্রাপ্তি। এই ধরনের ঘটনা আমাদের দেশে কখনো ঘটেনি, অন্য কোনো দেশে ঘটেছে বলে আমার মনে হয় না।”

খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু কামনা

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, “তিনি (খালেদা জিয়া) সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, কিন্তু আপনারা দেখেছেন, খালেদা জিয়া হাসপাতালে থাকাকালে প্রতিদিনই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব এবং তাদের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উনার চিকিৎসা নিয়ে কথা বলেছেন।

“এবং দাবি দিয়েছেন, তাকে সুস্থ করার জন্য বিদেশ নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া বাড়ি ফিরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে, দেশে তিনি ভালো সুচিকিৎসা পেয়েছেন এবং ভালো চিকিৎসা পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তারা যে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার দাবি করেছিল, সেটি অমূলক প্রমাণ হয়েছে।”

ট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান, ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান, পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, মেয়র শাহজাহান সিকদারসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে চউপস্থিত ছিলেন।