শুক্রবার রাতে নগরীর সিনিয়র’স ক্লাবে ‘আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী এর সমর্থনে’ সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় নেতারা এক হন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন এবং দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
সভার শেষ দিকে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তবে তিনি মঞ্চে বসেননি।
সভা শেষ হওয়ার পর আসেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিটি নির্বাচন পরিচালনার প্রধান সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, “এ সভা অনানুষ্ঠানিক। আগামীকাল আমাদের মেয়র প্রার্থীর ইশতেহার ঘোষণা করা হবে। আপনারা কেমন চট্টগ্রাম দেখতে চান সে বিষয়ে সুপারিশ জানতে চাই।”
এরপর সাংবাদিকদের মধ্যে একাত্তর টিভির মাঈনুদ্দিন দুলাল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, দৈনিক আজাদীর হাসান আকবর, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব কাজী মহসিন, একুশে টেলিভিশনের হাসান ফেরদৌস, একরামুল হক বুলবুল, সৈয়দ আবদুল ওয়াজেদ, হামিদ উল্লাহসহ কয়েকজন মত দেন।
সাংবাদিকরা নগরীর জলাবদ্ধতা, ভাঙাচোরা সড়ক, মশক নিধন, সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় না হওয়া এবং আগের তিন সাবেক মেয়রের সিটি গভর্নমেন্টের দাবির বিষয়ে কথা বলেন।
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে নিয়ে ইতিবাচক ভাবেন। চট্টগ্রামের উন্নয়ন হচ্ছে। হয়ত কখনও কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে, হয়ত কখনও চেয়ে আনতে হয়। আমরা আজ কোনো ব্যাখ্যা দেব না। আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে ঢেলে সাজাতে চান। চট্টগ্রাম হচ্ছে মূল।”
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম বলেন, “আপনাদের (সাংবাদিকদের) বক্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত। সিটি নির্বাচন আসলে পরিকল্পিত নগরী, নান্দনিক শহরের কথাগুলো আসে। কিন্তু সেটা কীভাবে হবে? টাকা কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কম দেননি। সেগুলো ব্যয় করে সুন্দর নগরী গড়ে তুলতে যে বড় বাধা তা হল সমন্বয়হীনতা।
“মূল কাজের বাইরেও কিছু ঐচ্ছিক কাজ নগরীর মানুষের শিক্ষা-স্বাস্থ্যের জন্য মহিউদ্দিন চৌধুরী করেছেন। তবে সিটি করপোরেশনের মূল কাজ পরিচ্ছন্নতা, সড়ক বাতি, নালা পরিষ্কার করা এগুলো বাধ্যতামূলক কাজ। যদি মেয়রকে লিডিং পার্টনার করে সমন্বয় করা হয় তাহলে কেবল সুফল মিলবে। ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্সে যুগ্ম সচিবের মর্যাদা দিয়ে যে মেয়রকে রাখলে অন্য সংস্থার প্রধানরা আসবেন না- তাই মহিউদ্দিন চৌধুরী, মেয়র হানিফ, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির সিটি গভর্নমেন্টের কথা বলেছেন।”
তিনি বলেন, “সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে একমাত্র মেয়র নির্বাচিত প্রতিনিধি। অন্যরা নির্বাচিত নন। প্রধানমন্ত্রী সেই উপলব্ধি থেকে বিধানটি দিয়েছেন। আইন থাকলেও সব কিছু বাস্তবায়ন হয় না। এটা মিনি পার্লামেন্ট স্টাইলে করা। কেন একটি সেবা সংস্থার প্রতিনিধি সেখানে যাচ্ছেন না? সিটি গভর্নমেন্ট শুধু আইনের বিষয় না। আইনে যেসব সুবিধা দেওয়া আছে তা চর্চা করে ক্ষমতা বাস্তবায়নের সুযোগ আছে। উপ-আইন করারও সুযোগ আছে সে আইনে। সরকারি সংস্থার সাথে মনস্তাত্তিক বিবাদ যেন না হয়। অতীতে দেখেছি, সমন্বয় হলে সুফল বেশি পাই, মনস্তাত্তিক বিবাদ হলে সুফল কম পাই।”
“সিটি করপোরেশনের কাছে আপনারা অনেক প্রত্যাশা করেন। আর্থিক সক্ষমতা না থাকলে কীভাবে করবেন? প্রধানমন্ত্রী মনোনীত আমাদের দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত হবেন- এটা বিশ্বাস করি। নাগরিক সেবা নিশ্চিত করবে সিটি করপোরেশন। কিন্তু এখতিয়ার বর্হিভূত কাজে সিটি করপোরেশনকে দায়ী করা হয়। এ শহর আপনাদের। নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হলে সংকীর্ণতা পরিহার করতে হবে।”
এরপর সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সবার সহযোগিতা চেয়ে সভা শেষ করেন।