মীর নাছিরের মুক্তি চেয়ে আমীর খসরুর বিবৃতি

দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের মুক্তি দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2020, 03:26 PM
Updated : 9 Nov 2020, 03:33 PM

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর নাছিরকে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আমীর খসরু।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “এক এগারোর অনৈতিক সরকার দেশকে বিরাজনীতিকীকরণের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক মামলা দায়ের করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।

“মামলা চলাকালে তার আইনজীবীরা আইনগতভাবে মামলা মোকাবিলা করলেও কোনো বক্তব্য আমলে না নিয়ে তার বিরুদ্ধে সরকারি মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী একতরফা রায় ঘোষণা করা হয়।”

আমীর খসরু বলেন, “জরুরি অবস্থার অনৈতিক সরকারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকারও বিএনপি নেতৃবৃন্দকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার অসৎ উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মীর নাছিরের সাজা বহাল রাখার ব্যবস্থা করে।

“আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন রবিবার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত কর্তৃক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করা গভীর উদ্বেগজনক।”

অবিলম্বে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান আমীর খসরু।

চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মীর নাছির বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।

জরুরি অবস্থার সময় অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মীর নাসির ও মীর হেলালের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ গুলশান থানায় দুদক মামলা করে।

এ মামলায় বিশেষ জজ আদালত একই বছরের ৪ জুলাই রায়ে মীর নাছিরকে ১৩ বছর এবং মীর হেলালকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়।

রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাই কোর্টে আপিল করেন। হাই কোর্ট ২০১০ সালের ১০ আগস্ট মীর নাছিরের এবং একই বছরের ২ আগস্ট মীর হেলালের সাজা বাতিল করে রায় দেয়।

হাই কোর্টের এ রায় বাতিল চেয়ে দুদক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল আবেদন করে। আপিল বিভাগ ২০১৪ সালের ৩ জুলাই এক রায়ে হাই কোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাই কোর্টেই বিচার করার নির্দেশ দেয়।

সে নির্দেশে পুনরায় শুনানি শেষে গত বছর ১৯ নভেম্বর রায় দেয় হাই কোর্ট। এবার রায়ে নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজা বহাল রাখা হয়।

হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি। ১৫৯ পৃষ্ঠার এ রায়ে তাদের রায়ের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছিল।

কিন্তু তারা সে কাজটি না করেই হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে সে আবেদন খারিজ করে দেয়।

ফলে মীর নাছির ও তার ছেলে হেলাল দুজনকেই বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হয়। আর সেখান থেকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। নাছিরের আগে ২৭ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে হেলালকে কারাগারে পাঠানো হয়।