পে-পার্কিং নিয়ে সিসিসির উদ্যোগে পুলিশের আপত্তি

চট্টগ্রাম নগরীর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পে-পার্কিং স্থাপনের উদ্যোগে আপত্তি জানিয়েছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2020, 03:07 PM
Updated : 11 Feb 2020, 03:52 PM

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নগরীর লালখান বাজার থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচের কিছু অংশ টাকার বিনিময়ে গাড়ি রাখার স্থান হিসেবে ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশন। ট্রেড ম্যাক্স নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ফ্লাইওভারের সৌন্দর্যবর্ধন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর কোটি টাকা দেবে, সেজন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ফ্লাইওভারের নিচে কিছু কিছু খালি স্থানে পে-পার্কিংয়ের জন্য দেওয়া হয়েছে।  

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এ উদ্যোগে আপত্তি জানিয়ে গত রোববার নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ওই দিনই লালখান বাজার এলাকায় আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সৌন্দর্যবর্ধন এবং পে-পার্কিংয়ের ভিত্তিস্থাপন করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। 

চিঠিতে বলা হয়, বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরীতে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় আড়াই লাখ যানবাহন চলাচল করছে। এই সকল যানবাহন চলাচলের জন্য নগরীতে পর্যাপ্ত রাস্তা নেই। পাশাপাশি সিডিএ, সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসার নানারকম উন্নয়ন কাজের জন্য রাস্তা খোড়াখুঁড়ি চলছে। এতে রাস্তাগুলো সংকীর্ণ হয়ে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

এই অবস্থায় ফ্লাইওভারের নিচে ওয়াসা মোড়, নিউ মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি রাখার স্থান করলে কিছু প্রতিষ্ঠান এসব স্থানকে নিজেদের পার্কিং স্পট করে নিতে পারে বলে ট্রাফিক পুলিশের আশঙ্কা।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এছাড়া গাড়ি চলাচলের স্থান সংকীর্ণ হলে অনেক গণপরিবহন জায়গা না পেয়ে এলোমেলোভাবে গাড়ি রাখবে, যাতে জনভোগান্তির সৃষ্টি হবে।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম মোস্তাক আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফ্লাইওভারের নিচে গাড়ি পার্কিং করা হলে যানজট বাড়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা শঙ্কায় পড়তে পারে। তাছাড়া বর্ষায় জলাবদ্ধতার কথা বিবেচনা করে এ চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “চট্টগ্রামে পার্কিংয়ের জন্য কোনো নির্ধারিত জায়গা নেই। এর ওপর রাস্তার মাঝখানে গাড়ি পার্কিং করাটা আমাদের কোনোভাবেই যৌক্তিক মনে হয় না।

“ফ্লাইওভারের নিচে খালি জায়গাগুলো আমাদের অনেক সময় ইউ টার্নের জন্য ব্যবহার করতে হয়। আবার অনেক স্থান বৃষ্টির পানিতে ডুবে যায়। এসব জায়গা পার্কিংয়ের জন্য দেওয়া হলে আমরা মনে করি নগরীতে যানজটের সৃষ্টি হবে।”

ফ্লাইওভারের নিচে পে-পার্কিংয়ের উদ্যোগ নেওয়ার সময় সিটি করপোরেশন আলোচনা করেছিল কি না- জানতে চাইলে মোস্তাক সরাসরি উত্তর এড়িয়ে বলেন, “পে-পার্কিংয়ের বিষয়টি ট্রাফিক বিভাগের জানা ছিল না।”

এদিকে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠিকে আপত্তি বলতে নারাজ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী শামসুদ্দোহা।

তিনি বলেন, “ফ্লাইওভারের নিচে চার থেকে পাঁচটি জায়গায় গত দুই বছর ধরে পার্কিং আছে। সে পার্কিং ‘পে’ করলে তো কোনো সমস্যা নেই। যেখানে পার্কিং নাই, সেখানে এরকম কিছু করছি কি না, সেটা তাদের চিন্তা।”

শামসুদ্দোহা বলেন, যেসব স্থানে এখন গাড়ি রাখা হচ্ছে, সেসব জায়গাগুলোই পে-পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করা হবে। নতুন কোনো স্থান পে-পার্কিংয়ের জন্য দেওয়া হচ্ছে না।

ফ্লাইওভারের নিচে যে স্থানগুলো ইউ টার্ন নেওয়ার জন্য রয়েছে, সেগুলো পে-পার্কিংয়ের আওতায় আসবে না বলেও সিটি করপোরেশন কর্মকর্তা জানান।

বিষয়টি নিয়ে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলেও জানান শামসুদ্দোহা।