জেএসসির ফলে উন্নতি, তবু পেছনের সারিতে চট্টগ্রাম

পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় বাড়লেও দেশের শিক্ষাবোর্ডগুলোর মধ্যে এবার পিছনের সারিতে চট্টগ্রাম।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2019, 09:08 AM
Updated : 31 Dec 2019, 09:08 AM

তিন পার্বত্য জেলায় পাসের হার কম হওয়ায় এবং এক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ায় সার্বিক ফলাফলে এই প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টদের।

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় এবার চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। যা গতবছর ৮১ দশমিক ৫২ শতাংশ ছিল।

এবারের ফলাফলে বরিশাল বোর্ডে সবচেয়ে বেশি ৯৭ দশমিক ০৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে; ঢাকা বোর্ডে পাসের হার সবচেয়ে কম ৮২ দশমিক ৭২ শতাংশ। চট্টগ্রামের অবস্থান ঢাকার ঠিক আগে।  

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ছয় হাজার ৪১ জন। গতবছর এ বোর্ডে ৫ হাজার ২৩১ জন পূর্ণ জিপিএ পেয়েছিল।

মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুটোই গত বছরের তুলনায় বেড়েছে।

অন্য বোর্ডের তুলনায় পিছিয়ে থাকার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “তিনটি পার্বত্য জেলার কারণে পাশের হারে বোর্ড পিছিয়ে পড়ে। ওই তিন জেলায় পাশের হার কম।”

চট্টগ্রাম মহানগরে এবার পাসের হার ৮৭ দশমিক ৬৩; গতবার যা ছিল ৮৭ দশমিক ১৯। মহানগর বাদে চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৮১ দশমিক ১৬: যা গতবারে ছিল ৭৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

এ বোর্ডের অধীনে কক্সবাজার জেলার পাসের হারও কমেছে। এবার কক্সবাজারে পাসের হার ৮৪ দশমিক ১০ শতাংশ; যা গতবার ছিল ৮৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে শুধু খাগড়াছড়িতে পাশের হার বেড়েছে। এবার ৮০ দশমিক ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করা এ জেলায় গতবার পাসের হার ছিল ৭৬ দশমিক ৭৫।

রাঙামাটি জেলার এবছর পাসের হার ৭৯ দশমিক ৫০ শতাংশ যা গতবার ছিল ৭৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। বান্দরবান জেলার এ বছরের পাসের হার ৭৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ; যা গত বছর ৮০ দশমিক ০৩ শতাংশ ছিল।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, “পাহাড়ের জনগোষ্ঠী একটু পিছিয়ে পড়া। তাদের আরো পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা দরকার। এখন তাদের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি সুফল মিলবে।”

এক বিষয়ে ফেল কমিয়েছে পাসের হার

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এবার বিষয়ভিত্তিক হিসেবে বাংলায় পাসের হার ৯৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ, গণিতে ৯১ দশমিক ৩০ শতাংশ, ইংরেজিতে ৯১ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং বিজ্ঞানে ৯৬ দশমিক ২৪ শতাংশ।

অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে আইসিটিতে ৯৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং বাংলাদেশ এন্ড গ্লোবাল স্টাডিজ বিষয়ে ৯৮ দশমিক ১০ শতাংশ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। অন্যান্য বিষয়েও পাসের হার ৯০ শতাংশের উপরে।

বিষয়ভিত্তিক পাসের হার এত বেশি হওয়ার পরও গড় পাসের হার কম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, “যে শিক্ষার্থী গণিতসহ অন্য বিষয়গুলোতে পাস করেছে সে হয়ত ইংরেজিতে ফেল করেছে। কেউ হয়তো আবার গণিতে ফেল করেছে। এক বিষয়ে ফেলের কারণেই এবার ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।”

প্রকাশিত ফলাফল অনুসারে এবার চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এক বিষয়ে অকৃতকার্য করেছে মোট ২৬ হাজার ১ জন শিক্ষার্থী। শতকরা হিসেবে এক বিষয়ে অকৃতকার্যের হার ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

চট্টগ্রামে এবার মোট দুই লাখ পাঁচ হাজার ৮৭১ জন জেএসসিতে বসেছিল। এর মধ্যে ৯১ হাজার ৭৯ জন ছাত্র এবং এক লাখ ১৪ হাজার ৭৯২ জন ছাত্রী।

ছাত্রীদের মধ্যে পাসের হার যেখানে ৮৩ দশমিক ০৫ শতাংশ; সেখানে ছাত্রদের ৮২ দশমিক ৭৯ শতাংশ উত্তীর্ণ হতে পেরেছে। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩ হাজার ৬২২ জন ছাত্রী; আর ২ হাজার ৪১৯ জন ছাত্র।

এ বোর্ডে এবার ১০২টি বিদ্যালয়ের শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে; যা গতবারে ছিল ৮৯টি।