খাল উদ্ধারে ২৬ অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিল সিডিএ

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খালের জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কার্যক্রম শুরু করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2019, 03:30 PM
Updated : 2 July 2019, 03:30 PM

মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর কল্পলোক আবাসিক এলাকা সংলগ্ন রাজাখালী খালে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়। দুটি এসকেভেটর নিয়ে সিডিএর শ্রমিকরা উচ্ছেদ কাজ পরিচালনা করে।

উচ্ছেদের প্রথম দিনে রাজাখালী খালের জমিতে গড়ে ওঠা ২৬টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা দখলমুক্ত করা হয় বলে সিডিএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

উচ্ছেদ করা স্থাপনার মধ্যে একটি দুই তলা ভবন, চারটি একতলা ভবন এবং বাকিগুলো সেমিপাকা স্থাপনা রয়েছে।

সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ মঈনুদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ রাজাখালী খালের উচ্ছেদ অভিযান শেষ করা হয়েছে। খালের জমিতে অবৈধভাবে এসব স্থাপনা গড়ে তোলা হয়।”

বুধবার নোয়া খালের সিঅ্যান্ডবি রাস্তার মাথা বালুর হাট এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হবে বলে জানান তিনি।

মঈনুদ্দিন বলেন, “উচ্ছেদ অভিযান শেষে এই জমি প্রকল্প বাস্তবায়নকারীদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তারা খালের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করবে।”

এদিকে অভিযানের আগে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন খালের জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী স্থানীয়রা।

নূর মোহাম্মদ ও নাসিমা আখতার নামের দু’জন বাসিন্দা দাবি করেন, সোমবার রাতে তাদের জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে বলা হয়। তাই ঘরের সব জিনিস সরানো সম্ভব হয়নি।

ঘটনাস্থলে দেখা যায়, কল্পলোক আবাসিক এলাকার পশ্চিম পাশ দিয়ে রাজাখালী খাল বয়ে গেছে। খালের ভেতরেই কোনো কোনো স্থাপনা। একটি দুইতলা ভবনের সামনের অংশের অর্ধেকটাই খালের ভিতর।

অভিযানে অংশ নেওয়া সিডিএর বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল আলম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,  “খালের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসব স্থাপনা নির্মাণে সিডিএর কোনো ধরনের অনুমোদন নেওয়া হয়নি।”

‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এই উচ্ছেদ কার্যক্রমে সহায়তা করছে প্রকল্পটির পূর্ত কাজ পরিচালনকারী সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।

সেনাবাহিনীর সদস্যরা এবং পুলিশের একটি দলও অভিযানে সহায়তা করে। উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ও সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী।

‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৩৬টি খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) প্রথম পর্যায়ে ১৩টি প্রধান খালের জরিপ করেছে।

এতে ১৩টি খালের ১২৩ একর জায়গা অবৈধ দখলে আছে বলে চিহ্নিত করা হয়। খালগুলোতে ছোট-বড় ও পাকা, আধাপাকা, কাঁচা ঘরসহ অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা মোট ১৫৭৬টি।