এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক দালালকে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি মোস্তাফিজ ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোববার রাতে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির সময় তাদের আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের রোহিঙ্গা বলে পরিচয় দেয়।”
উদ্ধার তিনজন হলেন- আলী হোসেন (৬০), তার স্ত্রী সাহেরা খাতুন (৫৫) ও তাদের ১৭ বছর বয়েসী মেয়ে।
আর পাচারকারী চক্রের দালাল সন্দেহে গ্রেপ্তার মো. আব্দুল মান্নানের (৩০) বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট এলাকায়।
ওসি মোস্তাফিজ ভূঁইয়া বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার জন্য মান্নানের সাথে তারা চট্টগ্রামে এসেছিল। রোববার সকালের ট্রেনে তাদের সিলেটে যাওয়ার কথা ছিল।”
মান্নান পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, কক্সবাজার লিঙ্ক রোড থেকে ছলিম নামে একজন ওই তিন রোহিঙ্গাকে তার হাতে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাদের সিলেটের কানাইঘাটে নিয়ে গিয়ে জসীম নামে মেঘালয়ের এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল তার।
উদ্ধার হওয়া আলী হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বছর দশেক আগে তিনি ভারতের জম্মুতে চলে গিয়েছিলেন পরিবার নিয়ে। সেখান থেকে মাস চারেক আগে তারা আগরতলা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন।
কুতুপালংয়ে চাকমার কূল কেরামতলীতে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে মাস চারেক থাকার পর মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য আবারও ভারতে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করেন বলে জানান আলী হোসেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেও দুই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য দিতে পারিনি। তাই ভারত গিয়ে মেয়ের বিয়ে দেয়ার পাশাপাশি স্ত্রীর চিকিৎসা করানোর কথা ভাবছিলাম।”
ভারতে যাওয়ার জন্য ওই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ছলিম নামে একজনকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছেন জানিয়ে আলী হোসেন বলেন, “ছলিম আমাকে দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মান্নানের হাতে আমাদের তুলে দেয়।”
গ্রেপ্তার মান্নানের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে একটি মামলা করা হয়েছে জানিয়ে ওসি মোস্তাফিজ বলেন, “উদ্ধার তিন রোহিঙ্গাকে আদালতের অনুমতি নিয়ে ক্যাম্পে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।”