বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষোভকারীরা।
সকাল সাড়ে ১০টায় আন্দোলনকারীরা রাস্তা অবরোধ করার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ দুই নম্বর গেটমুখী সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে জিইসি মোড়, প্রবর্তক মোড় এবং ষোলশহর রেল স্টেশন এলাকার সড়ক দিয়ে কোনো যানবাহন দুই নম্বর গেটের দিকে যায়নি।
বিকল্প হিসেবে নগরবাসী ও গাড়ি চালকরা ফ্লাইওভার বেছে নেওয়ায় সেখানেও যানজট দেখা গেছে।
স্টেশন চত্বরেই তারা স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করতে থাকে। এরপর সেখানে আসে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) এর শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল।
পরে আন্দোলনকারীরা স্টেশন এলাকা ছেড়ে অদূরের দুই নম্বর গেট এলাকার মূল সড়কে জড়ো হয়।
স্টেশন ছেড়ে আন্দোলনকারীরা সড়কে আসতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। সোমবারের আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা অনেকেই সড়কে না আসার অনুরোধ করলেও সবাই মূল সড়কে গিয়ে অবরোধ করে।
এসময় সড়কে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, চুয়েট, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে ষোলশহর দুই নম্বর গেইটে বিক্ষোভকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে।
সড়ক অবরোধ চলাকালে অ্যাম্বুলেন্স, রোগী বহনকারী যানবাহন এবং সেনাবাহিনীর গাড়ি চলাচল করতে দেয় আন্দোলনকারীরা।
অবরোধ চলাকালে ষাটোর্ধ্ব আকবর হোসেনের (৬০) রিকশা আটকে তাকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
আকবর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তারা আন্দোলন করছে ভালো কথা। কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে কেন? মানুষের চলাফেরা বন্ধ করে এই গরমে দুর্ভোগে ফেলার কারণ কী?
যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন নারী ও স্কুলগামী শিশুরা।
জিইসি থেকে দুই নম্বর গেট হয়ে ষোলশহর পর্যন্ত অংশে নারী ও শিশুদের হেঁটে চলাচল করতে দেখা গেছে। তাদের অধিকাংশের হাতে ছিল ভারি স্কুল ব্যাগ।
ব্যবসায়ী সাইফুল আলম বলেন, “সকালে ব্যবসার কাজে পলিটেকনিক এলাকায় গিয়েছিলাম। ফেরার সময় দেখি গাড়ি বন্ধ। হেঁটে জিইসি মোড় গেলাম। সেখানে দেখি চারপাশে যানজট। তারপরও হেঁটে ও রিকশায় জামালখান যেতে লাগল আড়াই ঘণ্টা।”
সড়ক অবরোধের কারণে জিইসি মোড়, ষোলশহর, জাকির হোসেন সড়ক, প্রবর্তক মোড়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন বিভিন্ন সড়কে দিনভর যানজট লেগে ছিল।
নগরীর প্রাণকেন্দ্রের ওই অংশে যান চলাচল বন্ধ থাকায় কয়েকটি রুটের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুরো শহরে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে অবরোধকারীরা সড়ক ছেড়ে চলে যাওয়ার পর উভয় দিক থেকে যান চলাচল শুরু হলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। অফিস ফেরৎ যাত্রীদেরও চরম ভোগান্তি শুরু হয়।