জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে ‘কিছুটা সুফলের’ আশ্বাস

বন্দর নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটি শিগগির শুরু এবং আসন্ন বর্ষায় এর ‘কিছুটা সুফল’ মিলবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2018, 02:29 PM
Updated : 11 March 2018, 02:44 PM

রোববার চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ভবন মিলনায়তনে প্রকল্পের মনিটরিং কমিটির সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি এই কমিটির সভাপতি।

‘চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পুনঃ খনন, সংস্কার ও উন্নয়ন’র জন্য প্রায় পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সিডিএ। এতে সহায়তা করবে সেনাবাহিনী। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে চলতি বছর ১৬টি খাল খননের কাজ শুরু করবে সিডিএ।

প্রকল্পের আওতায় জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর মোট ৩৬টি খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন করা হবে।

পাশাপাশি খালের খালের পাড় ঘেঁষে ৮৫ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট, স্লুইস গেইট নির্মাণ এবং বন্যার পানি সংরক্ষণে জলাধার নির্মাণ করা হবে।

জলাবদ্ধতাকে ‘চট্টগ্রামবাসীর দুঃখ’ মন্তব্য করে মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ বলেন, বর্ষা মৌসুমের জলাবদ্ধতায় মানুষ নৌকা নিয়ে চলাচল করে এবং সাঁতার কাটে।

“এর থেকে পুরোপুরি পরিত্রাণ না পেলেও এবার কিছুটা উন্নতির জন্য কিছু খাল পরিষ্কার করা হবে যাতে পানি দ্রুত নেমে যায়। পাশাপাশি পাঁচটি স্লুইস গেইট করা হবে “

প্রাথমিকভাবে এ প্রকল্পের জন্য ৫০০ কোটি টাকা ছাড় পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী তিন মাস দিনরাত কাজ করলে আগামী বর্ষায় প্রাথমিক কাজে নগরবাসী কিছুটা সুফল পাবে।

সভায় সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম জানান, যেসব এলাকায় বেশি জলাবদ্ধতা হয় সেগুলোর জলাবদ্ধতা নিরসনে এবছর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাক্তাই খাল, বির্জা খাল, রাজাখালী খাল- ১,২,৩, মহেশ খাল, মীর্জা খাল, হিজড়া খাল, মরিয়ম খাল, খন্দকিয়া খাল, ডোমখালী খাল, বালুখালী খাল, নাসির খাল, চাক্তাই ডাইভারশান খাল, জামালখান খাল, ফিরিঙ্গী বাজার খালগুলো পুণঃখনন ও সংস্কার করা হবে।

এ ১৬টি খাল পুনঃখনন করা হলে এবছর নগরবাসী ‘কিছুটা সুফল পাবে’ বলে মনে করেন আবদুচ ছালামও।

তিনি প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) সহযোগিতা চাইলে সিসিসির প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন খাল খননে তাদের চলমান কাজের অগ্রগতির তথ্য জানান।

সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের পর্ষদ সদস্য জাফর আলম জানান, কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট থেকে বাকলিয়া পর্যন্ত এলাকায় ৪৩ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা হবে। ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন বছরের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে নৌবাহিনী।   

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার জানান, গত ৬ মার্চ ৫০০ কোটি টাকা ছাড় হয়েছে। এর পাঁচ দিনের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

প্রকল্প কাজ করার সময় সব সংস্থা ‘যেন সমন্বয় রেখে’ কাজ করে তার নির্দেশনা দেন সচিব। 

সভায় এবছর আর এস মূলে খাল শনাক্ত এবং পরবর্তীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।

সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল মজিদ, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. ফজলুল্লাহ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, নগর পুলিশ, কেজিডিসিএলের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।