“সন্ত্রাসী যেই হোক সে যদি সিটি করপোরেশনের কোন পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাও হয়ে থাকে তাকে প্রশাসন গ্রেপ্তার করবে এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।”
Published : 02 Dec 2024, 07:32 PM
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ এবং আইনজীবী হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের নিরীহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে গ্রেপ্তার না হয় সে বিষয়ে প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি আশা করেন মেয়র শাহাদাত হোসেন।
সোমবার নগরীর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্ন বিভাগের কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে দেওয়া বক্তব্যে মেয়র এসব বিষয়ে কথা বলেন।
গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময়ের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর পর আদালত চত্বরে প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশ ও কিছু লোকের।
সংঘর্ষের মধ্যে আদালতের প্রবেশপথের অদূরে রঙ্গম কনভেশন হলের পাশের গালিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার চারদিন পর আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১৫/১৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
আলিফের ভাই খানে আলম বাদি হয়ে ভাঙচুর, বিস্ফোরণ ও জনসাধারণের উপর হামলার অভিযোগে যে মামলা করেছেন, তাতে ১১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৫০০ জনকে।
এছাড়া সেদিনের ঘটনায় তিন স্থানে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে আরো তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। ওই তিন মামলায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো মোট ১৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৯জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আইনজীবী আলিফ যেখানে খুন হন তার অদূরেই বান্ডেল সেবক কলোনি। ওই কলোনিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বংশ পরম্পরায় পরিবারসহ বসবাস করেন।
আলিফ হত্যার ঘটনায় তার বাবার করা হত্যা মামলার এজাহারে যে ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন ছাড়া সবাই বান্ডেল সেবক কলোনির বাসিন্দা।
সোমবার মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, “কিছুদিন আগে আমাদের একজন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আমি পরিষ্কার বলতে চাই অতি দ্রুত খুনি-সন্ত্রাসীদেরকে চিহ্নিত করতে হবে।
“সন্ত্রাসী যেই হোক সে যদি সিটি করপোরেশনের কোন পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাও হয়ে থাকে তাকে প্রশাসন গ্রেপ্তার করবে এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।”
তিনি বলেন, “তবে আমি সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি, যাতে সিটি করপোরেশনের কোন নিরীহ কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেপ্তার না হয় সেটা নজর রাখতে হবে। যাতে আমাদের পরিচ্ছন্ন বিভাগের যে সমস্ত কর্মচারী দিনরাত পরিশ্রম করে চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন রাখছে তারা যাতে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে।
“আর চিহ্নিত যেসব সন্ত্রাসী এ কাজ করেছে তারা আইনের আওতায় আসবে। জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত শাস্তি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমি।”
এ বিষয়ে সিসিসির পরিচ্ছন্ন বিভাগের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, “যারা আটক হয়েছে তাদের মধ্যে করপোরেশনের অস্থায়ী ৪-৫ জন কর্মী আছে বলে শুনেছি। তারা সবাই ডোর টু ডোর প্রজেক্টে (বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ) কাজ করে।
“তবে কয়জন আটক হয়েছে সে বিষয়ে কেউ আমাদের কিছু বলেনি। এটা তারা প্রকাশ করতে চায় না। সুপারভাইজারদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে পরে আপনাদের তথ্য দিতে পারব।”