চাপের মধ্যে অভিজ্ঞতার মূল্য কতটা, মুশফিকুর রহিম আরও একবার যেন বুঝিয়ে দিলেন তা। মূলত অভিজ্ঞতার ভেলায় চেপেই ফাইনালে পৌঁছে গেল ফরচুন বরিশাল। অথচ বেশি বয়সী একগাদা ক্রিকেটার নিয়ে দল গড়ার কারণে তাদেরকে সমালোচনার শিকারও হতে হয়েছিল। ফাইনালে ওঠার পর সেই সমালোচকদেরই পাল্টা জবাব দিলেন মুশফিক।
বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুশফিকের ৩৮ বলে ৪৭ রানের অপরাজিত ইনিংস বরিশালকে সহায়তা করে রংপুরের ১৪৯ রান টপকে যেতে। টুর্নামেন্টের শীর্ষ পাঁচ রান স্কোরারের একজন এখন তিনি। ১৪ ম্যাচে রান ৩৬৩। ১৪ ম্যাচে ৪৫৩ রান করে তালিকার সবার ওপরে বরিশালেরই তামিম ইকবাল।
এই দলের আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ৩৮ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহ নিচের দিকে ব্যাট করেও ২৩০ রান করে ফেলেছেন ১৩৬.০৮ স্ট্রাইক রেটে।
ম্যাচ সেরা হয়ে যখন সংবাদ সম্মেলনে এলেন মুশফিক, তার কাছে জানতে চাওয়া হলো অভিজ্ঞতার মূল্য নিয়ে। সমালোচকদের পাল্টা খোঁচা দেওয়ার জন্য এমন মোক্ষম সুযোগই যেন খুঁজছিলেন তিনি, “কেন ভাই, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তো বললেন যে, বরিশাল সবচেয়ে বুড়াদের দল। অভিজ্ঞদের দিয়ে টি-টোয়েন্টি খেলা হয় না। তো আজকে আমরা এখানে!”
মুশফিকের মতে, শুধু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেই নয়, সব সংস্করণেই অভিজ্ঞতা ব্যাপারটি মহামূল্য। মসৃণ পথচলায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে নিজেদের উত্তরাধিকার বয়ে চলা দেখতে চান তিনি।
“এই ধারণাটা খুবই ভুল। অভিজ্ঞতার দাম সব ফরম্যাটে আছে। এটাই হচ্ছে দুনিয়ার নিয়ম। নতুনরা আসবে, পুরোনোরা চলে যাবে এবং তাদের সংমিশ্রণে এই জিনিসটা তৈরি হয়ে যাবে। আমরা যারা আছি, এই লেগাসিটা যেন রেখে যেতে পারি এবং তারা (নতুনরা) যেন এখান থেকে বড় হয়।”
“কয়েকদিন পরে (তাওহিদ) হৃদয়, (তানজিদ) তামিমরাও সিনিয়র হবে। তারাও আস্তে আস্তে চলে যাবে। কিন্তু তারাও সেই লেগাসিটা রেখে যায়। এটা একটা মসৃণ সেট, যেটা আমার কাছে সবসময়ই মনে হয় একটা বাস্তবতা। এটা একটা নিয়তি, সবসময় এভাবেই হবে।”
সিনিয়র বা জুনিয়র মানদণ্ডের ব্যবহার দেখতে চান না মুশফিক। তার কাছে সবার পরিচয়, সবাই এই দেশের ক্রিকেটার।
“আমার মনে হয়, এগুলো যখন বারবার করে বলা হয় (বেশি বয়সীরা টি-টোয়য়েন্টিতে অচল) এটা খুবই ভুল। কারণ সিনিয়র বলুন বা জুনিয়র, আমরা সবাই বাংলাদেশি। এটা সবার আগে মনে রাখতে হবে। আমরা সবাই বাংলাদেশের জন্য ক্রিকেট খেলি, অন্য কোনো দেশের জন্য খেলি না।”