উন্নতির অনেক জায়গা দেখছেন অধিনায়ক

ওয়ানডেতে সাড়ে তিনশ রানের স্কোর গড়তে চায় দল, বললেন তামিম ইকবাল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 August 2022, 04:58 AM
Updated : 11 August 2022, 04:58 AM

হারার পর দলের ঘাটতি-দুর্বলতার নানা দিক নিয়ে কথা হয় তুমুল। সেই আলোচনাগুলো কখনও কখনও একঘেয়ে লাগে তামিম ইকবালের কাছে। তবে জিম্বাবুয়ের কাছে ৯ বছর পর ওয়ানডে সিরিজ হারের পর বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়কের উপলব্ধি, সত্যিই অনেক কাজ করার আছে এই দল নিয়ে। দলের একটি লক্ষ্যের কথা সরাসরি জানিয়েও দিলেন তিনি, ৫০ ওভারে তারা গড়তে চান সাড়ে তিনশ রানের স্কোর।

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্যময় পথচলার মধ্যেই বড় হোঁচট হয়ে এসেছে এবারের জিম্বাবুয়ে সিরিজ। গত ৯ বছরে তাদের সঙ্গে টানা ১৯ ওয়ানডে জয়ের পর এবার শুধু একটি ম্যাচ নয়, পরপর দুই ম্যাচ হেরে বাংলাদেশ হেরে বসে সিরিজও।

বুধবার সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পেরেছে বাংলাদেশ। তবে সিরিজ হারের ক্ষতে আসলে তা প্রলেপ দিতেও পারেনি। আঘাত যথেষ্টই দগদগে ও গভীর।

সিরিজ শেষের সংবাদ সম্মেলনে তামিম শুরুতে প্রাপ্য কৃতিত্ব দিলেন প্রতিপক্ষকে।

‘যখনই দল হারে, বিশেষ করে আমরা যখন হারি, তখনই উন্নতির কথা তুলে নিয়ে আসি। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে সিরিজ জেতা উচিত ছিল আমাদের। এখানে কোনোভাবেই কোনো অজুহাত দিতে পারব না। আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি, জিম্বাবুয়ে আমাদের চেয়ে ভালো ছিল। এ নিয়ে কোনো সংশয় নেই। তাদেরকে কৃতিত্ব দিতে হবে।’

আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের সাতে থাকা বাংলাদেশ যেভাবে পনেরোয় থাকা জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে, তাতে সামনে তাকিয়েও শঙ্কার জায়গা দেখছেন তামিম। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ এখনও বাকি আছে। অধিনায়ক তাই বলছেন, এখান থেকে অনেক উন্নতি করতে হবে।

‘উন্নতির কথা বলতে গেলেই একই একঘেয়ে কথা চলে আসে। হারলেই বলা হয় ‘এটা করা উচিত, ওটা করা উচিত।’ এখন যেটি বলব, সেটি আপনাদের পছন্দ হতে পারে, না-ও পারে। তবে আপনারা চিন্তা করে দেখবেন। এই সিরিজটা আমরা যেভাবে হেরেছি, যদি ভারত, অস্ট্রেলিয়া বা শীর্ষ কোনো দলের সঙ্গে হারতাম, তাহলে এমন প্রশ্ন উঠত না। হয়তো দেখা গেল, (বিরাট) কোহলি বা (স্টিভ) স্মিথ এমন ইনিংস খেললে আমরা মেনে নিতাম।’

“এখানে প্রথম দুই ম্যাচে রাজার সঙ্গে একটিতে চাকাভা ও আরেকটিতে কাইয়া যেভাবে ব্যাটিং করেছে, এটাই প্রমাণ করে, ওয়ানডেতে অনেক উন্নতি করার দরকার আমাদের। ওদের খাটো করছি না। ওরা অবিশ্বাস্য ভালো খেলেছে। কিন্তু আমাদের দলের তরফ থেকে ভাবলে, অনেক কিছু করার বাকি। ওরা করলে অন্যরাও করতে পারবে আমাদের সঙ্গে। আয়ারল্যান্ডে সিরিজ আছে আমাদের, ওরাও পারে এটা। আমাদের সবার জন্যই এটি শিক্ষা।’

উন্নতির একটি দিকের কথা সুনির্দিষ্ট করেই বললেন তামিম। জিম্বাবুয়েতে এই সিরিজে নিখাদ ব্যাটিং উইকেটেও খুব বড় স্কোর গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ৫০ ওভারে স্রেফ ২ উইকেট হারালেও রান আসে কেবল ৩০৩। একসময় এটা জয়ের মতো স্কোর বা ভালো রান ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে ওয়ানডের বাস্তবতা বদলে গেছে অনেক। ব্যাটিং উইকেটে ৩২০-৩৩০ রানও এখন খুব নিরাপদ নয়।

সিরিজের পরের দুই ম্যাচে তিনশও করতে পারেনি বাংলাদেশ। তামিম জানালেন, সামনে তাকিয়ে তারা পাখির চোখ করছেন ৩৫০ রানকে।

‘অবশ্যই (এমন উইকেটে ৩০০ রান যথেষ্ট নয়)… আমাদের দলীয় লক্ষ্যগুলোর একটি এটি যে, সামনের পথচলায় আমরা ৩৫০ করতে চাই। এটি আমাদের ভাবনায় আছে যে সাড়ে তিনশ করতে চাই, আগে যা কখনও করতে পারিনি।”

“এটা বলছি না পরের ম্যাচেই তা করে ফেলব। তবে এই লক্ষ্য আমরা ঠিক করেছি ওই জায়গায় যেতে হবে।”

আগামী বছরের নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর ভারতে। সেখানে সব উইকেটই নিখাদ ব্যাটিং উইকেট হয়তো হবে না। তবে যেখানে ভালো ব্যাটিং উইকেট পাওয়া যাবে, তা কাজে লাগানোর প্রস্তুতি দলের থাকতে হবে বলে মনে করেন অধিনায়ক।

‘যদি ভারতে হতে যাওয়া বিশ্বকাপের কথা ভাবি, ওখানে ‘পার স্কোর’ হবে ৩০০ রান। গোটা খেলা ক্রমে বদলাচ্ছে। মিরপুর বা ভারতের কিছু মাঠে হয়তো ২৬০-২৭০ করেও জয় সম্ভব। তবে বেশির ভাগ ভেন্যুতেই ২৯০, ৩০০, ৩১০, এমন করতে হবে।”

“এটা নিয়ে আমরা সচেতন আছি। আমি নিশ্চিত, সামনের দিনগুলোতে আমাদেরও সেখানে পৌঁছাতে দেখবেন আপনারা, যেখানে অন্যরা যাচ্ছে।’