বৃষ্টির মধ্যে খেলা চালানোয় ক্ষুব্ধ জিম্বাবুয়ে কোচ

ডেভ হাটনের মতে, খেলা চালিয়ে যাওয়ার মতো কন্ডিশন মোটেও ছিল না।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2022, 06:26 AM
Updated : 25 Oct 2022, 06:26 AM

ম্যাচ শুরুর আগে বৃষ্টির হানা, কয়েকবার বাগড়া দিয়েছে খেলা চলাকালেও। ভেজা মাঠের কঠিন পরিস্থিতিতে খেলতে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়েকে। তবে দ্বিতীয়ভাগে বৃষ্টি বাড়ার পরও আম্পায়ারদের খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে বেজায় খেপেছেন জিম্বাবুয়ে কোচ ডেভ হাটন। তার মতে, তখন আর খেলার মতো কন্ডিশন ছিল না।

হোবার্টে সোমবার জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি মাঠে গড়ায় আড়াই ঘণ্টা দেরিতে। ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ৯ ওভারে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ে তোলে ৭৯ রান।

দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাড়ার মাঝে বৃষ্টি নামলে নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৭ ওভারে ৬৪। ৩ ওভারেই তারা তুলে ফেলে বিনা উইকেটে ৫১! জয় যখন আর ১৩ রান দূরে, তখন আবার বৃষ্টি নামলে আর খেলা হয়নি। পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় ম্যাচ।

নিয়ম অনুযায়ী, টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ফল আনতে হলে দুই দলকেই অন্তত পাঁচ ওভার করে খেলতে হয়।

দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ের সময় বৃষ্টি বাড়ার পরও খেলা চলে। বেশ কয়েকবারই জিম্বাবুয়ের ফিল্ডার, বোলাররা ভেজা মাঠ নিয়ে অভিযোগ করেন আম্পায়ারের কাছে। দলটির পেসার রিচার্ড এনগারাভা পিচ্ছিল মাঠে পড়ে গিয়ে পায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পরও খেলা বন্ধ করেননি আম্পায়াররা।

আম্পায়ারদের এমন সিদ্ধান্তে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাটন। জানান, এনগারাভা বোলিং করার পর্যায়ে আপাতত নেই। এই পেসারের চোটে হতাশা ফুটে ওঠে জিম্বাবুয়ে কোচের কণ্ঠে। সঙ্গে ম্যাচের ওই সময়ের পরিস্থিতি তুলে ধরেন তিনি।

“আমার মনে হয়, বৃষ্টি এত প্রবল ছিল যে তখন খেলা ছিল অসম্ভব। সন্ধ্যা কিংবা রাতের বেশিরভাগ সময়ই ছিল কুয়াশাচ্ছন্ন। কিন্তু বৃষ্টি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়, আমরা ডাগআউটের ছাদে শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। আমার মনে হয়, তখন আর গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি ছিল না; তখন সময় ছিল মাঠ ছাড়ার।”

“আমরা যখন খেলা শুরু করি এবং যখন দক্ষিণ আফ্রিকা ফিল্ডিং করে, মাঠ ভেজা ছিল। দুই দলের জন্যই কঠিন পরিস্থিতি ছিল, কিন্তু আমরা বোলিংয়ে আসতে আসতে মাঠ আরও বেশি ভিজে যায়। স্পিনের বিপক্ষে যখন কিপার লেগ সাইডে নড়তে গেলে পিছলা খায়, বুঝতে হবে মাঠ খুবই ভেজা। আমার মনে হয় না, খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কন্ডিশন উপযুক্ত ছিল।”

ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো জানায়, শুধু হাটন নয়, পুরো জিম্বাবুয়ে দলই ‘ভয়ানক’ ওই কন্ডিশনে খেলানোয় অসন্তুষ্ট। তাদের অনেকের মতে, প্রভাবশালী কোনো দলের ওই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।

হাটন অবশ্য সেটা নিয়ে কিছু বলেননি। কিন্তু তিনি দ্বিমত প্রকাশ করেন আম্পায়ারদের তীব্র বৃষ্টির মধ্যেও খেলা চালানোর সিদ্ধান্তের সঙ্গে।

“দর্শকের জন্য এবং টিভির জন্য এই ম্যাচগুলো হওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করার বিষয়টি আমি বুঝতে পারছি। ফলাফল পেতে সামান্য প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও খেলার প্রয়োজন বুঝতে পারি। কিন্তু এই ম্যাচে আমরা সেই মাত্রা ছাড়িয়ে গেছি। মাঠে আম্পায়াররা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, আর তারা ভেবেছেন খেলা চালিয়ে যাওয়া যায়। আমি তাদের সঙ্গে একমত নই। কিন্তু মাঠের বাইরে থেকে আমার তেমন কিছু করার নেই।”

এনগারাভার চোটের পর স্পিনার আক্রমণে আনেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। তৃতীয় ওভারটি করেন সিকান্দার রাজা। ওই ওভারের পর আর খেলা সম্ভব হয়নি।

জয়ের দুয়ারে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের অবশ্য খেলা চালিয়ে যেতে কোনো আপত্তি করতে দেখা যায়নি। দলটির কোচ মার্ক বাউচার বললেন, হারের ভাবনায় হয়তো খেলতে চাওয়ার অনিচ্ছা দেখিয়েছিল জিম্বাবুয়ে।

“জিম্বাবুয়ে যদি আমাদের অবস্থায় থাকত, তারাও খেলা চালিয়ে যেতে চাইত। আমরাও অনেকটা ভেজা বলে বোলিং করেছি। খুবই ভালো অবস্থায় ছিলাম আমরা। তারা ম্যাচ ছেড়ে চলে যেতে চাইছিল এই ভেবে যে, তাদের সঙ্গে অন্যায্য আচরণ করা হচ্ছে। আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নেই, এটা অফিসিয়ালসদের কাজ, আর তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের সিদ্ধান্ত মেনে আমাদের চলতে হবে।”

ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় জয়ের খুব কাছে থেকেও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। দুই দলই পেয়েছে একটি করে পয়েন্ট।