বাংলাদেশের কারও এমন সেঞ্চুরি আর দেখেননি লিটন

সিনিয়র একজন ব্যাটসম্যান এরকম বিধ্বংসী সেঞ্চুরি করায় মুশফিকের ইনিংসটি বেশি ভালো লেগেছে লিটনের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকসিলেট থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2023, 04:54 PM
Updated : 20 March 2023, 04:54 PM

মুশফিকুর রহিমের ঝড়ো সেঞ্চুরির স্বাক্ষী হয়ে থাকবে রেকর্ড বই। ম্যাচটি যারা দেখেছেন, তাদের চোখে লেগে থাকবে তার খেলার ধরন। লিটন কুমার দাস যেমন। বাংলাদেশ দলে প্রায় ৮ বছরের পথচলায় শেষ দিকে নেমে এমন বিধ্বংসী সেঞ্চুরি আর চোখে পড়েনি তার। 

লিটন নিজেও এই ম্যাচে দারুণ খেলেছেন। শুরুতে সহায়ক কন্ডিশনে আয়ারল্যান্ডের পেসারদের সুইং বোলিংয়ে কিছুটা সাবধানী শুরু করেন তিনি। এক পর্যায়ে রান ছিল তার ২২ বলে ৬। পরে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে পুষিয়ে দেন রান-বলের ঘাটতি। শেষ পর্যন্ত আলগা শটে আউট হন ৭১ বলে ৭০ রান করে। 

তার সামনে সেঞ্চুরির হাতছানি থাকলেও পারেননি। মুশফিক যখন উইকেটে যান, সেখান থেকে সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের বাস্তবতায় ভীষণ কঠিন। ৩৩ ওভারের পর ক্রিজে গিয়ে সেঞ্চুরি করতে পারেননি এদেশের কেউ। মুশফিক এবার সেটিই করে দেখালেন। ৩৩ বলে যখন ফিফটিতে পা রাখলেন, ওভার বাকি আছে তখন আর ৭টি। পরের ফিফটিতে পৌঁছে গেলেন তিনি স্রেফ ২৭ বলে। ৬০ বলে ১০০ ছুঁতে গড়লেন তিনি বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। 

পরে ম্যাচের বাকিটা বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে লিটন বললেন, এমন ইনিংস দেখা তার জন্য নতুন কিছু। 

“সত্যি কথা বলতে আমি যতদিন খেলছি, বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড়ই এভাবে শেষের দিকে গিয়ে ১০০ করেনি। যখন দল থেকে কেউ এরকম একটা সেঞ্চুরি করে, দেখলে অনেক ভালো লাগে। সিনিয়ররা কেউ করলে তো আরও ভালো লাগে।”

আগামী বিশ্বকাপে তাকিয়ে এই সিরিজ থেকেই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশ দল। সেই পালায় এবার নতুন ভূমিকা পেয়েছেন মুশফিক। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে তিনি ৬ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন ৬ বছরের বেশি সময় আর ৭৫ ইনিংস পর। সেদিন ২৬ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। সেই ম্যাচের অসমাপ্ত কাজ পূরণ করে দিলেন দ্বিতীয় ম্যাচে। 

প্রথম ম্যাচে ৩৩৮ রানের রেকর্ড গড়া বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচে সেই স্কোর ছাড়িয়ে গড়ে ৩৪৯ রানের নতুন রেকর্ড। লিটন বললেন, মুশফিকের ব্যাটিংই বড় পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের স্কোরে। 

“মুশফিক ভাইয়ের শুধু আজকের ইনিংস না, শেষ ম্যাচের ইনিংসটা যদি দেখেন, আমার মনে হয় অসাধারণ ছিল। যদিও রান বেশি নয়, ৪০ বা এরকম ছিল। এটাই কিন্তু বড় ভূমিকা রাখে তিনশর বেশি রান করতে। আজকের ইনিংসটা তো… ম্যাচের চিত্র বদলে দিয়েছে মুশফিক ভাইয়ের ইনিংসটা।” 

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের বরাবরের ঘাটতি যেখানে, এই দুই ম্যাচে সেখানেও উন্নতির ছাপ পড়েছে। প্রথম ম্যাচে শেষ ২০ ওভারে ১৮৩ রান তুলেছে দল, শেষ ১০ ওভারে ৯৬। দ্বিতীয় ম্যাচে শেষ ১৫ ওভারে এসেছে ১৫৩ রান, শেষ ১০ ওভারে ১০৮।

শেষের এই ঝড়ো ব্যাটিংকে দলের জন্য শুভ ইঙ্গিত মনে করছেন লিটন। 

“আমার কাছে মনে হয়, সবসময়ের জন্যই ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশেষ করে, বিশেষ করে বড় দলগুলোর যখন উইকেট হাতে থাকে, উইকেট যদি ভালো হয়, শেষ ১০ ওভারে নিয়মিতই ১০০ বা ৯০ থেকে ১০০ করে ফেলে। এই জিনিসটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল। শুধুমাত্র ওয়ানডে ফরম্যাটে নয়। সবশেষ কয়েকদিন ধরে এই জিনিসটা নিয়ে কথা হচ্ছিল, আমরা টি-টোয়েন্টিতেও কীভাবে শেষ ১০ ওভারে ১০০ রান করতে পারি। আমার মনে হয় এটা ভালো একটা লক্ষণ।”