শ্রেয়াসের সেঞ্চুরি, কিষানের ৭ ছক্কার বিধ্বংসী ইনিংসে সমতায় ভারত

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অনায়াসে হারাল ভারত।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2022, 03:47 PM
Updated : 9 Oct 2022, 03:47 PM

দক্ষিণ আফ্রিকা ছুটছিল তিনশ রানের পথে। শেষ ১০ ওভারে দারুণ বোলিংয়ে তা হতে দিল না ভারতের বোলাররা। পরে ব্যাটিংয়ে আলো ছড়ালেন শ্রেয়াস আইয়ার ও ইশান কিষান। দুজনই খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। বড় জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল ভারত।

রাঁচিতে রোববার তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের জয় ৭ উইকেটে। ২৭৯ রানের লক্ষ্য স্বাগতিকরা পেরিয়ে যায় ২৫ বল বাকি থাকতে।

দলের জয়ের দিনে ব্যক্তিগত আক্ষেপ থাকতে পারে কিষানের। ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি তিনি। ৮৪ বলে ৭ ছক্কা ও ৪ চারে খেলেন ৯৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।

ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে ১১১ বলে ১৫ চারে অপরাজিত ১১৩ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা শ্রেয়াস।

দুজনে তৃতীয় উইকেটে ১৬১ রানের জুটি গড়েন ১৫৫ বলে।

দক্ষিণ আফ্রিকার পৌনে তিনশ রানের সংগ্রহে বড় অবদান রিজা হেনড্রিকস ও এইডেন মারক্রামের। সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পেয়ে ৭৬ বলে ৭৪ রান করেন হেনড্রিকস। মারক্রামের ব্যাট থেকে ৭৯ রান আসে ৮৯ বলে।

সফরকারীদের রান দুইশ ছুঁয়েছিল ৩৭তম ওভারে। ৫ উইকেট হাতে রেখে শেষ ১০ ওভারে তারা তুলতে পারে মাত্র ৫৭ রান।

অসুস্থতার জন্য নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ও তাবরাইজ শামসিকে এই ম্যাচে পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। দলকে নেতৃত্ব দেন কেশভ মহারাজ।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রোটিয়াদের শুরুটা ছিল মন্থর। দ্বিতীয় ওভারেই তারা হারায় কুইন্টন ডি কককে। আরেক ওপেনার ইয়ানেমান মালানও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি (৩১ বলে ২৫)। তাকে ফিরিয়ে অভিষেকে প্রথম উইকেটের স্বাদ পান বাঁহাতি স্পিনার শাহবাজ আহমেদ।

১০ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ছিল ২ উইকেটে ৪০।

দলকে এগিয়ে নেন এরপর হেনড্রিকস ও মারক্রাম। জমে ওঠে তাদের জুটি। হেনড্রিকস ফিফটি স্পর্শ করেন ৫৮ বলে। পঞ্চাশ ছুঁতে মারক্রামের লাগে ৬৪ বল। ১০৭ বলে পূর্ণ হয়ে যায় তাদের জুটির শতরান।

হেনড্রিকসকে ফিরিয়ে ১২৯ বলে ১২৯ রানের জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সিরাজ। হেনড্রিকসের ৭৪ রানের ইনিংসে ৯টি চারের পাশে ছক্কা একটি।

পাঁচ নম্বরে নেমে ২টি করে চার-ছক্কায় ২৬ বলে ৩০ রান করে বিদায় নেন হাইনরিখ ক্লাসেন। পরের ওভারে শেষ হয় মারক্রামের ৭ চার ও এক ছক্কায় ৭৯ রানের ইনিংস। রানের গতিও কমে যায় তাতে।

এরপর মাঝে ৪০ বলে কোনো বাউন্ডারিই পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ ১০ ওভারে কেবল চারটি ৪ মারতে পারে তারা। সবগুলোই আসে ডেভিড মিলারের ব্যাট থেকে। ৩৪ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াডের কেউ নেই এই সিরিজে। ১০ ওভারে ৩৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলার পেসার সিরাজ।

রান তাড়ায় ভারতের শুরুটা ভালো হয়নি। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান ২০ বলে ১৩ রান করে ফিরে যান ষষ্ঠ ওভারে। শুবমান গিল ২৬ বলে ২৮ রান করে ফিরতি ক্যাচ দেন বোলার কাগিসো রাবাদাকে।

৪৮ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পরই কিষান ও শ্রেয়াসের জুটি। কিষান শুরুতে সময় নেন কিছুটা। এরপর বাড়ান গতি। ৬০ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। শ্রেয়ার তার সবশেষ ছয় ওয়ানডে ইনিংসে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন পঞ্চমবার, ৪৮ বলে।

আনরিক নরকিয়ার টানা তিন বলে একটি চার ও দুটি ছক্কা মেরে সেঞ্চুরির পথে ছুটছিলেন কিষান। এই পেসারকে আরেকটি ছক্কায় তিনি পৌঁছে যান নম্বইয়ের ঘরে। কিন্তু পরের ওভারে বাঁহাতি স্পিনার বিয়ন ফোরটানের বলে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন তিনি।

এরপর সাঞ্জু স্যামসনের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৭৩ রানের জুটিতে বাকিটা অনায়াসে সারেন শ্রেয়াস। তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন তিনি ১০৩ বলে। স্যামসন অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ৩০ রান করে।   

আগামী মঙ্গলবার দিল্লিতে তৃতীয় ম্যাচে ফয়সালা হবে সিরিজের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ২৭৮/৭ (ডি কক ৫, মালান ২৫, হেনড্রিকস ৭৪, মারক্রাম ৭৯, ক্লাসেন ৩০, মিলার ৩৫*, পার্নেল ১৬, মহারাজ ৫, ফোরটান ০*; সিরাজ ১০-১-৩৮-৩, ওয়াশিংটন ৯-০-৬০-১, শাহবাজ ১০-০-৫৪-১, আভেশ ৭-০-৩৫-০, কুলদিপ ৯-০-৪৯-১, শার্দুল ৫-০-৩৬-১)

ভারত: ৪৫.৫ ওভারে ২৮২/৩ (ধাওয়ান ১৩, গিল ২৮, কিষান ৯৩, শ্রেয়াস ১১৩*, স্যামসন ৩০*; ফোরটান ৯-১-৫২-১, পার্নেল ৮-০-৪৪-১, রাবাদা ১০-১-৫৯-১, নরকিয়া ৮.৫-০-৬০-০, মহারাজ ৭-০-৪৫-০, মারক্রাম ৩-০-২২-০)

ফল: ভারত ৭ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে প্রথম দুটির পর ১-১ সমতা

ম্যান অব দা ম্যাচ: শ্রেয়াস আইয়ার