গত বছর কাউন্টি ক্রিকেট না খেলে আইপিএলে ব্যস্ত থাকায় সমালোচনার মুখে পড়েন জনি বেয়ারস্টো। এবার অ্যাশেজের আগে প্রায় একই অবস্থায় জো রুট। বেয়ারস্টো জানিয়েছিলেন, আইপিএল থেকেই লাল বলের ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুত হয়েছেন তিনি। এবার সেই কথা শোনা গেল, রুটের কণ্ঠে।
চলতি আইপিএলের নিলামে ভিত্তিমূল্য ১ কোটি রুপি দিয়ে রুটকে দলে নেয় রাজস্থান রয়্যালস। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রথমবার এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার জন্য মার্চের শেষ দিকে দলে যোগ দেন ইংল্যান্ডের সাবেক এই অধিনায়ক।
জস বাটলার, শিমরন হেটমায়ার, ট্রেন্ট বোল্ট, অ্যাডাম জাম্পা, জেসন হোল্ডারদের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রথম দশ ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পাননি রুট। এরপর একাদশে জায়গা পেলেও প্রথম দুই ম্যাচে আসেনি ব্যাটিংয়ের সুযোগ।
দলের ত্রয়োদশ ও নিজের তৃতীয় ম্যাচে প্রথমবার ব্যাটিংয়ে নেমে রুট করেন ১৫ বলে ১০ রান। ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে সেদিন রাজস্থান গুটিয়ে যায় স্রেফ ৫৯ রানে।
রুট যখন আইপিএলে ব্যস্ত, তখন ইংল্যান্ডে চলছে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা। তাই তার দেশে প্রশ্ন উঠছে, আসন্ন অ্যাশেজ সিরিজকে সামনে রেখে কাউন্টির বদলে রুটের আইপিএল খেলা আদৌ ঠিক হচ্ছে কি না? যেখানে গত ফেব্রুয়ারির পর কোনো লাল বলের ক্রিকেট খেলেননি তিনি।
এ নিয়ে দেশটির সফলতম টেস্ট ব্যাটসম্যানের অবশ্য কোনো মাথাব্যথা নেই। ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুট জানিয়েছেন, কাউন্টির বদলে এখন তার আইপিএলে খেলার সিদ্ধান্তই ঠিক।
“আমি ইয়র্কশারের হয়ে খেলতে ভালোবাসি, কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ পছন্দ করি। এটিই যুক্তরাজ্যে আমাদের বড় মঞ্চ এবং ক্রিকেটারদের উন্নতির জন্য অনেক বড় প্রভাবক। তবে আমি নিজের খেলা ও উন্নতির ব্যাপারে যেখানে দাঁড়িয়ে, ৩২ বছরে এসে প্রথমবার এই অভিজ্ঞতা (আইপিএল খেলার) পাওয়া...।”
“আমার মতে, চারটি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচের চেয়ে দীর্ঘ মেয়াদে এটিই আমাকে বেশি সাহায্য করবে। আর (কাউন্টির) সূচির দিকেই দেখুন। একটি ম্যাচ এরই মধ্যে বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। বৃষ্টির প্রভাবে আরেকটি ম্যাচ ড্র হয়েছে।”
গত বছর আইপিএলের পর লাল বলের ক্রিকেটে সত্যিই দারুণ ফর্মে ছিলেন বেয়ারস্টো। ছয় ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরি ও ১ ফিফটিতে ৭৫.৬৬ গড়ে করেছিলেন ৬৮১ রান। পরে আইপিএল খেলে উপকার পাওয়ার কথা জানান ইংল্যান্ডের কিপার-ব্যাটসম্যান।
সরাসরি বেয়ারস্টোর উদাহরণ টানেননি রুট। তবে আইপিএল থেকেই আসন্ন অ্যাশেজ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়ার আশা ৩২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের।
“এটি (আইপিএল) কি সত্যিই আমাকে অ্যাশেজ সিরিজের জন্য প্রস্তুত করছে? অথবা ছয় মাসের মধ্যে বিশ্বকাপ ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ, তার আগেই এই অভিজ্ঞতা, এই কন্ডিশনে খেলা, সব ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করা, যতটা সম্ভব শেখার চেষ্টা করা, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট তবে বিশদ পরিসরে খেলাটি সম্পর্কেই- এটি কি আমাকে আরও ভালো ক্রিকেটার করে তুলবে? আমার তা-ই মনে হয়।”
“আমার মনে হয়, আমি টেস্ট ক্রিকেটে নামার জন্য প্রস্তুত হয়েই (দেশে) ফিরব এবং দারুণ একটি অ্যাশেজ সিরিজের জন্য তৈরি থাকব। বিষয়টা এমন না যে, আমি স্রেফ করে ফেলেছি। আমার মনে হয়েছে, এর (আইপিএল) একটি ইতিবাচক দিক রয়েছে এবং এই অভিজ্ঞতা যদি ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে অনেক জ্ঞান আহরণ করে ভালো অবস্থানে পৌঁছতে পারব।”
পাশাপাশি যারা সমালোচনার চেষ্টা করছে, তাদেরও যেন জবাব দিলেন ইংল্যান্ডের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন রুট।
“আপনি চাইলে যে কোনো ঘটনায় ফিরে বলতে পারেন যে, 'এমন না করে অমন করলে হয়তো আরও ভালো করতে পারতে।' এতে কোনো কিছু যায় আসে না। বিষয়টা হলো, আপনি কীভাবে বড় ম্যাচের আগে উঠে দাঁড়ান এবং পারফর্ম করেন।”
“এখন খেলার সূচি দেখুন। অনেক বেশি ক্রিকেট হয়, সবসময়। এটা হয়তো এমন হতে পারত যে (আইপিএলের) এই সময়টা ছুটি হিসেবে ব্যবহার হতো। আমিও খুব বেশি ক্রিকেট খেলতাম না। (কাউন্টির) বেশিরভাগ খেলাই তো (বৃষ্টির কারণে) ওপরে বসে থেকে শেষ হয়েছে। (আইপিএল খেলার) সিদ্ধান্ত আসলে কঠিন কিছু ছিল না।”