সেপ্টেম্বরের সেরার লড়াইয়ে নিগার

‘আইসিসি প্লেয়ার অব দা মান্থ’-এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় বাংলাদেশ অধিনায়কের সঙ্গী ভারতের হারমানপ্রিত কৌর ও স্মৃতি মান্ধানা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2022, 11:24 AM
Updated : 5 Oct 2022, 11:24 AM

নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেওয়া নিগার সুলতানার সামনে দারুণ কিছুর হাতছানি। ‘আইসিসি প্লেয়ার অব দা মান্থ’ এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সেপ্টেম্বরের সেরার লড়াইয়ে তার সঙ্গী ভারতের হারমানপ্রিত কৌর ও স্মৃতি মান্ধানা।

গত মাসের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে সেরার লড়াইয়ে জায়গা পাওয়া পুরুষ ও নারী ক্রিকেটারদের তালিকা বুধবার প্রকাশ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা।

সেরার লড়াইয়ে ছেলেদের তিন জন হলেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ান, অস্ট্রেলিয়ার ক্যামেরন গ্রিন ও ভারতের আকসার প্যাটেল।

তিন নারী ক্রিকেটার:

নিগার সুলতানা

বাছাইয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল আসরে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। দলের এই পথচলায় দারুণ নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও বড় ভূমিকা রাখেন নিগার।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ১৪৩ রানের পুঁজি গড়ার পথে ৫৩ বলে ৬৭ রান করেছিলেন এই কিপার-ব্যাটার। ম্যাচটি ১৪ রানে জিতে বাছাইপর্ব শুরু করে বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৮ রান তাড়ায় দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন নিগার।

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৪০ বলে ৫৬ রানের চমৎকার এক ইনিংস। নক-আউট পর্বে সেভাবে জ্বলে উঠতে না পারলেও টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন নিগার। পাঁচ ম্যাচে ৪৫ গড় ও ১০৫.২৬ স্ট্রাইক রেটে তার রান ছিল ১৮০।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় নারী ক্রিকেটার হিসেবে এই পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেলেন নিগার। ২০২১ সালের নভেম্বরে জায়গা হয়েছিল নাহিদা আক্তারের।

হারমানপ্রিত কৌর 

গত মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ভালো কাটেনি ভারত অধিনায়কের। তিন ম্যাচে রান করতে পারেন মোটে ৪৯। তবে ওয়ানডে সিরিজে ইংলিশদের হারানোর পথে বড় অবদান রেখে প্রথমবারের মতো মাস সেরার লড়াইয়ে জায়গা করে নিলেন তিনি।

একটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে তিন ওয়ানডেতে হারমানপ্রিত রান করেন ২২১। জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। প্রথম ম্যাচে রান তাড়ায় ৭৪ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। পরের ম্যাচটি জয়ের পথে ১৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে রাখেন সবচেয়ে বড় ভূমিকা।

স্মৃতি মান্ধানা

‘আইসিসি প্লেয়ার অব দা মান্থ’ এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় প্রথমবার জায়গা পেলেন স্মৃতিও। ইংলিশদের বিপক্ষে সাদা বলের দুই সংস্করণেই ভালো করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। 

টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন স্মৃতি। তিন ম্যাচের সিরিজে এক ফিফটি, ৫৫.৫০ গড় ও ১৩৭.০৩ স্ট্রাইক রেটে করেন ১১১ রান।

ওয়ানডেতেও সেই ফর্মে ধরে রাখেন তিনি। তিন ম্যাচে দুই ফিফটিতে রান করেন ১৮১ রান, যা সিরিজে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সীমিত ওভারের দুই সংস্করণেই ৫০ এর বেশি গড় নিয়ে মাস শেষ করেন স্মৃতি।

তিন পুরুষ ক্রিকেটার:

মোহাম্মদ রিজওয়ান

গত মাসে এশিয়া কাপে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠেও হেসেছে রিজওয়ানের ব্যাট। গত মাসে ১০ টি-টোয়েন্টি খেলে ৭টি ফিফটি করেন পাকিস্তান কিপার-ব্যাটসম্যান।

এশিয়া কাপে ৬ ম্যাচে ৩ ফিফটিতে টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ২৮১ রান করেন তিনি। আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ টি-টোয়েন্টির পাঁচটি হয় গত মাসে। যেখানে চার ম্যাচেই ফিফটি করেন রিজওয়ান। ৪-৩ ব্যবধানে দল সিরিজ হারলেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। ৬৩.২০ গড় ও ১৩৮.৬০ স্ট্রাইক রেটে রান করেন ৩১৬। 

ক্যামেরন গ্রিন

গত মাসে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ও ভারত সফরে ব্যাটে-বলে আলো ছড়ান এই অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার। যার পুরস্কার হিসেবে তিনি সংক্ষিপ্ত তালিকায় পেলেন জায়গা।

কিউইদের সঙ্গে প্রথম ওয়ানডেতে রান তাড়ায় ৪৪ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে দুই উইকেটের জয় এনে দেন গ্রিন ৮৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে। পরের ম্যাচে ১২ বলে ২৫ রানের সঙ্গে নেন দুই উইকেট।

প্রথম পছন্দের কয়েকজন না থাকায় ভারত সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সুযোগ পান গ্রিন। পেশাদার ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ওপেনিং করার সুযোগ পেয়ে তিন ম্যাচে দুটি বিধ্বংসী ফিফটি উপহার দেন তিনি।

আকসার প্যাটেল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ব্যাটসম্যানদের রাজত্বের মাঝে দুর্দান্ত বোলিং করেন আকসার। বাঁহাতি স্পিনে ওভার প্রতি স্রেফ ৬.৩০ রান দিয়ে উইকেট নেন তিনি সর্বোচ্চ ৮টি। সিরিজ সেরার পুরস্কারও ওঠে তার হাতে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি মাঠে গড়ায় গত মাসে। ওই ম্যাচেও দারুণ বোলিং করেন তিনি। এক উইকেট নেন স্রেফ ১৬ রান দিয়ে।

২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে আইসিসি মাস সেরা ক্রিকেটারের স্বীকৃতি দেওয়া শুরু করে। আইসিসির ভোটিং একাডেমি ও ক্রিকেট সমর্থকদের যৌথ ভোটে নির্বাচন করা হয় মাসের সেরা দুই ক্রিকেটার। ভোটিং একাডেমিতে আছেন জ্যেষ্ঠ ক্রীড়া সাংবাদিক, সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকাররা। তারা ভোট দেন ই-মেইলে, আইসিসির নিবন্ধিত সমর্থকদের ভোট দিতে হয় আইসিসির ওয়েবসাইটে।

সেরার রায়ে ভোটিং একাডেমির ভোট বিবেচনায় নেওয়া হয় শতকরা ৯০ ভাগ, সমর্থকদের ভোট বাকি ১০ ভাগ।