অধিনায়ককে বিশ্রাম দিয়ে জয়ের দেখা পেল উইন্ডিজ

শেষ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল ক্যারিবিয়ানরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2022, 04:34 AM
Updated : 15 August 2022, 04:34 AM

খেলা শুরুর আগেই বড় চমক। নিকোলাস পুরান নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে টস করতে নামলেন রভম্যান পাওয়েল। নিয়মিত অধিনায়ককে বিশ্রাম দেওয়াসহ চারটি পরিবর্তন তাদের একাদশে। দলে আসা সেই চারজনই ম্যাচে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাতে শেষ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল ক্যারিবিয়ানরা।

জ্যামাইকায় তিন ম্যাচ সিরিজের শেষটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে হারাল নিউ জিল্যান্ডকে। আগের দুই ম্যাচ জিতেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল কিউইরা।

প্রথম দুই ম্যাচে বড় স্কোর গড়া নিউ জিল্যান্ডকে রোববার ১৪৫ রানেই আটকে রাখে ক্যারিবিয়ান বোলাররা। রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ব্র্যান্ডন কিং ও শামার ব্রুকসের শতরানের জুটির পর তারা ম্যাচ জিতে যায় ১ ওভার বাকি রেখে।

দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা এই সংস্করণে জয়ের দেখা পেল সব মিলিয়ে ৫ ম্যাচ পর।

স্যাবাইনা পার্কের মন্থর উইকেটে আগের দুই ম্যাচে একাধিক স্পিনার না খেলানোয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাদশ নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। অবশেষে শেষ ম্যাচে দলে আনা হয় বাড়তি স্পিনার। সেই স্পিনার আকিল হোসেন তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসেই ছাপ রাখেন নিজের।

বাঁহাতি স্পিনারকে মার্টিন গাপটিল সোজা ব্যাটে ছক্কা মারলেও পরের বলে শোধ তোলেন তিনি। ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন গাপটিল (১১ বলে ১৫)।

তিনে নামা মিচেল স্যান্টনার ১২ রানে সহজতম এক ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গেলেও তাকে ১৩ রানে থামান আকিল হোসেনই।

আরেক স্পিনার হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র আক্রমণে এসে প্রথম ওভারেই বিদায় করেন ডেভন কনওয়েকে (১৭ বলে ২১)।

১০ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৬৪।

ইনিংসটাকে একটু গতি দেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা গ্লেন ফিলিপস। আরেকপাশে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ক্রিজে টিকে থাকলেও দ্রুত রান তুলতে পারেননি।

২৭ বলে ২৪ রান করা কিউই অধিনায়ককে ফেরান সিরিজে প্রথম খেলতে নামা ডমিনিক ড্রেকস। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ফিলিপসকে (২৬ বলে ৪১) থামান ওডিন স্মিথ।

স্মিথ শেষ দিকে আরও দুই উইকেট নিয়ে ভোগান্তিতে ফেলেন কিউই ব্যাটিংয়ে। শেষ চার ওভারে স্রেফ একটি বাউন্ডারি মারতে পারে তারা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়ের যা দুর্দশা চলছিল, তাতে এই রান তাড়া নিয়েও সংশয়ের অবকাশ ছিল যথেষ্টই। তবে শামার ব্রুকস ও চোট কাটিয়ে সিরিজে প্রথম মাঠে নামা ব্র্যান্ডন কিং উদ্বোধনী জুটিতেই ম্যাচের ফয়সালা করে ফেলেন একরকম। ৭৯ বলে ১০২ রানের জুটি গড়েন দুজন।

শুরুতে রান বাড়ানোর কাজটি মূলত করেন কিং। ঘরের মাঠে দারুণ সব শট খেলে রান বাড়ান তিনি। আরেকপাশে ব্রুকস কেবল সঙ্গ দিচ্ছিলেন। ৮ ওভারে দলের রান যখন ৬২, তাতে কিংয়ের অবদান ছিল ২৩ বলে ৩৯, ব্রুকসের ২৫ বলে ১৬!

পরে ইশ সোধির এক ওভারে দুটি ছক্কায় ব্রুকসও হাতের জোর দেখান কিছুটা।

৩০ বলে ফিফটি ছোঁয়া কিং আউট হয়ে যান ৩৫ বলে ৫৩ করে। তিনে নেমে ডেভন টমাস ভালো করতে পারেননি। তবে দলের জিততে সমস্যা হয়নি। চারে নেমে ক্যামিও ইনিংসে ম্যাচ শেষ করেন অধিনায়ক পাওয়েল।

একাদশ টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ফিফটি করে ব্রুকস অপরাজিত থাকেন ৫৯ বলে ৫৬ রান করে। দুটি করে চার-ছক্কায় পাওয়েল অপরাজিত ১৫ বলে ২৭ করে।

ঝড়ো ইনিংসের জন্য ম্যাচের সেরা কিং। সিরিজে ১৭১.৭৯ স্ট্রাইক রেটে ১৩৪ রান করে ম্যান অব দা সিরিজ ফিলিপস।

দুই দল এখন বারবাডোজে খেলবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। প্রথম ম্যাচ বৃহস্পতিবার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৪৫/৭ (গাপটিল ১৫, কনওয়ে ২১, স্যান্টনার ১৩, উইলিয়ামসন ২৪, ফিলিপস ৪১, মিচেল ১৪, নিশাম ৬, ব্রেসওয়েল ৩*, সোধি ৬*; ড্রেকস ৪-০-১৯-১, জোসেফ ৪-০-৩৫-০, আকিল ৪-০-২৮-২, শেফার্ড ২-০-১৮-০, স্মিথ ৪-০-২৯-৩, ওয়ালশ ২-০-১৬-১)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৯ ওভারে ১৫০/২ (কিং ৫৩, ব্রুকস ৫৬*, টমাস ৫, পাওয়েল ২৭*; ব্রেসওয়েল ২-০-১৪-০, স্যান্টনার ৪-০-৩০-০, সাউদি ৪-০-৩৭-১, ফার্গুসন ৪-০-১৬-০, সোধি ৪-০-৩৬-১, নিশাম ১-০-১১-০)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: ব্র্যান্ডন কিংভ

ম্যান অব দা সিরিজ: গ্নেন ফিলিপস।