ধাক্কা সামলে দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াই

দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা রুয়ান দু সুয়াত ও ৩৭ বছর বয়সে টেস্ট অভিষিক্ত শন ফন বার্গের ব্যাটে বিপর্যয় কাটিয়ে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের লড়াই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2024, 06:16 AM
Updated : 13 Feb 2024, 06:16 AM

বয়স পেরিয়ে গেছে ৩৭। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩৫ ম্যাচে লেগ স্পিনে উইকেট ৪৭৭টি, ব্যাট হাতে রান ৫ হাজারের বেশি। এত বেলা পেরিয়ে অবশেষে স্বপ্নের টেস্ট ক্যাপ পেলেন শন ফন বার্গ। টেস্ট ক্রিকেট প্রথম দিনটিকে ব্যাট হাতে নিজেকে কিছুটা জানান দিলেন তিনি। আগের টেস্টে অভিষেকে সম্ভাবনার ছাপ রেখেছিলেন রুয়ান দু সুয়াত। দ্বিতীয় টেস্টে নিজেকে আরেকটু মেলে ধরলেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। দুজনের লড়াইয়ে দিনটা স্বস্তিতে শেষ করল দক্ষিণ আফ্রিকা। 

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টন টেস্টের প্রথম দিন শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৬ উইকেটে ২২০। 

সেডন পার্কের সবুজাভ উইকেটে ১৫০ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা প্রোটিয়ারা। অবিচ্ছন্ন সপ্তম উইকেটে ৭০ রান যোগ করেন দু সুয়াত ও ফন বার্গ। 

টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিতে ১৩৫ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত দু সুয়াত। গত ৩১ বছরের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে টেস্ট অভিষিক্ত ফন বার্গ (৩৭ বছর ১৫০ দিন)  দিন শেষ করেন ৮২ বলে ৩৪ রান নিয়ে। 

এসএ টোয়েন্টির কারণে দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে সফরে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টেস্টে পর্যদুস্ত হয়েছিল বড় ব্যবধানে। ম্যাচের পর অধিনায়ক নিল ব্রান্ড বলেছিলেন, পরের টেস্টে দলের ভেতর লড়াইয়ের তাগিদ দেখতে চান তিনি। কিন্তু তিনি নিজে বা প্রথম সারির ব্যাটসম্যানরা তা পারেননি সেভাবে। 

সবুজ ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে প্রথম ওভারে ব্রান্ডের বাউন্ডারিতে শুরু হয় ম্যাচ। তবে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই বিদায় নেন ক্লাইড ফোরটান। আগের টেস্টে নিচের দিকে ব্যাট করা কিপার-ব্যাটসম্যান এবার ওপেন করে আউট হন শূন্যতে। ম্যাট হেনরির বলে ড্রাইভ করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। গালিতে বাঁদিক ঝাপিয়ে অসাধারণ রিফ্লেক্সে এক হাতে ক্যাচ নেন গ্লেন ফিলিপস। 

পরের গল্পটা অনেকটা আগের টেস্টের মতোই। চার ব্যাটসম্যান থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২০ রান ছুঁয়েছেন চারজনই, কিন্তু ৪০ পর্যন্ত যেতে পারেননি কেউ। 

অভিষিক্ত পেসার উইল ও’রোক প্রথম উইকেটের স্বাদ পান ব্রান্ডকে ফিরিয়ে। ৫ চারে ২৫ রান করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। লাঞ্চের আগে ৭১ বলে ৩২ রান করে বিদায় নেন তিনে নামা রেনার্ড ফ্যান টন্ডার। প্রায় এক বছর পর টেস্ট খেলতে নামা নিল ওয়্যাগনার উইকেটের দেখা পান শর্ট বলের চেনা কৌশলেই। 

অনেকটা সময় উইকেট আঁকড়ে রাখেন পরের দুই ব্যাটসম্যানও। কিন্তু তারা পারেননি ইনিংসক পরিণতি দিতে। ১৪২ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে হুট করে ধৈর্য হারিয়ে রাচিন রাভিন্দ্রাকে স্লগ করার চেষ্টায় জুবাইর হামজা ফেরেন ৯৯ বলে ২০ রান করে। 

রাভিন্দ্রা পরের ওভারেই ফেরান খর্বশক্তির দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বড় ভরসা কিগান পিটারসেনকে। ১০১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তারা তখন ধুঁকছে। 

লড়াইয়ের শুরু পরের জুটিতে। ডেভিড বেডিংহ্যাম ও দু সুয়াত লড়াই করে চেষ্টা করেন জুটি গড়ার। 

চা বিরতির একটু পর সম্ভাবনাময় এই জুটি ৪৯ রানে থামান সেই রাভিন্দ্রা। ফ্লিক করতে গিয়ে জুতায় বল লেগে ক্যাচ হয়ে বিদায় নেন ১৫৩ মিনিটে ৩৯ রান করা বেডিংহ্যাম। 

এরপর দু সুয়াত ও ফন বার্গের প্রতিরোধ। নিউ জিল্যান্ডের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে উইকেটে পড়েন থাকেন দুজন। ১১৫ বলে ফিফটি ছুঁয়ে আরও এগিয়ে যান দুজন। ৮০ ওভার শেষে দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েও এই জুটি ভাঙতে পারেনি কিউইরা। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৮৯ ওভারে ২২০/৬ (ব্রান্ড ২৫, ফোরটান ০, ফ্যান টন্ডার ৩২, হামজা ২০, বেডিংহ্যাম ৩৯, পিটারসেন ২, দু সুয়াত ৫৫*, ফন বার্গ ৩৪*; সাউদি ২১-৭-৫৪-০, হেনরি ১৭-৫-৪৪-১, ও’রোক ১৪-৩-৪৭-১, ওয়্যাগনার ১৭-৬-৩২-১, রাভিন্দ্রা ২১-৮-৩৩-৩)।