৫০০ উইকেট নিতে চান হাসান মাহমুদ

ক্যারিয়ার শেষে নিজেকে ৫০০ উইকেটের ক্লাবে দেখতে চান তরুণ পেসার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2023, 08:42 AM
Updated : 11 March 2023, 08:42 AM

‘অবশ্যই ৫০০’- দুই শব্দের উত্তরে নিজের লক্ষ্য জানালেন হাসান মাহমুদ। প্রশ্ন ছিল, ক্যারিয়ার শেষে নিজের নামের পাশে কত উইকেট দেখতে চান তিনি। অল্প কথায় তা জানিয়ে নিজের বোলিংয়ের ভাবনা নিয়ে আরও নানা কথা বলেছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে দারুণ বোলিং করা তরুণ পেসার।

চট্টগ্রামে বাংলাদেশের ৬ উইকেটের দাপুটে জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন হাসান। ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু করেও ইংলিশরা যে ধরাছোঁয়ার বাইরে যেতে পারেনি, এর পেছনে মূল অবদান ছিল ২৩ বছর বয়সী পেসারের। তার দুর্দান্ত ডেথ বোলিংয়ে শেষ ৫ ওভারে ৩০ রানের বেশি করতে পারেনি ইংল্যান্ড।

নিজের প্রথম দুই ওভারে ২১ রান খরচ করেন হাসান। ডেথে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষ দুই ওভারে স্রেফ ৫ রান দিয়ে জস বাটলার ও স্যাম কারানের উইকেট নেন তিনি। টানা ইয়র্কারের পাশাপাশি কার্যকরী স্লোয়ারে বৈচিত্র্যময় বোলিং করেন ডানহাতি পেসার। 

সবশেষ বিপিএলেও দারুণ ফর্মে ছিলেন হাসান। তানভির ইসলামের সঙ্গে যৌথভাবে নেন আসরের সর্বোচ্চ ১৭ উইকেট। রংপুর রাইডার্সের হয়ে নিয়মিত ডেথ ওভারে বোলিং করেও ওভারপ্রতি ৮ রানের কম (৭.৯৮) খরচ করেন তিনি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে এক ম্যাচে ডেথ ওভারে টানা ১২টি ইয়র্কারের চেষ্টা করে সফল হন বেশিরভাগ ডেলিভারিতে। 

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে ডেথ ওভারে বোলিংয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

“আমার চিন্তা থাকে বল বাই বল। একটা বল যদি ডট দিতে পারি, পরের বলের জন্য সেটাই চিন্তা থাকে। যদি বাউন্ডারি হয়েও যায়, তবু আমি আমার স্ট্রেংথে থাকি, যেটা পছন্দ করি, সে বলটা করি। ওই সময়টায় আমি নিজের ক্যারেক্টারটা শো করতে পছন্দ করি। আমি চাই ওই চ্যালেঞ্জটা নিতে।” 

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জটা নিয়ে জয়ী হওয়ার পথটা সহজ ছিল না হাসানের। তার দ্বিতীয় ওভারের শেষ দুই বলে ছক্কা মারেন জস বাটলার। পরে তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেও স্ট্রাইকে ছিলেন ইংলিশ অধিনায়ক। 

তখন ফিফটি করে দারুণ খেলতে থাকা বাটলারকে দেখেও বাড়তি কিছুর চেষ্টা করেননি হাসান। বরং নিজের পরিকল্পনায় থেকে সফল হওয়ার কথাই বললেন তিনি। 

“ওইসময়... ও যে আমাকে দুইটি ছয় মেরেছে পরপর, আমি ওই ছয়ের দিকে তাকাইনি। আমি দেখিইনি ও কী করছে। শুধু আমি কী করব, তা নিয়ে ভাবছিলাম। শেষ দুই ওভারে আমার চ্যালেঞ্জ ছিল যেকোনোভাবে এই দুই ওভার রান কম দিতে হবে। সেটাই করার চেষ্টা করেছি।”

১১ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ১৫ উইকেট নিয়েছেন হাসান। তার সেরা বোলিং গত বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে নেওয়া ৪৭ রানে ৩ উইকেট। সেদিন রান খরচ হলেও ভারতের মতো দলের বিপক্ষে উইকেট পাওয়া বড় প্রেরণা হিসেবে কাজ করছে বলে জানালেন তিনি।

“ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের সেটিই ছিল আমার প্রথম ম্যাচ। ওই ম্যাচের পর আমার অভিজ্ঞতাটা... ভয়টা কেটে গেছে বলতে গেলে। এজন্য এখানে আমার জন্য বল করা কিছুটা সহজ হয়েছে।”

প্রায় তিন বছরের ক্যারিয়ারে ৬টি ওয়ানডে ম্যাচও খেলেছেন হাসান। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বোলিংয়ের সময় পরিকল্পনায় কেমন পরিবর্তন আনতে হয়?

“ওয়ানডেতে তো আমরা ১০ ওভার করি। প্রথম ৫ ওভারের একটা পরিকল্পনা থাকে। বল যখন নতুন থাকে তখন সুইং নিয়ন্ত্রণ করা, লাইন-লেংথে বোলিং করা, ফিল্ডিং অনুযায়ী বোলিং করা। পরে ৩০ ওভারের পর যখন বোলিংয়ে আসা হয়, তখন পরের ৫ ওভারের পরিকল্পনা অন্যরকম। তখন রান কম দেওয়ার চেষ্টা থাকে। ব্যাটসম্যান তখন মারতে চায়। তখন কিছুটা ভিন্ন পরিকল্পনায় বোলিং করা হয়।”

“টি-টোয়েন্টিতে তো ৪ ওভার থাকে। খুবই দ্রুত শেষ হয়ে যায়। ওই সময় ব্যাটসম্যান শুরু থেকেই মারতে চায়। আমাদেরও শুরু থেকে রান কম দেওয়ার চিন্তা করি। এটুকুই পার্থক্য। যে ধরনের বলে ডট পাওয়া যাবে, ওইটাই বেশি চেষ্টা করি।”

বোলিংয়ে নির্দিষ্টভাবে কাউকে অনুসরণ করেন না হাসান। তবে সবার বোলিং দেখেন তিনি। চেষ্টা করেন নতুন কিছু শেখার। ইংল্যান্ডের দুই ফাস্ট বোলার মার্ক উড, জফ্রা আর্চারের সঙ্গে কথা বলে কিছু বিষয় জেনে নিতে চান তিনি।

“(আর্চার-উডদের সঙ্গে) এখনও কথা বলিনি। সামনে হয়তো বলব। এখন ওদের দেখছি, পর্যবেক্ষণ করছি। ওদের জিজ্ঞেস করব অনেক কিছু। চাপ কীভাবে সামাল দেয়, নতুন বলে কীভাবে এতো স্মুদলি বোলিং করে। এগুলো নিয়ে আলোচনা করব।”