দেশের ক্রিকেটে লেগ স্পিনের সমস্যা সমাধানে বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিসিবি।
Published : 28 Apr 2024, 12:13 PM
‘আমাদের এখানে আজকে ইমতিয়াজ আছে। ও শিক্ষাবৃত্তি পাবে’- লেগ স্পিন নিয়ে বিসিবির ভাবনার প্রশ্নে শেখ ইমতিয়াজ শিহাবের নাম বললেন গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান খালেদ মাহমুদ। বছর দুয়েক আগে জাতীয় স্কুল ক্রিকেট মাতানো লেগ স্পিনার ইমতিয়াজ এখন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য।
ইমতিয়াজের মতো তৃণমূল পর্যায় থেকে আরও লেগ স্পিনার বের করে আনার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিসিবি। এরই মধ্যে দেশের আনাচে-কানাচে থেকে প্রতিভা অন্বেষণের মাধ্যমে ৮০ জন সম্ভাবনাময় লেগ স্পিনারকে খুঁজে নিয়েছে বোর্ডের গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগ। আগামী ২ ও ৩ মে হবে তাদের চূড়ান্ত ট্রায়াল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলনে শনিবার প্রাইম ব্যাংক জাতীয় স্কুল ক্রিকেটের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান ও ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে এই খবর জানান খালেদ মাহমুদ। বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্টের কোচ সাবেক পাকিস্তানি লেগ স্পিনার শাহেদ মেহমুদের তত্ত্বাবধানে চলছে লেগ স্পিনার খোঁজার এই বিশেষ কর্মসূচি।
প্রায় ৮ মাস ধরে বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগে কাজ করছেন শাহেদ। খেলোয়াড়ি জীবনে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট খেলে যাওয়া পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণির সাবেক এই ক্রিকেটার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই শুরু করেছেন লেগ স্পিনার অন্বেষণ। দেশের প্রায় সব জেলার স্থানীয় কোচদের সহযোগিতা নিয়ে পরিচালনা করেছেন লেগ স্পিনার হান্ট।
খালেদ মাহমুদ জানালেন, সারা দেশ থেকে বাছাইকৃত বোলারদের নিয়ে মিরপুরের একাডেমি মাঠে আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবার হবে পরবর্তী ট্রায়াল।
“লেগ স্পিনার নিয়ে অবশ্যই আমাদের বাড়তি চিন্তা আছে। (বিসিবির গেম) ডেভেলপমেন্টে শাহেদ মেহমুদ আছেন লেগ স্পিন কোচ হিসেবে। এরই মধ্যে আমরা অনেক লেগ স্পিনার নিয়ে ট্যালেন্ট হান্ট করেছি। ৮০ জনকে খুঁজে বের করেছি। শাহেদ বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে গিয়েছে। রংপুর, ফরিদপুর, রাজশাহী... সব জায়গায় গিয়ে কাজ করে ট্যালেন্টগুলো বের করে এনেছে।”
“শিগগিরই আমরা দুই ভাগে ৪০ জন করে ৮০ জনের সঙ্গে ক্যাম্প শুরু করব। আগামী ২ ও ৩ মে এই ক্যাম্প হবে। সেখানে আমরা বাছাই করে এই ক্যাম্পটা আরও ছোট করব। পরে ২০ জনে এনে আমরা তাদেরকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করব।”
২০ জনে নামিয়ে আনার পর তিন সপ্তাহের স্কিল ক্যাম্প করার পরিকল্পনা রয়েছে বিসিবির। যেখানে জাতীয় দলের স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদকেও রাখতে চায় গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগ। পরে ওই স্কিল ক্যাম্প শেষে ১২ থেকে ১৫ জন নিয়ে দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা করা হবে।
সারা দেশ থেকে এত সংখ্যক লেগ স্পিনার উঠে আসায় সন্তুষ্টি ফুটে উঠল খালেদ মাহমুদের কণ্ঠে।
“আমাদের এখন অনেক লেগ স্পিনার উঠে এসেছে। আমি খুবই খুশি। আগে যথাযথ যত্নের অভাব ছিল। এজন্য লেগ স্পিনার কোচ আমরা একজন নিয়েছি ডেভেলপমেন্টে। আমি খুব খুশি যে, মুশতাক (আহমেদ) ভাই আমাদের জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আমি মনে করি, উনি যদি বেশি সময় ধরে আমাদের সঙ্গে থাকেন, তাহলে এখান (লেগ স্পিন ক্যাম্প) থেকে বেশ কয়েকজন লেগ স্পিনার পাওয়া যাবে।”
দেশের ক্রিকেট লেগ স্পিনের বর্তমান বাস্তবতাও তুলে ধরেন বিসিবির এই পরিচালক। লেগ স্পিনারদের বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ঢাকার ক্লাব কর্মকর্তাদের প্রতি একরকম আকুতিই জানালেন তিনি।
“লেগ স্পিনার যে ম্যাচ জেতায়, এটা আমরা অনেক সময় ভুলে যাই। আমি ক্লাব কর্মকর্তাদের বলব, ‘আপনারা লেগ স্পিনারদের সুযোগ দেন। ওরা হয়তো এক ম্যাচে খারাপ করবে, কিন্তু ওই লেগ স্পিনার আপনাকে ম্যাচ জেতাবে।’ এটা আমাদের বিসিবির যেমন দায়িত্ব তাদের উন্নত করা, তেমনি... বিসিবি কিন্তু ক্লাব ক্রিকেট খেলে না, খেলে ক্লাবগুলো। তাদেরও আগ্রহ থাকতে হবে। সুযোগটা তাদেরই দিতে হবে। সুযোগ দিলে তাদের জন্য ফল বয়ে আনবে লেগ স্পিনাররা।”