আফগানিস্তান-নিউ জিল্যান্ড টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলাও ভেস্তে গেল, প্রায় ১৬ বছর আগের বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড টেস্টের স্মৃতি ফিরে এলো।
Published : 11 Sep 2024, 11:14 AM
খেলা শুরুর নির্ধারিত সময় ছিল সকাল সাড়ে ৯টা। কিন্তু এর ১৫ মিনিট আগেই জানানো হলো, দিনের খেলা শেষ। খুব বিস্ময়ের কিছু তাতে ছিল না। আগের রাতে যা বৃষ্টি হয়েছে, পরদিনের খেলা ভেস্তে দেওয়া জন্য যথেষ্ট ছিল সেটাই। শেষ নয় সেখানেই। বুধবার সকাল থেকেও টানা চলছে বৃষ্টি। দিনের শুরুতেই তাই নিশ্চিত হয়ে গেছে, খেলা শুরু করা সম্ভব নয় এ দিনও।
যেটির মানে, ভারতের গ্রেটার নয়ডায় আফগানিস্তান-নিউ জিল্যান্ড টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় দিনেও সম্ভব হয়নি টস করা।
সবশেষ কোনো টেস্টের প্রথম তিন দিনে খেলা হতে পারেনি ২০০৮ সালের অক্টোবরে। মিরপুরে সেই টেস্টে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল নিউ জিল্যান্ড।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনে ৬ উইকেটে ২৬২ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে কিউইরা। পরদিন ৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। সপ্তম উইকেটে ৭৮ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি মুর্তজা। ৯ উইকেটে ১৬৯ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। নিউ জিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ৭৯ রান তোলার পর ড্র হয় ম্যাচ।
এবার গ্রেটার নয়ডায় স্পোর্টস কমপ্লেক্স গ্রাউন্ডের যা অবস্থা, তাতে পরের দুই দিনেও খেলা নিয়ে শঙ্কা আছে যথেষ্টই। অবশ্য আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে টেস্ট শুরুর আগেই কিছু সংবাদমাধ্যম ধারণা করেছিল, এই টেস্টে একদিনও খেলা নাও হতে পারে।
সম্প্রতি দিল্লি ও এর আশেপাশে নয়ডাসহ অন্যান্য এলাকায় প্রবল বৃষ্টি চলছে টানা। এই মাঠের আউটফিল্ড ভালো নয়, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাও খুব আধুনিক নয়। সেসব থেকেই শঙ্কাটা আগে থেকেই ছিল। আগের রাতে ভারী বৃষ্টিপাত হলে পরদিন রোদ উঠলেও এই মাঠে খেলা চালানো কঠিন।
এটির নমুনা দেখা গেছে মঙ্গলবার টেস্টের দ্বিতীয় দিনে। প্রায় সারাদিনই ছিল রোদ ঝলমলে। কিন্তু আউটফিল্ডের বেশ কিছু জায়গা ভেজা ও বিপজ্জনক থাকায় খেলা শুরু করা যায়নি। দুই যুগ আগের মতো ফ্যান দিয়ে মাঠ শুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। অনুশীলনের জায়গা থেকে শুকনো ঘাসের ব্লক তুলে এনে মূল মাঠের ভেজা জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু কাজ হয়নি।
এই মাঠে অনুশীলন করতে গিয়ে পা পিছলে অ্যাঙ্কেলে চোট পেয়ে এই টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন ইব্রাহিম জাদরান। আফগান বোর্ড যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে আউটফিল্ডের বাজে অবস্থার কারণেই এই ওপেনার চোট পেয়েছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে।
এসব নিয়ে আলোচনা-কৌতূহলও চলছে অনেক। নিজ দেশে খেলার সুযোগ নেই বলে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভারতের বিভিন্ন মাঠকে ‘হোম গ্রাউন্ড’ হিসেবে ব্যবহার করে আফগানিস্তান। গ্রেটার নয়ডার এই মাঠে ২০১৭ থকে ২০২০ পর্যন্ত ১১টি সীমিত ওভারের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে তারা। টেস্ট ছিল এবারই প্রথম।
এই টেস্টের জন্য বেঙ্গালুরুর ও কানপুরকে ভেন্যু করার প্রস্তাব দিয়েছিল ভারতীয় বোর্ড। কিন্তু আফগান বোর্ড বেছে নেয় গ্রেটার নয়ডাকে। কাবুল থেকে দিল্লিতে সরাসরি ফ্লাইট, অন্যান্য লজিস্টিক্যাল সুবিধা মিলিয়েই আফগান বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এখানে বৃষ্টির মৌসুম অগাস্টের মাঝামাঝি শেষ হয়ে যায় বলেও জানতে পেরেছিল তারা। কিন্তু তাদের সব ধারণা এবার গোলমাল পাকিয়ে গেছে।
এমনিতেই টেস্ট খেলার সুযোগ খুব বেশি পায় না আফগানিস্তান। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ৯ বছরে কেবল ৭টি ম্যাচ তারা খেলতে পেরেছে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের প্রথম টেস্ট এটিই। সেই উপলক্ষ এখন রূপ নিয়েছে হতাশায়।