তবে এককভাবে নয়, বরং সবার সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নিতে চান ফারুক আহমেদ।
Published : 21 Aug 2024, 09:17 PM
ফারুক আহমেদ বিসিবি সভাপতি হওয়ার পর ঝুলে গেছে বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে চান্দিকা হাথুরুসিংহের ভাগ্য। এই শ্রীলঙ্কানকে কোচের দায়িত্বে দেখতে চান না বলে পরিষ্কার করে দিয়েছেন বিসিবির নতুন সভাপতি। তবে এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত তিনি নিতে চান না। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানালেন ফারুক।
সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার আগে সম্প্রতি ‘নট আউট নোমান’ ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে ফারুক বলেছেন, হাথরুসিংহেকে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্বে রাখার কোনো কারণ তিনি দেখেন না। পরের কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহে নাজমুল হাসানের পদত্যাগের পর বুধবার বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নেন ফারুক। নতুন দায়িত্বে তার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে পুরোনো সেই প্রসঙ্গটি উঠল। হাথুরুসিংহেকে নিয়ে এখন তার ভাবনা কি?
ফারুক বললেন, ব্যক্তিগতভাবে তার ভাবনা আগের মতোই আছে। তবে নতুন দায়িত্বের খাতিরে বাস্তবতা কিছুটা বদলেছে।
“যখন আপনি কোনো সংস্থায় কাজ করবেন… সংস্থার ভালো-মন্দ অনেক দিক থাকে, কিন্তু সংস্থার বিরুদ্ধে যাওয়া যায় না। আমি চেষ্টা করব… তবে বোর্ড সভাপতি হয়ে বোর্ডের বিরুদ্ধে যাওয়া… এভাবে তো হয় না। চান্দিকা হাথুরুসিংহের চুক্তির ব্যাপারটি আমি জানি না বিস্তারিত। আমি নিজে আমার আগে অবস্থানেই আছি। ওখান থেকে বের হয়ে যাইনি।”
“এখন যেমন আমাকে অনেক কিছু দেখতে হবে… কীভাবে কী করা যায়, তার চেয়ে ভালো বা কাছাকাছি কাউকে পেলাম কি না, বা ছোট কাউকে পেলাম নাকি যে আমাদেরকে ভালো সার্ভিস দিতে পারবে.. এসব দেখব, প্রধান নির্বাহী আছেন, আমাদের আগে যারা কাজ করেছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলব। তবে আমি আগের অবস্থান থেকে সরিনি আসলে।”
কোচের ব্যাপারটি নিয়ে বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে দ্রুতই বিস্তারিত কথা বলবেন নতুন সভাপতি। হাথুরুসিংহের বিকল্প কে হতে পারেন, এটা বড় ভূমিকা রাখতে পারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে।
“এখনই বলা কঠিন… আরও দুই-তিন দিন যেতে দিন, আমার কলিগদের সঙ্গে কথা বলি, যারা অনেক অভিজ্ঞ। কে কে লাইনে আছে… কারণ একটা কোচকে যখন আনা হয়, তখন একটা শর্ট লিস্ট থাকে। কে কে আসতে পারেন, কাকে পাওয়া যেতে পারে, কে পারবে না, এসব চিন্তা করতে হবে।”
বিকল্প ভাবনায় স্থানীয় কোচও ফারুকের ভাবনায় আছে বলে নিশ্চিত করলেন তিনি।
“এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় কোচ… আমার মনে খুব ভালোভাবেই আছে। দেখি এখন বাকিটা… আমারই তো একমাত্র ডিসিশান মেকার হওয়া উচিত নয়। সবার সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমার ওপর দায়িত্বটা বেশি, তবে অন্যরাও থাকবে।”
হাথুরুসিংহের সঙ্গে ফারুকের বিরোধের একটা অতীতও আছে। প্রথম দফায় বাংলাদেশের কোচ থাকার সময় হাথুরুসিংহেকে নির্বাচক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতেই দ্বি-স্তর বিশিষ্ট নির্বাচক কমিটি গড়েছিলেন তখনকার সভাপতি নাজমুল হাসান। ব্যাপারটি তখন তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল। সেই সময় প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বে থাকা ফারুকের জন্য ব্যাপারটি মেনে নেওয়া ছিল কঠিন। হাথুরুসিংহের সঙ্গে তার মতবিরোধ ও ব্যক্তিত্বের সংঘাত তখন ছিল দেশের ক্রিকেটে দারুণ চর্চিত ঘটনা। এসব ঘটনার প্রতিবাদে ওই সময় প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছিলেন ফারুক।
সেই ফারুক এখন বিসিবির শীর্ষ ব্যক্তি। তবে সেই তিক্ত অতীত বা দুজনের ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিরোধ এখন সিদ্ধান্তে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে নিশ্চিত করলেন নতুন সভাপতি।
“এটা তো রাগ-বিরাগের বশবর্তী হয়ে যাবে কাজটা (সরাসরি হাথুরুসিংহেকে সরিয়ে দিলে)… তাহলে তো আমার বোধ নষ্ট হবে। এটা করতে পারব না।”