মেয়েদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে মঙ্গলবার ২০৯ রানে জিতেছে সিটি ক্লাব। ২৫১ রানের লক্ষ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা গুঁড়িয়ে দিল স্রেফ ৪১ রানে।
সিটি ক্লাবের বড় সংগ্রহ গড়ার পথে বড় অবদান রাখা পারভিন করেন ৬ চারে ৭১ রান। ৪ চারে ৪২ রান করে সাদিয়া, ফাতেমার ব্যাট থেকে আসে ২ চারে ৪৭।
প্রতিপক্ষকে অল্পতে গুটিয়ে দেওয়ার কারিগর মুরশিদা নাজনিন। ৯ ওভারে ৪ মেডেনসহ ৭ রান দিয়ে এই অফ স্পিনারের শিকার ৪ উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই।
বিকেএসপির এক নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় সিটি ক্লাব। ৭৯ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন সাদিয়া ও অচেনা জান্নাত ইমান্তা।
৫ চারে ৩৩ করে ফেরেন অচেনা। পঞ্চাশের দুয়ারে থাকা সাদিয়া বিদায় নেন কয়েক ওভার পরই। এরপর জমে যায় পারভিন ও ফাতেমার জুটি, আসে ১১৭ রান। তাতে আড়াইশ কাছে পৌঁছে যায় সিটি ক্লাবের রান।
ফিফটির আগে ফাতেমা ফিরে গেলেও পারভিন টিকে থেকে স্পর্শ করেন পঞ্চাশ, ৭৮ বলে।
আসর জুড়েই মিরপুর প্রমীলা দলের ব্যাটিংয়ের অবস্থা যাচ্ছেতাই। একবারও তারা পার করতে পারেনি একশ রান। ব্যর্থতার সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখল তারা এদিনও।
দলটির হয়ে রান করতে পারেন কেবল প্রথম তিন ব্যাটার। রানের দেখা না পাওয়াদের মধ্যে ২৬ বল খেলে অপরাজিত ছিলেন মৌসুমি আক্তার। এক বল খেলেই মাঠ ছাড়েন পাপিয়া হক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিটি ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৫০/৫ (ঝিলিক ৯, অচেনা ৩৩, সাদিয়া ইসলাম ৪২, পারভিন ৭১*, ফাতেমা ৪৭, মুরশিদা ৩, শিবানি ৪*; ইয়াসমিন ৯.২-০-৩৬-২, পাপিয়া ৩.৪-০-৩৬-০, শারমিন ১০-০-৫৩-২, মৌসুমি ১০-০-৫৩-১, রাফা ৭-০-৪১-০, জনি ৬-০-২৫-০, ঝুমুর ৪-০-২৩-০)
মিরপুর প্রমীলা: ৩৮.১ ওভারে ৪১/৯ (আমেনা ৫, প্রমা ২১, অর্পা ৫, সাদিয়া আক্তার ০, শারমিন ০, জনি ০, মৌসুমি ০*, ঝুমুর ০, ইয়াসমিন ০, রাফা ০, পাপিয়া ০ আহত অবসর; সুরাইয়া ৪.১-১-৬-২, লেকি ৭-৫-৩-২, ফাতেমা ৬-২-৮-০, কাকলি ১০-৩-১৭-০, মুরশিদা ৯-৪-৭-৪, পারভিন ২-২-০-০)
ফল: সিটি ক্লাব ২০৯ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: মুরশিদা নাজনিন
গুলশান ইয়ুথ ক্লাব-বাংলাদেশ আনসার অ্যান্ড ভিডিপি
ইনিংস শুরু করতে নেমে শেষ ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফিরলেন আফিয়া আসিমা ইরা। কাছে গিয়েও পাননি সেঞ্চুরির স্বাদ। তবে দলের প্রথম জয়ে সবচেয়ে বড় অবদানটা রাখলেন তিনি। গুলশান ইয়ুথ ক্লাবকে হারিয়ে দিল বাংলাদেশ আনসার অ্যান্ড ভিডিপি।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে বাংলাদেশ আনসার অ্যান্ড ভিডিপির জয় ১৭ রানে। ১৯৩ রানের পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে তারা থামিয়ে দিয়েছে ১৭৮ রানে।
দলকে লড়াই করার পুঁজি এনে দেওয়া আফিয়া ইরা খেলেন ৭ চারে ১৪৬ বলে ৯১ রানের ইনিংস। ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে তারই হাতে।
টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে শুরুটা খারাপ হয়নি বাংলাদেশ আনসার অ্যান্ড ভিডিপির। কিন্তু এরপর দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে পথ হারাতে বসেছিল তারা। এক প্রান্তে দলের হাল ধরে রাখেন আফিয়া ইরা।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে ১০৬ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। পরে আশা জাগালেও ছুঁতে পারেননি তিন অঙ্ক।
রান তাড়ায় গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের শুরুটাও ছিল ভালো। কিন্তু তাদের স্বস্তি উড়ে যায় তিথি রানী সরকারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে। ৭৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা, যেখানে চারটিই ছিল ডানহাতি এই পেসারের।
বিপদে পড়া দলকে লক্ষ্যের দিকে টেনে নিতে থাকেন বৃষ্টি দাস ও মিশু খান। তাদের জুটিতে জয়ের সম্ভাবনা জাগতে থাকে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের। ৬৬ রানের এই জুটি ভাঙার পর আর পেরে ওঠেনি দলটি।
তিথি ২০ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ আনসার অ্যান্ড ভিডিপি: ৪৯.৫ ওভারে ১৯৩ (আফিয়া ২৭, আফিয়া ইরা ৯১, রেশমা ৩, মাহমুদা ৮, পান্না ৯, তিথি ১১, আয়েশা ১৯, ইসমত ০, লিলি ১, উর্মি ৩, রূপা ০*; রিয়া ১০-০-৪৬-১, আনিশা ১০-৪-২৬-০, খাদিজা ১০-২-২৬-২, শাহনাজ ১০-১-৩৩-২, মোরশেদা ৬-১-৩৭-০, বৃষ্টি ১.৫-০-৮-২, নুজহাত ২-০-১৫-১)
গুলশান ইয়ুথ ক্লাব: ৫০ ওভারে ১৭৬/৮ (সুমাইয়া ২৩, রিয়া ২৬, নুজহাত ০, শাহনাজ ৪, আনিশা ১, রিমি ১১, বৃষ্টি ৪৬, মিশু ৩৩*, মোরশেদা ০, ফাতেমা ১৪*; পান্না ১০-২-৩০-১, লিলি ৫-০-৩১-০, রূপা ১০-১-৩১-১, আয়েশা ৪-০-২৩-০, তিথি ১০-২-২০-৪, আফিয়া ইরা ১০-১-২৯-১, আফিয়া ১-০-১২-০)
ফল: বাংলাদেশ আনসার অ্যান্ড ভিডিপি ১৭ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: আফিয়া আসিমা ইরা
কেরানীগঞ্জ-ইন্দিরা রোড
দুর্দান্ত ব্যাটিং উপহার দিলেন গজালা নাজ ও তাহিন তাহেরা। দুইজনই করলেন ফিফটি। কাছে গিয়েও এই স্বাদ পেলেন না তমালিকা সুমনা। এই তিন জনের ব্যাটে আড়াইশ ছাড়ানো সংগ্রহ পেল কেরানীগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমি। জবাব দিতে নেমে লড়াই-ই করতে পারল না ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্র।
কেরানীগঞ্জ ম্যাচটি জিতে নিল ১৮৩ রানে। ২৭২ রানের সংগ্রহ গড়ে প্রতিপক্ষকে তারা গুটিয়ে দিল স্রেফ ৮৯ রানে।
ব্যাট হাতে ৫ চারে ৪৭ রানের ইনিংস খেলা তমালিকা পরে বোলিংয়ে ১৭ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই। এক ছক্কা ও ৪ চারে ৫৩ রান করেন নাজ। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৮ চারে ৫৬ রান করে অপরাজিত থেকেন তাহিন।
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭৮ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় কেরানীগঞ্জ। ২ চারে ২৯ রান করা সুমি আক্তারের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি।
৫৯ বলে ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকেননি নাজ। ইতির সঙ্গে ৯০ রানের জুটি গড়েন তমালিকা। পরের তাহিনের সঙ্গে ৪৩ রানের। দারুণ খেলেও ফিফটির দুয়ার থেকে ফেরেন তিনি।
৪৩ বলে পঞ্চাশে পা রাখা তাহিন শেষ পর্যন্ত খেলে মাঠ ছাড়েন।
রান তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ইন্দিরা রোড। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ২৭ রান আসে ওপেনার হালিমাতুল সাদিয়ার ব্যাট থেকে। তাদের ৮ ব্যাটারই যেতে পারেননি দুই অঙ্কে।
তমালিকার সঙ্গে দারুণ বোলিং উপহার দিয়ে কেরানীগঞ্জের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন তাহিন ও পিংকি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কেরানীগঞ্জ: ৫০ ওভারে ২৭২/৫ (সুমি ২৯, নাজ ৫৩, তমালিকা ৪৭, ইতি ৩০, তাহিন ৫৬*, মাকতুবা ৬, নুসরাত সামান্তা ৪*; জান্নাতুল ২-০-৮-০, পারভিন ১০-২-৩৬-১, সাদিয়া ১০-০-৫০-২, হালিমাতুল সাদিয়া ৯-০-৫২-০, নুসরাত জাহান ৮-০-৫১-১, কনা ৮-০-২৬-১, সাজ্জিদা ১-০-৭-০, পূজা ১-০-২০-০, মুন্নি ১-০-১৩-০)
ইন্দিরা রোড: ৩৭.৩ ওভারে ৮৯ (হালিমাতুল সাদিয়া ২৭, সাজ্জিদা ৩, জামিলা ১০, নুসরাত জাহান ১৪, পূজা ১, সুমাইয়া ৩, মুন্নি ০, কনা ০, সাদিয়া ২*, পারভিন ২, জান্নাতুল ৩; তৃষ্ণা ৭.৩-৩-৬-১, তমালিকা ১০-৩-১৭-৩, ঝুমুর ৪-০-২৪-০, তাহিন ৭-২-১৯-২, পিংকি ৫-২-৫-২, মাকতুবা ৩-১-৬-১, নুসরাত সামান্তা ১-০-৩-০)
ফল: কেরানীগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমি ১৮৩ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: তমালিকা সুমনা