বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে বুধবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছে শেখ জামাল। ২২২ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলেছে ১৪ বল বাকি থাকতে।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে অমিতের প্রথম সেঞ্চুরিতে দুইশ পার করে খেলাঘর। ১৩৬ বলে ১২ চারে অপরাজিত ১০৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
রান তাড়ায় ১১১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন সৈকত আলি ও সাইফ। দুইজনেই করেন ফিফটি। সৈকতের ব্যাট থেকে আসে ৬৩ রান। বল হাতে তিন উইকেট নেওয়া সাইফ ৬২ রান করে হন ম্যাচ সেরা।
ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে খেলাঘরের শুরুটা ছিল মন্থর। পঞ্চম ওভারে পিনাক ঘোষ ফিরে যাওয়ার সময় দলের রান ছিল কেবল ১১।
এরপর দলকে টানেন প্রিতম কুমার ও অমিত। দুইজনে রান করতে থাকেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। তাদের ৫৩ রানের প্রতিরোধ ভাঙে ২৬ রান করা প্রিতম রান আউট হলে।
জুটি ভাঙার পর নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে নেন অমিত। ৫৯ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি, লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে তার প্রথম। আগের সেরা ছিল ৪৩।
ভারতীয় ব্যাটসম্যান অশোক মেনারিয়ার সঙ্গে জমে যায় অমিতের জুটি। ৭৭ রানের এই জুটি ভাঙেন সাইফ, তার বলে সুইপ করে আকাশে তুলে দিয়ে ইমরুল কায়েসের হাতে ক্যাচ দেন অশোক।
সাইফের অফ স্পিন পেছনে সরে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন সালমান হোসেন। নাফিদ চৌধুরিকেও টিকতে দেননি সাইফ। পরে ইলিয়াস সানিকে দ্রুত ফেরান তাইবুর রহমান।
১৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলের হাল ধরেন অমিত ও মাসুম খান। তাদের জুটিতে দুইশ পার করে খেলাঘর। ৩০ রান করে মাসুমকে ফিরিয়ে ৪৫ রানের জুটি ভাঙেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি।
ফিফটির পর একটু বেশি সময় নিয়ে ফেলা অমিত শেষ ওভারে দুই রান নিয়ে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক, ১৩৩ বলে। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে এই বছর পেরিয়ে যান এক হাজার রানের সীমানা।
গত জাতীয় লিগে ৬ ম্যাচে ১১ ইনিংসে দুটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে ৫৯ গড়ে ৫৯০ রান করেন অমিত। সর্বোচ্চ ১৮৬। এরপর বিসিএলে ৪ ম্যাচে ৬ ইনিংসে দুই সেঞ্চুরিতে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে ৬৪.৪০ গড়ে ৩২২ রান করেন তিনি।
জবাব দিতে নেমে প্রথম বলেই মোহাম্মদ হোসেন আলিকে চার মারেন সৈকত। ওভারের শেষ বল থেকে আসে আরেকটি। আব্দুর রশিদকে চার মেরে রানের খাতা খোলেন সাইফ।
অশোকের ওপর ঝড় বইয়ে দেন সৈকত। টানা তিন বলে হাঁকান দুই চার ও এক ছক্কা। প্রথম ১০ ওভারে ৬৫ রান তুলে ফেলে শেখ জামাল।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৪২ বলেই ফিফটি স্পর্শ করেন সৈকত। এরপর যেতে পারেননি বেশিদূর। এক ছক্কা ও ৮ চারে ৫৮ বলে ৬৩ রান করে ফেরেন বাউন্ডারিতে ধরা পড়ে। ভাঙে ১১১ রানের শুরুর জুটি।
৬৯ বলে ফিফটি করে অমিতও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৬ চারে তার ৬২ রানের ইনিংস শেষ হয় হোসেন আলির বলে ক্যাচ দিয়ে। ভালো করতে পারেননি ইমরুল।
৮ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারানো দলকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নেন জহুরুল ইসলাম। ৪ চারে ৪৭ রান করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। তিনি ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননিন। অপরাজিত ২৫ রানের ইনিংসে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন নুরুল হাসান সোহান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি: ৫০ ওভারে ২২১/৭ (পিনাক ৪, প্রিতম ২৬, অমিত ১০৭*, অশোক ৩২, সালমান ৩, নাদিফ ৪, ইলিয়াস ১, মাসুম ৩০, রশিদ ১*; মৃত্যুঞ্জয় ৬-০-৩৭-২, পারভেজ ৮-০-২৭-০, সানজামুল ১০-০-৫৩-০, সুমন ৬-০-২৩-০, এনামুল ২-০-১৬-০, সাইফ ১০-০-৩০-৩, তাইবুর ৮-১-৩০-১)
শেখ রাসেল ধানমণ্ডি ক্লাব: ৪৭.৪ ওভারে ২২২/৪ (সৈকত ৬৩, সাইফ ৬২, ইমরুল ১৬, জহুরুল ৪৭, সোহান ২৫*, পারভেজ ৩*; হোসেন আলি ৬-০-৩০-২, রশিদ ৫-০-৩০-০, অশোক ১০-০-৪৭-১, ইলিয়াস ১০-০-৪১-০, রনি ১০-০-৫০-০, মাসুম ৫.৪-০-২১-০, নাদিফ ১-০-৩-১)
ফল: শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাইফ হাসান