নেতৃত্বের শিক্ষাসফর চলছে তামিমের

ওয়ানডে দলের পূর্ণকালীন অধিনায়ক হিসেবে এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। মধুচন্দ্রিমার সময়টুকুও শেষ। সামনে অপেক্ষায় কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে নেতৃত্বের ক্লাসে এখনও নিজেকে ছাত্র হিসেবেই দেখছেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের কাছে প্রতিটি ম্যাচই শেখার মঞ্চ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতৃত্বের স্বাদ তামিম প্রথবার পান টেস্ট ক্রিকেটে। ২০১৭ সালে নিউ জিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে তিনি টস করেন সেই সময়ের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম চোটে ছিটকে যাওয়ায়। পরে ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে তিনটি ওয়ানডেতে তিনি অধিনায়কত্ব করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা চোটের কারণে যেতে না পারায়।

ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে অধিনায়কত্বের সত্যিকার ওজন টের পাওয়া যায় না মোটেও। তামিম সেটা টের পেতে শুরু করেছেন গত বছরের জানুয়ারি থেকে। সেই ভার বয়ে নেওয়ার কাজটিও খুব খারাপ করছেন না এখনও পর্যন্ত। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে এক টেস্ট ও তিন ওয়ানডেতেই হেরেছেন। পূর্ণকালীন দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৫ ওয়ানডের ১০টিতেই এসেছে জয়।

এই সময়টায় বড় পরীক্ষা ছিল গত বছরের নিউ জিল্যান্ড সফর। সেখানে তিন ম্যাচের সবকটি হারে বাংলাদেশ। তবে সেটি ছিল এই দফার নেতৃত্বে তামিমের মাত্র দ্বিতীয় সিরিজ। এরপর সময় গড়িয়েছে অনেক। তামিম আরও পোক্ত হয়েছেন অধিনায়ক হিসেবে। এবার তার সামনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। দুয়ারে কড়া নাড়ছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর, যেখনে ১৪ ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশ জিততে পারেনি একটিও।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা আর এবারের নেতৃত্বে ১৪ মাসের পথচলার পর এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অধিনায়ক তামিমের কাছে প্রত্যাশা যথেষ্টই থাকার কথা। তবে সফরের আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, নেতৃত্বের পথে তিনি এখনও শিখে চলেছেন।

“আমি ১২-১৪টি ম্যাচ অধিনায়কত্ব করেছি। আমার কাছে মনে হয়, প্রত্যেকটি ম্যাচ আমার জন্য শিক্ষা। প্রতিটি ম্যাচে আমাকে ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেগুলো থেকে আমি শিখেছি। অধিনায়কত্ব এমন এক জিনিস, অনেক দিন ধরে অধিনায়কত্ব করলে, বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে অধিনায়কত্ব করলে, তাহলে অভিজ্ঞতা থাকে। আমার জন্য প্রতিটি ম্যাচ শেখার মঞ্চ। প্রতি ম্যাচে নতুন পরিস্থিতি থাকে শেখার জন্য।”

এখনও পর্যন্ত নেতৃত্বে যেমন করেছেন, সেই মূল্যায়নের ভার অন্যদের ওপর ছেড়ে দিলেন তামিম। তার নিজের আক্ষেপ আছে দুটি ম্যাচ নিয়ে। গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে ২-০তে এগিয়ে যাওয়ার পর শেষ ম্যাচে হারতে হয়েছে, এবার গত মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও হয়েছে একই অভিজ্ঞতা।

“আমি কেমন অধিনায়ক, কেমন দলের প্রতি অবদান রাখতে পারছি, সেটা নিজে মূল্যায়ন করতে পছন্দ করি না। অন্যরা আমাকে বিচার করবে।”

“(নিজের চোখে) এখনও পর্যন্ত যেভাবে যাচ্ছে, তাতে আমি খুশি। দুটি ম্যাচ আমার কাছে কষ্ট লাগে, একটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, আরেকটি আফগানিস্তানের বিপক্ষে। আমরা দাপট দেখাচ্ছিলাম দুটি সিরিজেই, কিন্তু ভালোভাবে শেষ করতে পারিনি। সেদিক থেকে কিছুটা হতাশার। তবে জীবন চলে যায়। আপনি চ্যালেঞ্জ জানাবেন, আপনাকেও সেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।”