‘অসাধারণ বোলিং করেছে নাসুম’

আম্পায়ার আঙুল তুলতেই কোমর দুলিয়ে নাচতে শুরু করলেন নাসুম আহমেদ। ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট, উদযাপন তো বিশেষ কিছু হওয়াই উচিত! যদিও একটু পরেই উইকেট কমে গেল একটি। রিভিউয়ে রক্ষা পেলেন ব্যাটসম্যান। নাসুমের ৫ উইকেট হলো না। তবে যেটুকু হলো এবং যেমন বোলিং করলেন, তাতে নাচিয়ে ছাড়লেন তিনি আফগান ব্যাটসম্যানদেরও। উইকেটের পেছন থেকে নাসুমের এমন বোলিংয়ে মুগ্ধতায় ভেসে যাচ্ছেন লিটন কুমার দাস।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2022, 02:44 PM
Updated : 3 March 2022, 02:44 PM

৪-০-১০-৪, এই বোলিং ফিগারই যথেষ্ট নাসুমের পারফরম্যান্স বুঝিয়ে দিতে। তবু যেন বাকি রয়ে যায় অনেক কিছুই। যতটা আঁটসাঁট বোলিং করেছেন, গতি বৈচিত্রে যেভাবে ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করেছেন এবং মনস্তাত্ত্বিক খেলায় যেমন করে ব্যাটসম্যানদের পরাস্ত করেছেন, সবকিছুতেই বোলার হিসেবে তার এগিয়ে চলার প্রমাণ। নাসুম আরও ক্ষুরধার হচ্ছে, আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন এবং সমৃদ্ধ হচ্ছে সময়ের সঙ্গে।

বাংলাদেশের পুঁজি খুব বেশি ছিল না এ দিন। ১৫৬ রান তাড়ায় ঝড়ো একটা শুরু আফগানরা করতে পারলে ম্যাচ হয়ে যেতে পারত সহজ। আফগান ব্যাটিং লাইন আপের মূল শক্তির জায়গাও টপ অর্ডার। দুই আগ্রাসী ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও হজরতউল্লাহ জাজাই, তিনে তরুণ সম্ভাবনাময় দারবিশ রাসুলি। বাংলাদেশের বোলারদের মূল চ্যালেঞ্জ ছিল পাওয়ার প্লে। সেই চ্যালেঞ্জের জায়গাতেই দাপুটে বোলিংয়ে রাজত্ব করেন নাসুম।

পাওয়ার প্লেতে আফগানরা করতে পারে ৬ ওভারে মাত্র ২৯ রান। নাসুমের বোলিং ফিগার তখন ৩-০-৭-৪! ওই সময়টায় মনে হচ্ছিল, নাসুম উইকেট পেয়ে যাবেন যেন প্রতি বলেই!

বাংলাদেশের জয়ের আরেক নায়ক লিটন ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে বললেন, নাসুমের বোলিংই খেলার ভাগ্য গড়ে দিয়েছে।

“আমরা যে রান করেছিলাম, টিম মিটিংয়ে আমরা বলছিলাম, (১৫৫ রান) মিরপুরের জন‍্য খুব একটা বেশি রান না, আবার খুব একটা খারাপ রানও না। ১৮০ রান হলে ব‍্যাটসম‍্যানরা ফ্লো-তে খেলে। ১৫০-১৬০ রান হলে ব‍্যাটসম‍্যান চিন্তায় পড়ে, মারবে কী মারবে না, উইকেট দেব না। চিন্তা-ধারার খেলা চলে আসে। এই জায়গায় নাসুম যে বল করেছে, সেটা আসলে খেলার মোড় বদলে দেওয়া ওভারগুলো করেছে।”

“ও যদি শুরুতে উইকেট এনে না দিত, ওদের যদি পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৪০ রান থাকত, তাহলে হয়তো খেলাটা ভিন্ন হতো। আমি মনে করি, উইকেট ভালো ছিল (ব্যাটিংয়ের জন্য)। সেখানে নাসুম যে বোলিং করেছে, এটা অসাধারণ।”

এই ম্যাচের পারফরম্যান্সে টি-টোয়েন্টিতে নিজের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড স্পর্শ করেন নাসুম। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চার উইকেট হয়ে গেল তিনবার।

বাংলাদেশে যদিও বাঁহাতি স্পিনারের অভাব নেই। তবে নেটে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে নাসুমকে ভিন্ন ঘরানার মনে হয় লিটনের।

“ওকে আমার কাছে বেসিক বাঁহাতি স্পিনারদের মতো মনে হয়নি কখনও। আমি ওকে নেটে খেলেছি, সবসময় কিছু না কিছু ভিন্ন করার চেষ্টা করে। একটা আস্তে করে, একটা জোরে। টি-টোয়েন্টিতে এই জিনিসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, বোলার যদি এক রিদমে বল করে, ব‍্যাটসম‍্যানের জন্য বুঝে ফেলা খুব সহজ হয়ে যায়। কিন্তু ওকে আমার একটু ভিন্ন মনে হয়।”