উইকেট নয়, রান না হওয়ার ‘দায় ক্রিকেটারদেরই’

সিরিজ শুরুর ব্যস্ততার আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে খানিকটা অলস একটি দিন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে অনুশীলন নেই কোনো দলেরই। নিস্তরঙ্গ সেই দুপুরেই হঠাৎ একটু আলোড়ন। মাঠ পরিদর্শনে এলেন বিসিবি পরিচালক ও গ্রাউন্ডস কমিটির প্রধান মাহবুব আনাম। ঢাকা থেকে তার চট্টগ্রামে আসার মূল কারণ, এই মাঠের নতুন দুটি উইকেট পরিদর্শন।

ক্রীড়া প্রতিবেদকচট্টগ্রাম থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2022, 12:41 PM
Updated : 21 Feb 2022, 12:47 PM

নতুন উইকেটের সম্ভাব্য আচরণ নিয়ে কৌতূহল থাকছে। তবে আরও বেশি আছে, পুরনো উইকেট নিয়ে প্রশ্ন। দেশের উইকেটগুলো, বিশেষ করে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটের আচরণ ও মান নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। এবার বিপিএলে অবশ্য গত কয়েক বছরের তুলনায় বেশ ভালো ছিল মিরপুরের উইকেট। তবে একটি-দুটি টুর্নামেন্ট নয়, দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণেই প্রশ্নবিদ্ধ মিরপুরের উইকেট।

মাঠ পর্যায়ে কিউরেটর ও মাঠকর্মীরা উইকেট তৈরি করেন। তবে গ্রাউন্ডস কমিটির প্রধান হিসেবে সেই দায় তো অনেকটা মাহবুব আনামেরও। যদিও তিনি দায়ের কিছু দেখছেন না, কারণ উইকেটের সমস্যাই যে নেই তার চোখে!

বিসিবির অনেক পরিচালক সংবাদমাধ্যমে বেশ সরব হলেও মাহবুব আনামকে পাওয়া যায় কালেভদ্রে। চট্টগ্রামে সোমবার তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন।

বুধবার থেকে এখানেই বাংলাদেশ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। সিরিজের উইকেটের আচরণ কেমন হতে পারে, এই প্রশ্নে মাহবুব আনাম বললেন, উইকেট সম্পর্কে তার ধারণা তেমন নেই।

“আসলে উইকেট দেখে কিছু বুঝিনি, কারণ আমার ওই যোগ্যতা নেই। আমি যেটা করতে এসেছি যে, আমরা এখানে কিছু ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক করছি। সেই ডেভেলপমেন্ট কেমন চলছে, আমরা সেন্টার উইকেট দুটি নতুন বানিয়েছি। কারণ আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট যদি কিছু খেলা যায় এখানে, তাহলে আমাদের ক্রিকেটের উন্নয়ন হবে।”

“উইকেট তো কিউরেটররা বানাচ্ছেন এবং তারা খুব অভিজ্ঞ। এটা সব সময়ই স্পোর্টিং উইকেট এবং রেকর্ড বাংলাদেশেরও ভালো। আমরা ভালো ক্রিকেট আশা করব।”

‘উইকেট বোঝার যোগ্যতা নেই’, নিজে থেকে এটা বললেও উইকেট নিয়ে নানা সমালোচনার প্রশ্নে তিনি সরাসরি দায় দিলেন ক্রিকেটারদের।

“রান হচ্ছে না, সমস্যাটা ক্রিকেটাদেরই। যারা ভালো খেলে, তারা সব উইকেটেই ভালো খেলতে পারে। সুতরাং এটাকে অন্যভাবে দেখার কোনো সুযোগই নেই। ক্রিকেটের অনিশ্চয়তাই সবচেয়ে মজার এবং সেই অনিশ্চয়তা ক্রিকেটের উইকেট থেকেই আসে। এটা না থাকলে হয়তো ক্রিকেটের এই আনন্দটাই থাকত না। তাহলে স্পিনারও তৈরি হতো না, ফাস্ট বোলারও তৈরি হতো না।”

“প্রত্যেকের যে দক্ষতা আছে, যেখানে খেলা হচ্ছে, সেই অনুযায়ী দক্ষতার উন্নতি করতে হবে, তাদেরকে প্রয়োগ করতে হবে। সেই প্রয়োগের মাধ্যমে ক্রিকেটাররা তাদের কৃতিত্ব বজায় রাখতে পারবে।”

উইকেটের আচরণের ক্ষেত্রে আবহাওয়ার সংযোগও উল্লেখ করলেন সাবেক এই ক্রিকেটার ও বিসিবির দীর্ঘদিনের পরিচালক।

“শীত, গ্রীষ্মে আমাদের উইকেটের ব্যবহার বিভিন্ন থাকবেই, কারণ সেটা আবহাওয়ার সাথে সম্পৃক্ত থাকে। সেই আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে উইকেটের আচরণ। চট্টগ্রাম সব সময়ই আমাদের জন্য ভালো ভেন্যু। এখানে ফলও ভালো। তবে এটা নির্ভর করবে এই ২২ গজে যারা ভালো খেলবে, তারাই জয় পাবে।”

“সূর্য ভালো থাকলে উইকেট ভালো থাকবে, সূর্য ভালো না থাকলে উইকেটও ভালো থাকে না। সেটা বলা কঠিন, তবে এটা ফেয়ার উইকেট। বল আর ব্যাটের লড়াই ভালো হবে, এটাই আমরা আশা করব।”