বুমরাহর ৫ উইকেটের পর পুজারা-কোহলির দৃঢ়তা

দিনের দ্বিতীয় বলেই মিলল উইকেট! ছন্দ ধরে রেখে দারুণ বোলিং উপহার দিলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুইশর পরপরই থামিয়ে প্রথম ইনিংসে ভারতকে এনে দিলেন লিড। পরে ব্যাটিংয়ে দ্রুত দুই ওপেনারকে হারানোর ধাক্কা সামলে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন চেতেশ্বর পুজারা ও বিরাট কোহলি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2022, 05:23 PM
Updated : 12 Jan 2022, 05:45 PM

কেপ টাউনে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও পড়েছে ১১ উইকেট। ৪ উইকেটে ১৫৯ রানের ভালো অবস্থানে থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছে ২১০ রানে। দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের রান ২ উইকেটে ৫৭, প্রথম ইনিংসে ১৩ রানের লিডসহ সফরকারীরা এগিয়ে ৭০ রানে, হাতে ৮ উইকেট।

প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং মাস্টারক্লাস উপহার দিয়ে ৭৯ রান করা কোহলি খেলছেন ১৪ রানে। পুজারা অপরাজিত ৯ রানে।

স্বাগতিকদের হয়ে দারুণ এক ইনিংস খেলেন কিগান পিটারসেন। ১৬৬ বলে ৯টি চারে তিনি করেন সর্বোচ্চ ৭২ রান।

২৩.৩ ওভারে ৪২ রান দিয়ে বুমরাহর প্রাপ্তি ৫ উইকেট। ২৭ টেস্টের ক্যারিয়ারে সপ্তমবার তিনি পেলেন এই স্বাদ। হরভজন সিং ও শান্থাকুমারন শ্রীশান্তের পর তৃতীয় ভারতীয় বোলার হিসেবে কেপ টাউনে ইনিংসে পাঁচ বা এর বেশি উইকেট নিলেন ২৮ বছর বয়সী পেসার।

নিউল্যান্ডসে এদিনও উইকেট থেকে পেসাররা পেয়েছেন সহায়তা। মিলেছে মুভমেন্ট, বাড়তি বাউন্স। ১ উইকেটে ১৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকা দিনের দ্বিতীয় বলেই হারায় উইকেট, এইডেন মারক্রামকে বোল্ড করে দেন বুমরাহ। আগের দিন ‘নাইটওয়াচম্যান’ হিসেবে নামা কেশভ মহারাজও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ২৫ রানে তাকে বোল্ড করেন দলে ফেরা উমেশ যাদব।

৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা চাপে দক্ষিণ আফ্রিকা। রাসি ফন ডার ডাসেনকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন পিটারসেন। দলের স্কোর ছাড়ায় একশ। ৬৭ রানের রানের জুটি ভাঙেন উমেশ। অ্যাঙ্গেলে একটু দেরিতে সুইং করা বলে স্লিপে ধরা পড়েন ফন ডার ডাসেন (২১)।

পিটারসেন দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটি পূর্ণ করেন ১০১ বলে। টেম্বা বাভুমার সঙ্গে জুটিও জমে ওঠে তার। বাভুমা অবশ্য ১৭ রানে একবার জীবন পান স্লিপে পুজারা ক্যাচ নিতে না পারায়। স্বাগতিকদের স্কোর ছাড়ায় দেড়শ।

ম্যাচের চিত্র পাল্টে যায় মোহাম্মদ শামির এক ওভারে। তিন বলের মধ্যে তিনি তুলে নেন বাভুমা ও কাইল ভেরেইনার উইকেট।

স্লিপে কোহলির দারুণ ক্যাচে বাভুমা বিদায় নেন ২৮ রান করে। সঙ্গে ভারত অধিনায়ক স্পর্শ করেন টেস্টে ১০০ ক্যাচ নেওয়ার মাইলফলক। অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে কট বিহাইন্ড হন কিপার-ব্যাটসম্যান ভেরেইনা।  

চা বিরতির আগে মার্কো ইয়ানসেনকে বোল্ড করে দেন বুমরাহ। বিরতির পর নিজের পরের ওভারে তিনি তুলে নেন সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগানো পিটারসেনকে। বাড়তি বাউন্সে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

একটা পর্যায়ে ৪ উইকেটে ১৫৯ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর তখন ৮ উইকেটে ১৭৯! দুইশর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা।

সেখান থেকে তারা ২১০ পর্যন্ত যেতে পারে লোয়ার অর্ডারের সৌজন্যে। ২৫ বলে ১৫ রান করেন রাবাদা। লুঙ্গি এনগিডিকে ফিরিয়ে ইনিংস গুটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন বুমরাহ।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত শুরুতেই খায় জোড়া ধাক্কা। ছয় ওভারের মধ্যে বিদায় নেন দুই ওপেনার।

তৃতীয় ওভারে রাবাদার বলে মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। সে যাত্রায় রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেলেও রাবাদার পরের ওভারেই দারুণ এক ডেলিভারিতে প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন তিনি। ইয়ানসেনের ওভারে শরীর থেকে বাইরের বল তাড়া করে দ্বিতীয় স্লিপে মারক্রামের দারুণ ক্যাচে বিদায় নেন লোকেশ রাহুল।

২৪ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দিনের বাকিটা দৃঢ়তাপূর্ণ ব্যাটিংয়ে পার করে দেন পুজারা ও কোহলি। তৃতীয় উইকেটে ৩৩ রানের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন আছেন অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত ১ম ইনিংস: ২২৩

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১৭/১) ৭৬.৩ ওভারে ২১০ (মারক্রাম ৮, মহারাজ ২৫, পিটারসেন ৭২, ফন ডার ডাসেন ২১, বাভুমা ২৮, ভেরেইনা ০, ইয়ানসেন ৭, রাবাদা ১৫, অলিভিয়ের ১০*, এনগিডি ৩; বুমরাহ ২৩.৩-৮-৪২-৫, উমেশ ১৬-৩-৬৪-২, শামি ১৬-৪-৩৯-২, শার্দুল ১২-২-৩৭-১, অশ্বিন ৯-৩-১৫-০)

ভারত ২য় ইনিংস: ১৭ ওভারে ৫৭/২ (রাহুল ১০, মায়াঙ্ক ৭, পুজারা ৯*, কোহলি ১৪*; রাবাদা ৬-১-২৫-১, অলিভিয়ের ২-০-১৩-০, ইয়ানসেন ৫-৩-৭-১, এনগিডি ৩-৩-০-০, মহারাজ ১-১-০-০)।