ফরহাদ ঝলকের পর মিঠুনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি

১৬ রানে নেই ৪ উইকেট! ফরহাদ রেজার দারুণ বোলিংয়ে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল তখন কাঁপছে। খাদের কিনার থেকে দলকে টেনে তুললেন মোহাম্মদ মিঠুন। উপহার দিলেন সেঞ্চুরি। তার সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন দেড়শ রানের জুটি গড়ে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে দলকে লড়াইয়ে রেখেছেন শুভাগত হোম চৌধুরি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2022, 01:22 PM
Updated : 3 Jan 2022, 03:53 PM

বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ফাইনালে জাকির হাসানের ১০৭ রানের অপরাজিত ইনিংসের সুবাদে সোমবার ৩৮৭ রানে থামে দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ইনিংস। ১৫ চারে গড়া জাকিরের ইনিংসটি।

মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ উইকেটে ১৮৪ রান করে দ্বিতীয় দিন শেষ করে মধ্যাঞ্চল। এখনও তারা পিছিয়ে ২০৩ রানে।

শুরুতেই ব্যাটিং ধসে পড়া মধ্যাঞ্চলকে পথে ফেরান মিঠুন ও শুভাগত। এক ছক্কা ও ১৬ চারে ১০২ রান নিয়ে খেলছেন মিঠুন। বিসিএলের চলতি আসরেই ক্যারিয়ারে প্রথম ওপেনিংয়ে নামেন তিনি, এর মধ্যেই করে ফেললেন দুটি শতক; উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে করেছিলেন ১৭৪ রান। তার সঙ্গে ১৬৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৬৭ রান নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন শুভাগত।

৫ উইকেটে ২৬১ রান নিয়ে দিন শুরু করে দক্ষিণাঞ্চল। প্রতিপক্ষের চারটি উইকেটই নেওয়া ফরহাদ ব্যাট হাতেও রাখেন অবদান। দিনের প্রথম ওভারেই মুকিদুল ইসলামকে চার মেরে ৪৯ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন ৪৬ রান নিয়ে খেলতে নামা ফরহাদ।

আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে রান বাড়াতে থাকা ফরহাদ টানা তিন চার মারেন আবু হায়দার রনিকে। পরের ওভারে এসে তাকে থামান আবু হায়দারই। শেষ হয় ৩ ছক্কা ও ৯ চারে তার ৭১ রানের ইনিংস।

দেখেশুনে খেলতে থাকা জাকির ফিফটি তুলে নেন ৭৪ বলে। সেঞ্চুরিতে চোখ রেখে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি রিশাদ হোসেন। তাকে এলবিডব্লিউ করে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন হাসান মুরাদ।

বল হাতে দুর্দান্ত সময় কাটছে মুরাদের। গত মার্চে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া বাঁহাতি এই স্পিনার এই নিয়ে পঞ্চমবার নিলেন ইনিংসে পাঁচ উইকেট। এখন পর্যন্ত ১২ ম্যাচে তার ঝুলিতে যোগ হলো ৬৩ উইকেট।  

মুরাদকে চার মেরে ১৫১ বলে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের একাদশ সেঞ্চুরিতে পা রাখেন জাকির। চলতি মৌসুমে এই সংস্করণে পাঁচ ম্যাচের মধ্যে এটি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের চতুর্থ শতক। বিসিএলেই করলেন তিনটি।

জাকির এক প্রান্ত আগলে রাখলেও শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরা পারেননি তাকে সঙ্গ দিতে। এক ওভারে দুই উইকেট তুলে নিয়ে চারশর আগে দক্ষিণাঞ্চলের ইনিংস গুটিয়ে দেন শুভাগত।

ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ফরহাদের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে যান আব্দুল মজিদ। এরপর মিডিয়াম পেসে সৌম্য সরকারকে এলবিডব্লিউ করেন ফরহাদ। ইনিংসের অষ্টম ওভারে তিনি ধরেন জোড়া শিকার। সালমান হোসেনকে ফেরানোর পর এলবিডব্লিউ করেন তাইবুর রহমানকে।

দলের হাল ধরেন মিঠুন ও শুভাগত। শুরুতে কিছুটা সাবধানী থাকলেও সময়ের সঙ্গে রান বাড়াতে থাকেন মিঠুন। শুভাগত খেলে যান দেখেশুনে।

দারুণ ব্যাটিংয়ে মিঠুন ফিফটি তুলে নেন ৬৯ বলে। শুভাগতর পঞ্চাশ আসে ১০৬ বলে। তাদের দুইজনের জুটির রান একশ স্পর্শ করে ১৮৪ বলে।

শেষ বেলায় এসে ১৪৭ বলে সেঞ্চুরিতে পা রাখেন মিঠুন। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে যা তার চতুর্দশ।

মিঠুন ও শুভাগত কাটিয়ে দেন দিনের প্রায় দুই সেশন। এখন পর্যন্ত ৪৫ ওভার ব্যাটিং করা এই দুইজনের দিকেই তৃতীয় দিনে তাকিয়ে থাকবে মধ্যাঞ্চল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৬১/৫) ১১১.৩ ওভারে ৩৮৭ (জাকির ১০৭*, ফরহাদ ৭১, রিশাদ ১৬, নাসুম ১৭, মেহেদি রানা ০, কামরুল ০; রবিউল ১৪-৪-২৪-০, আবু হায়দার ২৩-৫-৭৬-২, মুকিদুল ১৬-০-৭২-০, সৌম্য ১০-০-৩৪-০, সালমান ১-০-৩-০, মুরাদ ২৯-৪-১০১-৫, শুভাগত ১৬.৩-২-৫১-৩, মিঠুন ২-০-১৬-০)

মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৫৩ ওভারে ১৮৪/৪ (মিঠুন ১০২*, মজিদ ০, সৌম্য ৩, সালমান ১, তাইবুর ৪, শুভাগত ৬৭*; নাসুম ১১-২-৪৭-০, ফরহাদ ১২-৩-৩১-৪, মেহেদি ৯-২-৩৫-০, মেহেদি রানা ১১-২-২১-০, কামরুল ৭-০-৩৩-০, রিশাদ ৩-০-১৫-০)