নিউ জিল্যান্ডে এসে কত বড় দলই তো ভোগান্তিতে পড়ে। সেখানে এখন পর্যন্ত দারুণ করছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে নিয়েছে স্বাগতিকদের শেষ ৫ উইকেট। পরে দুই সেশনের একটু বেশি সময় ব্যাটিং করে হারিয়েছে কেবল ২ উইকেট।
নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের ফল ভীষণ বাজে। হেরেছে টানা ৩২ ম্যাচে। তবে গত কয়েক সফরে মাঝে মধ্যে দিয়েছে লড়াইয়ের আভাস। ব্যক্তিগত কিছু প্রাপ্তিও আছে এখানে। এবার দলগত পারফরম্যান্স শক্ত অবস্থানে এসেছে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে।
বে ওভালে রোববার দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ১৭৫। এখনও অবশ্য পিছিয়ে ১৫৩ রানে।
দেশের বাইরে টেস্টে বাংলাদেশের সেরা দিনের একটির শুরু বোলারদের হাত ধরে। ৫ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা নিউ জিল্যান্ডকে থামিয়ে দেয় কেবল ৩২৮ রান। স্রেফ ৭০ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে দেশের মাটিতে এটাই নিউ জিল্যান্ডের সর্বনিম্ন। প্রথমবার অলআউট হলো সাড়ে তিনশর নিচে। এবারই প্রথম দেশের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো টেস্টে ইনিংসে অলআউট হলো তারা। আগের দুইবারই ইনিংস ঘোষণা করেছিল।
অনকেবার মূল ব্যাটসম্যানদের দ্রুত আউট করার পর বাংলাদেশ ভুগেছে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানের প্রতিরোধে। এবার তেমন কিছু হতে দেননি মিরাজ। চমৎকার বোলিংয়ে নিউ জিল্যান্ড ইনিংসের লেজ ছেটে দেন দ্রুত। ৮৬ রানে ৩ উইকেট নেওয়া এই অফ স্পিনার দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মলেন জানান, সবার মিলিত অবদানেই এটা সম্ভব হয়েছে।
“আমরা যখন প্রথমে শুরু করেছিলাম, আমাদের (শেষ) ৫ উইকেট নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আজ যা হয়েছে, এটা আমাদের স্পিনারদের জন্য ভালো। পেস বোলাররাও রান দেয়নি।”
“আমাদের বোলাররা কাল ও আজ ভালো করেছে। ব্যাটসম্যানরাও খুব ভালো করছে।”
উইকেটে স্পিনারদের জন্য খুব বেশি কিছু নেই। বাংলাদেশ খেলছে তিন পেসার নিয়ে। ভারতে আগের টেস্টে ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়া স্পিনার এজাজ প্যাটেলকে দেশের মাটিতে টেস্ট দলেই রাখেনি নিউ জিল্যান্ড। এমন পরিস্থিতিতেও দারুণ বোলিংয়ে মিরাজ বেঁধে রাখেন ব্যাটসম্যানদের, নেন উইকেট। কী ছিল তার পরিকল্পনা?
“এই কন্ডিশনে স্পিন বল করা কঠিন ছিল। আমি পুরোটা সময় ধৈর্য রাখতে চেয়েছি। ঠিক জায়গায় বল ফেলেছি। তিন রানের নিচে রাখতে চেয়েছি। এটাই হচ্ছে বিষয়।”
গত কিছু দিনে বাংলাদেশের ভোগান্তির পেছনে বড় দায় টপ অর্ডারের ব্যাটিংয়ের। এবার ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার আভাস দিয়েছেন তারা। সাদমানের সঙ্গে দায়িত্বশীল জুটিতে ভালো শুরু এনে দেওয়ার পর নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে শতরানের জুটি গড়েছেন মাহমুদুল হাসান।
এই তিনজনের ব্যাটে ২০১৪ সাল থেকে নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে কেবল দ্বিতীয় সফরকারী দল হিসেবে ১ উইকেট হারিয়ে পঞ্চাশের বেশি ওভার খেলতে পারল বাংলাদেশ। দুই দিন মিলিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি পেসার শরিফুলের সঙ্গে তাদের অবদানকেও বড় করে দেখছেন মিরাজ।
“(আমাদের) দ্বিতীয় উইকেট জুটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বোলারদের মধ্যে শরিফুল ‘টোন সেট’ করে দিয়েছে। ৩ উইকেট নিয়েছে, ওর উইকেটগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল। জয় আর শান্তর জুটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
“জয়-শান্ত যে জুটি করেছে আমাদের দলের জন্য তা খুব ভালো হয়েছে। দেখুন, বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের উপর থেকে কোনো জুটি হচ্ছিল না। এই জুটিটা আমাদের আত্মবিশ্বাস দেবে। এখনো আমাদের অনেক কিছু বাকি আছে। আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে খেলতে হবে।”