ইংলিশদের ফলো-অন না করিয়ে ফের ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া

দারুণ ব্যাটিংয়ে শক্ত ভিত গড়ে দিলেন দাভিদ মালান ও জো রুট। কিন্তু পরের ব্যাটসম্যানরা পারলেন না দলকে এগিয়ে নিতে। আড়াইশর আগে গুটিয়ে যাওয়া ইংল্যান্ডকে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সুযোগ থাকলেও তা না করে নিজেরাই ব্যাটিংয়ে নেমেছে অস্ট্রেলিয়া।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2021, 01:08 PM
Updated : 18 Dec 2021, 01:40 PM

অ্যাশেজ সিরিজের অ্যাডিলেইড টেস্টে শনিবার ইংলিশদের প্রথম ইনিংসে ২৩৬ রানে থামিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া। ২৩৭ রানে লিড পাওয়া দলটি দ্বিতীয় ইনিংসে ডেভিড ওয়ার্নারকে হারিয়ে ৪৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে। তারা এখন এগিয়ে আছে ২৮২ রানে।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে ইংল্যান্ডকে ১৩৮ রান এনে দেন মালান ও রুট। মালান থামেন ৮০ রানে, আর ইংলিশ অধিনায়ক করেন ৬২। চলতি বছর টেস্টে এ নিয়ে এক হাজার ৬০৬ রান করলেন রুট। এক পঞ্জিকাবর্ষে এই সংস্করণে সবচেয়ে বেশি রান করার তালিকায় তার ওপর আছেন কেবল মোহাম্মদ ইউসুফ, ভিভ রিচার্ডস ও গ্রায়েম স্মিথ।

দিবা-রাত্রির টেস্টে বল হাতে দারুণ পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন মিচেল স্টার্ক। গোলাপি বলের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এবার ৪ উইকেট নিয়ে ইংলিশদের অল্পতে থামিয়ে দেওয়ার পথে রাখেন বড় অবদান। তিন উইকেট ন্যাথান লায়নের।

২ উইকেটে ১৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা ইংল্যান্ড আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মালান ও রুটের ব্যাটে এগিয়ে যেতে থাকে। দারুণ ব্যাটিংয়ে দুইজন পার করে দেন প্রথম সেশন।

মাঝে কয়েকবার অল্পের জন্য বেঁচে যান মালান। তবে রুট ছিলেন সাবলীল। মালানের পঞ্চাশ আসে ৮৬ বলে, আর রুটের ৯১ বলে। ১৪০ রান নিয়ে সেশন শেষ করে ইংল্যান্ড। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েছিলেন তারা।

বিরতির পর বেশিক্ষণ টেকেননি রুট। ক্যামেরন গ্রিনের লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে স্লিপে ধরা পড়েন তিনি ৭ চারে ৬২ রান করে। ভাঙে ১৩৮ রানের জুটি; গোলাপি বলের টেস্টে অ্যাডিলেইডে সফরকারী কোনো দলের যেকোনো জুটিতে যা সর্বোচ্চ।

মালান সেঞ্চুরির দিকে এগোতে থাকেন। অপরপ্রান্তে বেন স্টোকসকে কোণঠাসা করে রাখেন অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা। মুখোমুখি হওয়া ২৪তম বলে প্রথম রানের দেখা পান এই অলরাউন্ডার।

মালানের প্রতিরোধ ভাঙেন স্টার্ক। তার অফ স্টাম্পের বাইরের বল কাট শট খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন মালান ১০ চারে ৮০ রান করে।

টিকে থাকার চেষ্টায় ব্যর্থ হন অলি পোপ ও জস বাটলার। লায়নের বলে শর্ট লেগে ক্যাচের আবেদনে আম্পায়ার আঙুল তুলে দেন, রিভিউ নিয়ে সে যাত্রায় বেঁচে যান পোপ। কিন্তু এক বল পরই উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় শর্ট লেগে ধরা পড়েন তিনি।

স্টার্কের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল তাড়া করে প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন বাটলার। ১৫ বল খেলেও ইংলিশ কিপার-ব্যাটসম্যান খুলতে পারেননি রানের খাতা। ১৫ বা এর বেশি বল মোকাবেলা করে এনিয়ে চারবার শূন্যতে আউট হলেন তিনি। ১৯৯১ সাল থেকে টেস্টে এত বল খেলার পর এত বেশিবার ‘ডাক’ নেই আর কারো।

১৯ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ইংল্যান্ডকে বেশিক্ষণ টানতে পারেননি স্টোকস ও শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরা। গ্রিনের শর্ট বল স্টাম্পে টেনে আনেন স্টোকস; ৩ চার ও এক ছক্কায় ৩৪ রান করে। ৮৬ রানের মধ্যে শেষ ৮ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।

দিনের শেষ বেলায় ব্যাটিংয়ে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ওয়ার্নার। ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান প্রথম ইনিংসে ৯৫ রান করা এই ব্যাটসম্যান।

মাইকেল নিসারকে নিয়ে বাকি সময় কাটিয়ে দেন হ্যারিস। বড় সংগ্রহ দাঁড় করানোর লক্ষ্যে চতুর্থ দিনে তাকিয়ে অস্ট্রেলিয়া।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৪৭৩/৯ ডিক্লেয়ার

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১৭/২) ৮৪.১ ওভারে ২৩৬ (মালান ৮০, রুট ৬২, স্টোকস ৩৪, পোপ ৫, বাটলার ০, ওকস ২৪, রবিনসন ০, ব্রড ৯, অ্যান্ডারসন ৫*; স্টার্ক ১৬.১-৬-৩৭-৪, রিচার্ডসন ১৯-৪-৭৮-০, নিসার ১১-০-৩৩-১, লায়ন ২৮-১১-৫৮-৩, গ্রিন ১০-৩-২৪-২)

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ১৭ ওভারে ৪৫/১ (ওয়ার্নার ১৩, হ্যারিস ২১*, নিসার ২*; অ্যান্ডারসন ৪-৩-২-০, ব্রড ৩-০-৯-০, রবিনসন ৪-১-১২-০, ওকস ৪-২-১৩-০, রুট ১-০-১-০)