মার্শালের লড়িয়ে সেঞ্চুরির পরও উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় ইনিংস থমকে যায় ২৭৪ রানে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২২তম শতকের দেখা পাওয়া স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান ১৪ চারে ২৪৬ বলে করেন ১০১ রান।
তাতে দলের হার আটকাতে পারেননি তিনি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচটি মধ্যাঞ্চল জিতে নেয় ইনিংস ও ৭০ রানে।
জয়ে বড় ভূমিকা রাখা হাসান ৪৫ ওভারে ৭৪ রান দিয়ে নেন ৬ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক ইনিংসে তার আগের সেরা ছিল ২৬ রানে ৫ উইকেট। গতবছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের এই স্পিনার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৯ ম্যাচেই উইকেট নিয়ে ফেললেন ৪৯টি।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে বুধবার ৫ উইকেটে ১৭২ রান নিয়ে খেলা শুরু করে উত্তরাঞ্চল। ম্যাচে বাঁচাতে কাটিয়ে দিতে হতো পুরো দিন। মধ্যাঞ্চলকে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে করতে হতো আরও ১৭২ রান।
শেষ দিনে কোনোটিই করতে পারেনি উত্তরাঞ্চল। তবে শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। আগের দিন শেষ বেলায় ক্রিজে আসা মাহিদুল দেখান দারুণ দৃঢ়তা। ম্যাচ বাঁচানোর চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা নিয়ে কাটিয়ে দিতে থাকেন একের পর এক বল।
রান তোলায় কোনো আগ্রহ ছিল না মাহিদুলের। স্রেফ উইকেটে কাটাতে থাকেন সময়। সহজাত ব্যাটিংয়ে তাকে সঙ্গ দেন মার্শাল। ২৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান ফিফটিতে যান ১০২ বলে।
১৮৩ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে এগিয়ে যেতে থাকে মার্শাল ও মাহিদুলের জুটি। প্রথম সেশন কাটিয়ে দিয়ে, দ্বিতীয় সেশেনের প্রথম ঘণ্টা পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন থাকেন তারা। ম্যাচ বাঁচানোর আশা তখন যথেষ্টই উজ্জ্বল তাদের।
পানি পানের বিরতির পর মুরাদের টার্ন ও বাড়তি লাফানো দারুণ এক ডেলিভারিতে সিলি পয়েন্টে ক্যাচ দেন মাহিদুল। ভেঙে যায় ৩৫৩ বলে গড়া ৯০ রানের আসাধারণ জুটি।
১৬৩ বলে ২৫ রান করেন মাহিদুল। উইকেটে পড়ে থাকার এমন লড়াকু মানসিকতা বাংলাদেশের প্রথম বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে বেশ বিরল।
রবিউল ইসলামের শর্ট বলে সালমানকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় মার্শালের লড়াই। আরিফুল হককে এলবিডব্লিউ করে ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন মুরাদ। পরে ২০ বছর বয়সী বাঁহাতি এই স্পিনার বিদায় করেন শফিকুল ইসলামকে।
আরেকটি শর্ট বলে আমিনুল ইসলামকে শূন্য রানে বিদায় করে উত্তরাঞ্চলকে গুটিয়ে দেন রবিউল। প্রথম ইনিংসে ৩৭ রানে ৩ উইকেট নেওয়া এই পেসার এবার ৩ উইকেট নেন ২৩ রানে।
বিসিএলে প্রথম তিনশ রানের উদ্বোধনী জুটি উপহার দেওয়া মোহাম্মদ মিঠুন ও মিজানুর রহমান তাদের সেঞ্চুরির জন্য যৌথভাবে জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস: ২১৯
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৫৬৩/৩ (ডিক্লেয়ার)
উত্তরাঞ্চল ২য় ইনিংস: (আগের দিন ১৭২/৫) ১২১.২ ওভারে ২৭৪ (মার্শাল ১০১, মাহিদুল ২৫, আরিফুল ৩, আমিনুল ০, শফিকুল ০, নোমান ০*; রবিউল ১৭.২-৮-২২-৩, মৃত্যুঞ্জয় ১৫-৪-৩৫-১, শুভাগত ২৪-৪-৭৩-০, মুকিদুল ১৪-২-৪২-০, সৌম্য ৫-০-১৮-০, মুরাদ ৪৫-১৯-৭৪-৬)
ফল: ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল ইনিংস ও ৭০ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ মিঠুন ও মিজানুর রহমান