আসছে অ্যাশেজ সিরিজে পেইনকে পাচ্ছে না অস্ট্রেলিয়া। সম্ভাবনা জেগেছে, দেশের হয়ে হয়তো শেষ টেস্ট খেলে ফেলেছেন ৩৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
২০১৭ সালে এক নারী সহকর্মীকে পেইনের অশ্লীল বার্তা ও ছবি পাঠানোর ঘটনা সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সংবাদমাধ্যমে এই বিতর্ক নাম পেয়ে গেছে ‘সেক্সটিং স্ক্যান্ডাল’। তারই জেরে গত ১৯ নভেম্বর নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন পেইন। ওই সিদ্ধান্তের এক সপ্তাহ পর এলো তার ক্রিকেট থেকে বিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা।
ঘরোয়া টুর্নামেন্ট মার্শ কাপে শুক্রবার তাসমানিয়ার হয়ে খেলার কথা ছিল পেইনের। এরপর কেবল ক্রিকেটার হিসেবে ব্রিজবেনে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের সঙ্গে যোগ দিতেন তিনি। কিন্তু শুক্রবার সকালে হুট করে মার্শ কাপের ম্যাচটি থেকে সরে দাঁড়ান।
পেইনের ম্যানেজার জেমস হেন্ডারসন এদিনই টুইট করে নিশ্চিত করেন, এই ক্রিকেটারের অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার বিষয়টি।
“নিশ্চিত করে জানাচ্ছি, (টিম পেইন) মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে ক্রিকেট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সরে যাচ্ছেন। আমরা তার ও বনির (পেইনের স্ত্রী) ভালো থাকা নিয়ে চিন্তিত এবং এই সময়ে এ বিষয়ে আর কোন মন্তব্য করা হবে না।”
পেইনের এমন সিদ্ধান্তের কথা বিবৃতি দিয়ে নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট তাসমানিয়াও।
“গত ২৪ ঘন্টায় আলোচনার পর, টিম পেইন ক্রিকেট তাসমানিয়াকে জানান যে তিনি লম্বা সময়ের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিরতি নিচ্ছেন। ক্রিকেট তাসমানিয়া গ্রীষ্মজুড়ে টিম (পেইন) ও তার পরিবারকে পেশাদার ও ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করে যাবে।”
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী নিক হকলি বলেন, বোর্ডের পক্ষ থেকে পেইনকে সমর্থন করা হবে।
“আমরা জানি, টিম ও তার পরিবারের জন্য এখন অনেক কঠিন সময়। আমরা তাদের পাশে থাকব। নিজের ও পরিবারের কল্যানে মনোযোগ দিতে এই সময়ে বিরতি নেওয়ার টিমের সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান করি।”
অ্যাশেজ সিরিজের দলে থাকা পেইন গত সপ্তাহে নেতৃত্ব ছাড়ার সময় অবশ্য বলেছিলেন, খেলা চালিয়ে যেতে চান তিনি। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও জানিয়েছিল, চূড়ান্ত দলের জন্যও তাকে রাখা হবে বিবেচনায়। কিন্তু আপাতত সব কিছুর ইতি টেনে দিলেন পেইন নিজেই।
পেইনের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোয় কপাল খুলতে যাচ্ছে অ্যালেক্স কেয়ারি ও জশ ইংলিশের। এই দুই কিপার-ব্যাটসম্যানই আছেন টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতার কারণে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন ৩০ বছর বয়সী কেয়ারি।
পেইনের নেতৃত্ব ছাড়ার এক সপ্তাহ পর শুক্রবারই নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। সাম্প্রতিক গুঞ্জনকে সত্যি প্রমাণ করে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে প্যাট কামিন্সকে। ২০১৮ সালে বল টেম্পারিং কাণ্ডে নেতৃত্ব হারানো স্টিভেন স্মিথ এবার পেয়েছেন সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব।
অস্ট্রেলিয়ার সুদীর্ঘ ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো ফাস্ট বোলার পূর্ণকালীন অধিনায়ক হলেন এই প্রথম। এমনকি ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বেও কোনো ফাস্ট বোলারের অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টস করার সবশেষ ঘটনা ৬৫ বছর আগের। ১৯৫৬ সালের ভারত সফরে দ্বিতীয় টেস্টে মূল অধিনায়ক ইয়ান জনসন ও সহকারী কিথ মিলার চোটে পড়ায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রে লিন্ডওয়াল।