বিশ্বজয়ীর বেশে বিশ্বকাপে শামীম-শরিফুল

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সবে শুরু। এখনও একাদশে জায়গা নিশ্চিত নয়। এর মধ্যেই ডাক পেলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে। স্কোয়াডে তিনজন আছেন যারা এই টুর্নামেন্টের প্রতিটি আসরেই খেলেছেন। তবুও একটা জায়গায় সবার চেয়ে এগিয়ে শরিফুল ইসলাম ও শামীম হোসেন। এই দুই তরুণ যে খেলতে যাচ্ছেন বিশ্বজয়ীর বেশে।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2021, 03:09 PM
Updated : 9 Sept 2021, 04:45 PM

বিশ্ব মঞ্চে এখন পর্যন্ত একটাই শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। ২০২০ সালে রোমাঞ্চকর ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে যুব বিশ্বকাপের শিরোপা জেতে তারা। সেই দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শরিফুল ও শামীম খেলতে যাচ্ছেন এবার আসল বিশ্বকাপে। 

বাঁহাতি পেসার শরিফুলের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়ে গেছে তিন সংস্করণেই। একমাত্র টেস্টে নিয়েছেন একটি উইকেট। চার ওয়ানডেতে সাত ও ১০ টি-টোয়েন্টিতে ১৫ উইকেট নিয়ে দিয়েছেন সামর্থ্যের প্রমাণ।

শামীম এখন পর্যন্ত খেলেছেন এক সংস্করণেই। গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তরুণ এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের। হারারেতে প্রথম দুই ম্যাচে দেখান সামর্থ্যের ঝলক। দেশে ফিরে মন্থর ও অসমান বাউন্সের টার্নিং উইকেটে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গত মাসে তিন ইনিংস মিলিয়ে করেন কেবল ১০ রান।  

আপাতত দুই জনই ব্যাকআপ। মূল দুই পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সুযোগ পেয়ে শরিফুল দেখিয়েছেন প্রয়োজন হলে তিনি প্রস্তুত।

বিশ্বকাপে মিরপুরের চেয়ে আরেকটু ভালো উইকেটই মিলবে। সেখানে ফিনিশার হিসেবে কার্যকর হতে পারেন শামীম। ক্রিজে গিয়েই ঝড় তোলার সামর্থ্য আছে তার। একই সঙ্গে তার অফ স্পিন বেশ কার্যকর। যদিও জাতীয় দলে বল করতে পেরেছেন কেবল এক ওভার। ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত শামীম, মাঝে মধ্যেই বদলি ফিল্ডার হিসেবে মাঠে দেখা যায় তাকে। 

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি শামীমের। সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় হয়তো একটা সুযোগ পেতে পারেন। স্বাভাবিকভাবেই তার ভাবনা জুড়ে এখন বিশ্বকাপ।

হোক অনূর্ধ্ব-১৯ দল, তবুও তো বিশ্ব আসরে প্রতিনিধিত্ব করেছেন দলকে। বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায় বৃহস্পতিবার শামীম জানালেন, তার মনে পড়ছে দক্ষিণ আফ্রিকা আসরের কথা। যেখান থেকে তারা ফিরেছিলেন বিজয়ীর বেশে। সেই সময়ই মনের গভীরে ভাবনা ছিল, একদিন খেলবেন মূল দলেও।

“যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলছিলাম, জাতীয় দলের ব্যাপারটা তখন অতোটা মাথায় ছিল না। মনোযোগ তখন ছিল খেলাতেই। আর চিন্তা ছিল, যত তাড়াতাড়ি জাতীয় দলে যাওয়া যায়। এখন জাতীয় দলে আছি, এই জন্য আমি খুবই আনন্দিত।”

অপরাজিত থেকে শিরোপা জেতার পথে তিনটি নক আউট ম্যাচে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউ জিল্যান্ড ও ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। বড় ম্যাচে কি করে স্নায়ু চাপ ধরে রাখতে হয় ভালো মতোই জানা আছে শামীমের। বিশ্বজয়ী দলটির দুই সদস্য মূল বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়ায় রোমাঞ্চিত এই তরুণ। আশায় আছেন, একদিন সেই দলের অনেকের গায়েই দেখা যাবে এই জার্সি। 

“(বিশ্বকাপজয়ী) অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দুই জন সদস্য আছি, শরিফুল আর আমি। এটা অনেক আনন্দের একটা বিষয়। আশা করি, ভবিষ্যতে আমাদের সেই দলের আরও অনেকেই জাতীয় দলে আসবে।”

বিশ্বকাপ এখনও বেশ দূরে। তবে দেশগুলো দল ঘোষণা করছে। সেখানে চোখ রাখছেন শামীম। দেখছেন প্রতিপক্ষ হয়ে আসছেন কারা কারা। অনেক বড় নামই আছে সেখানে। তাদের বিপক্ষে নিজের সামর্থ্যের পরীক্ষা দিতে মুখিয়ে আছেন তিনি।

“বিশ্বকাপে অন্যান্য দলে বড় বড় খেলোয়াড় থাকবে, তাদের বিপক্ষে খেলব। তাদের সঙ্গে খেলাটা আমার জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ।”