সাদমান-শান্তর সেঞ্চুরির পর জিম্বাবুয়ের লক্ষ্য ৪৭৭

একজনের এটি ফেরার টেস্ট, আরেকজনের তৈরি হচ্ছিল বাদ পড়ার পথ। রান জরুরি ছিল তাই দুজনের জন্যই। দারুণ সেঞ্চুরিতে সেই দাবি মেটালেন সাদমান হোসেন ও নাজমুল হোসেন শান্ত। জিম্বাবুয়েকে তাই বড় লক্ষ্য দিতে পারল বাংলাদেশ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2021, 11:48 AM
Updated : 10 July 2021, 12:05 PM

হারারের টেস্টের চতুর্থ দিনে জিম্বাবুয়েকে চতুর্থ ইনিংসে ৪৭৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে ১৯২ রানের লিড পাওয়া বাংলাদেশ শনিবার দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছে ১ উইকেটে ২৮৪ রান নিয়ে।

তিন অঙ্কের জাদুকরি স্বাদ সাদমান পেয়েছেন প্রথমবার, শান্ত দ্বিতীয়বার।

দুজনের সেঞ্চুরির ধরন যদিও দুই রকম। তবে কার্যকর দুটি ইনিংসই। ৯ চারে ১৯৬ বলে ১১৫ করে অপরাজিত থেকে যান সাদমান। সময়ের দাবি মেটানো ব্যাটিংয়ে ৫ চার ও ৬ ছক্কায় শান্ত অপরাজিত ১১৮ বলে ১১৭ রান করে।

দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি রান ১৯৬, দ্বিতীয় উইকেটে যা দেশের বাইরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের একমাত্র আউট হওয়া ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান। ৪৩ রান করে তিনি আউট হন সকালের সেশনে।

সাদমান ব্যাটিং শুরু করেছিলেন তৃতীয় দিন বিকেলে। দিন শেষ করেন ২২ রান করে। চতুর্থ দিন সকাল থেকে এগিয়ে যান একই নির্ভরতায়। সাইফের সঙ্গে তার উদ্বোধনী জুটি থামে ৮৮ রানে।

তিনে নামা শান্ত যখন উইকেটে যান, সাদমান তখন ফিফটির কাছে। এরপর দুজনের জুটিতে দ্রুত বাড়তে থাকে বাংলাদেশের রান।

১০১ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন সাদমান। ওয়ানডের গতিতে এগিয়ে শান্তর ফিফটি ৬০ বলে।

সেঞ্চুরি পথে এগিয়ে যেতে নতুন জীবন পান দুজনই। ৫৫ রানে পয়েন্টে সাদমানের সহজ ক্যাচ ছাড়েন ডিওন মায়ার্স, ৭০ রানে স্লিপে শান্তকে জীবন দেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর।

জিম্বাবুয়ের কোনো বোলারই সেভাবে ভাবনায় ফেলতে পারেননি দুজনকে। দলে কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার নেই। দুই অনিয়মিত স্পিনার রয় কাইয়া ও মিল্টন শুম্বা ছিলেন একদমই নির্বিষ।

বিশেষ করে কাইয়ার অফ স্পিন পেয়ে বসেন শান্ত। তার ছয় ছক্কায় পাঁচটিই কাইয়ার বলে।

দুজনই সেঞ্চুরিতে পৌঁছান ডাবলস নিয়ে। সাদমানের লাগে ১৮০ বল, শান্তর মোটে ১০৯ বল।

গত ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে ফিফটির পর সাদমান চোটের কারণে খেলতে পারেননি ঢাকা টেস্টে। পরে চোট কাটিয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে গেলেও নিজের জায়গা ফিরে পাননি। তামিম ইকবালের সঙ্গে সেখানে দুই টেস্টেই ওপেন করেন সাইফ হাসান। এই টেস্টে আবার সুযোগ আসে তামিম চোটে পড়ায়। সেঞ্চুরিতে সাদমান নিশ্চিত করে দিলেন, আপাতত তাকে বাইরে রাখা যাবে না।

সাদমানের বাইরে থাকার ওই শ্রীলঙ্কা সফরেই প্রথম টেস্টে ১৬৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন শান্ত। টানা ব্যর্থতার পর ওই সেঞ্চুরি এসেছিল তার স্বস্তি হয়ে। কিন্তু এরপরই ব্যর্থতার ধারা। চার ইনিংসে রান ০, ০, ২৬, ২। এই সেঞ্চুরিতে তিনি আবার পোক্ত করতে পারলেন নড়বড়ে হয়ে যাওয়া জায়গাটা।

দুজনের সেঞ্চুরির খানিক পরই ইনিংস ঘোষণা করে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক।

ক্রিকেটীয় অনিশ্চয়তা মাথায় রেখেও ৪৭৭ রানের লক্ষ্য জিম্বাবুয়ের জন্য বলা যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। চতুথূ ইনিংসে কখনোই ৩৩১ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। জিততে পারেনি ১৬২ রানের বেশি তাড়া করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৬৮

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৭৬

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৪৫/০) ৬৭.৪ ওভারে ২৮৪/১ (ডি.)(সাদমান ১১৫*, সাইফ ৪৩, শান্ত ১১৭*; মুজারাবানি ১২-৪-২৭-০, এনগারাভা ৯-০-৩৬-১, টিরিপানো ১১-২-৩৩-০, নিয়াউচি ১০-১-৩৬-০, শুম্বা ১২.৪-০-৬৭-০, কাইয়া ১৩-২-৮৪-০)।