মুমিনুলের নান্দনিক ৭৮, ইয়াসিরের বিধ্বংসী ৫৬

একজনের ব্যাটে দারুণ টাইমিং, কবজির মোহনীয় মোচড় আর উদ্ভাবনী শটের সৌন্দর্য। আরেকজনের ব্যাটে পেশীর জোর, বুনো-খ্যাপাটে শটের প্রদর্শনী। মুমিনুল হক আর ইয়াসির আলি চৌধুরি, ভিন্ন ঘরানার দুজনের পথ মিলে গেল একই পথে। দুজনের দুর্দান্ত দুটি ইনিংস আর দারুণ জুটি গাজী গ্রুপকে পৌঁছে দিল এমন উচ্চতায়, যেটির নাগাল পেল না শেখ জামাল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2021, 04:39 PM
Updated : 26 June 2021, 04:39 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির এবারের আসরের শেষ ম্যাচে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবে ৩৫ রানে হারাল হাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার গাজী গ্রুপ ২০ ওভারে তোলে ৪ উইকেটে ১৮৪।

১১ চারে ৫৩ বলে ৭৮ রানে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল, চারটি করে চার-ছক্কায় ২৪ বলে অপরাজিত ৫৬ ইয়াসির। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৫৭ বলে ১১৫!

রান তাড়ায় শেখ জামাল অলআউট হয় ১৪৯ রানে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা গাজী গ্রুপের শুরু ও শেষটা হয় ভালো। মাঝের সময়টায় ছিল অস্বস্তি।

সৌম্য সরকার ও মেহেদি হাসানের উদ্বোধনী জুটিতে প্রথম ৪ ওভারে আসে ৩৫ রান। সেখানে অবশ্য মূল কৃতিত্ব মেহেদিরই।

পঞ্চম ওভারে জিয়াউর রহমানের বলে দুজনেই ধরা পড়েন মিড অনে। ১০ বলে ৯ করে ফেরেন সৌম্য, ১৭ বলে ২৭ মেহেদি।

মুমিনুল উইকেটে গিয়ে সাবলীল ব্যাটিংয়ে বাড়াতে থাকেন রান। তবে অন্য প্রান্তে উইকেটের পতন থামেনি। অফ স্পিনার এনামুলকে ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন শাহাদাত হোসেন (১৩ বলে ১১)। লেগ স্পিনার মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদির শর্ট বলে বাজেভাবে বোল্ড হন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ (৩ বলে ১)।

১২ ওভার শেষে গাজী গ্রুপের রান ছিল ৪ উইকেটে ৭৮।

আফ্রিদিকে ছক্কা মেরে ইনিংসের গতিপথ বদলে দেওয়ার শুরু করেন ইয়াসির। মুমিনুলের রান তখন ২৮ বলে ২৮। যোগ্য সঙ্গী পেয়ে তিনিও নতুন গতিতে ছুটতে থাকেন। প্রতি ওভারেই আসতে থাকে চার-ছক্কা।

মুমিনুল ফিফটি স্পর্শ করেন ৪১ বলে। এরপর বাড়ান রানের গতি। ইয়াসির গায়ের জোরে বল পাঠাতে থাকেন বাউন্ডারিতে। শেষ ৪ ওভারেই দুজন যোগ করেন ৬১ রান।

শেখ জামাল রান তাড়ায় সেভাবেই চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি। ওপেনার সৈকত আলি আউট হন প্রথম ওভারেই। আগের ম্যাচের নায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল এবার ফেরেন ১১ বলে ১৫ করে। লিগে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানও তেমন কিছু করতে পারেননি।

ইমরুল কায়েস কিছুটা আশা জাগিয়ে পরে আউট হয়ে যান তিন ছক্কায় ৩৩ বলে ৪৫ করে।

সৌম্য সরকারের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা দিয়েও বেঁচে যান তানবীর হায়দার। আম্পায়ার যে আউটই দেননি! তার ইনিংস শেষ হয় ২৩ বলে ২৯ করে। পরে জিয়ার ১১ বলে ২১ রানে একটু কমে ব্যবধান।

এই ম্যাচের ফলে পয়েন্ট টেবিলেও বদলে গেল দুই দলের অবস্থান। সমান পয়েন্ট ও জয় নিয়ে রান রেটে চারে থেকে লিগ শেষ করল গাজী গ্রুপ, পাঁচে শেখ জামাল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

গাজী গ্রুপ: ২০ ওভারে ১৮৪/৪ (মেহেদি ২৭, সৌম্য ৯, শাহাদাত ১১, মুমিনুল ৭৮*, মাহমুদউল্লাহ ১, ইয়াসির ৫৬*; নাসির ৪-০-২২-০, এনামুল ৪-০-৩৬-১, ইবাদত ৪-০-৪৬-০, জিয়াউর ৪-০-৪০-২, সোহরাওয়ার্দী ১-০-১১-০, আফ্রিদি ৩-০-২৭-১)।

শেখ জামাল: ১৮ ওভারে ১৪৯ (সৈকত ১, আশরাফুল ১৫, ইমরুল ৪৫, নাসির ১৩, সোহান ৭, তানবীর ২৯, জিয়াউর ২১, এনামুল ০, সোহরাওয়ার্দী ৮, ইবাদত ০, আফ্রিাদ ১*; নাসুম ৩-০-২৮-১, মেহেদি ৩-০-১৫-২, তারেক ২-০-২২-৩, সৌম্য ৩-০-২১-১, সঞ্জিত ৩-০-৩০-২, আরিফুল ৪-০-৩২-১)।

ফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৩৫ রানে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: মুমিনুল হক।