ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে ৬০ রানে জিতেছে আবাহনী। মুনিম শাহরিয়ারের ঝড়ো ইনিংস আর মুশফিকের অপরাজিত ফিফটিতে ৭ উইকেটে দলটি করে ১৯৩ রান। চলতি আসরে এটাই সর্বোচ্চ ইনিংস। আগের সর্বোচ্চ ছিল আবাহনীরই-১৮৩। করেছিল শাইনপুকুর ও প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে।
বড় রান তাড়ায় এক পর্যায়ে ৪২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে মোহামেডান। তাদের ব্যাটিং লাইনআপের প্রথম সাত জনের চার জন খুলতে পারেননি রানের খাতা। সেখান থেকে আবু হায়দারের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ৭ উইকেটে ১৩৩ করে দলটি।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে আবাহনী। আবু হায়দারের করা ম্যাচের প্রথম ওভারে ছন্দে থাকা মুনিম মারেন তিন চার।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবশেষ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ডান হাতের কব্জিতে চোট পাওয়ার পর এই ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরলেন লিটন দাস। ফেরার ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। রুয়েল মিয়ার বলে ফিরে যান এলবিডব্লিউ হয়ে।
আরেক প্রান্তে মুনিমের ব্যাটে প্রতি ওভারেই আসতে থাকে বাউন্ডারি। নাজমুল হোসেন শান্ত নেমেও চড়াও হন বোলারদের ওপর। বাঁহাতি স্পিনার আসিফ হাসানকে ওড়ান ছক্কায়, সেই ওভারে ছক্কা মারেন মুনিমও।
শুভাগত হোম চৌধুরিকে দুই ছক্কা মারা শান্ত যেতে পারেননি বেশিদূর। আবু জায়েদের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়ায় ফিরে যান কট বিহাইন্ড হয়ে। তিন ছক্কায় ১৭ বলে করেন ২৭ রান।
এরপর বেশিক্ষণ টিকেননি মুনিম। বাঁহাতি পেসার রুয়েলের বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন তিনি। তার ২৭ বলে খেলা ৪৩ রানের ইনিংসে পাঁচ চারের পাশে ছক্কা দুটি।
এক ছক্কায় ১০ রান করেন আফিফ। তিন চারে ১৪ রানে থামেন মোসাদ্দেক। তবে এক প্রান্তে মুশফিক ছিলেন অবিচল। তার দৃঢ়তায় দুইশ রানের কাছাকাছি সংগ্রহ গড়ে আবাহনী। অধিনায়ক অপরাজিত থাকেন ৫৭ রানে। তার ৩২ বলের ইনিংস গড়া আট চার ও এক ছক্কায়।
দারুণ বোলিংয়ে ১৯ রানে ৩ উইকেট নেন রুয়েল। খরুচে বোলিংয়ে আসিফ ৪৭ রানে নেন ৩ উইকেট।
বড় রান তাড়ায় শূন্য রানে অভিষেক মিত্রকে হারায় মোহামেডান। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনকে পুল করে সীমানায় লিটনের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এক বল পর কট বিহাইন্ড হয়ে বিদায় নেন শামসুর রহমান।
শূন্য রানে ২ উইকেট হারানো মোহামেডানের অবস্থা হতে পারতো আরও খারাপ। সাইফের পরের ওভারে শূন্য ও ১ রানে জীবন পান ইরফান শুক্কুর। অতি আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টায় এরপরও তিনি বড় করতে পারেননি ইনিংস।
মোসাদ্দেকের শরীরের খুব কাছের বল কাট করার চেষ্টায় হন বোল্ড। ১৮ বলে খেলা তার ২৭ রানের ইনিংস গড়া চারটি চার ও এক ছক্কায়। এক বল পরে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন নাদিফ চৌধুরী।
সপ্তম ওভারে ঝুঁকিপূর্ণ রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হন আব্দুল মজিদ। মোহামেডানের চতুরথ ব্যাটসম্যান হিসেবে শূন্য রানে ফিরেন শুভাগত।
৪২ রানে ৬ উইকেট হারানো দলটি এরপর ব্যবধান কমায় মাহমুদুল হাসান ও আবু হায়দারের ব্যাটে। দুই জনে সপ্তম উইকেটে গড়েন ৭৮ রানের জুটি। ৩৬ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় মাহমুদুল করেন ৩৭।
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে আবু হায়দার অপরাজিত থাকেন ৫৩ রানে। তার ৪২ বলের ইনিংস সাজানো ৫ চার ও ২ ছক্কায়। টি-টোয়েন্টিতে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের আগের সেরা ছিল অপরাজিত ২৮।
১২ ম্যাচে নবম জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে আবাহনী। রান রেটে তাদের চেয়ে পিছিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে প্রাইম ব্যাংক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আবাহনী: ২০ ওভারে ১৯৩/৭ (মুনিম ৪৩, লিটন ৪, শান্ত ২৭ মুশফিক ৫৭*, নাঈম ২৪, আফিফ ১০, মোসাদ্দেক ১৪, সাইফ ০, তানজিব ৪*; আবু হায়দার ৪-০-৫০-০, রুয়েল ৪-০-১৯-৩, আসিফ ৪-০-৪৭-৩, শুভাগত ২-০-২৩-০, আবু জায়েদ ৪-০-৩৮-১, মাহমুদুল ২-০-১৩-০)
মোহামেডান: ২০ ওভারে ১৩৩/৭ (অভিষেক ০, মজিদ ১০, শামসুর ০, শুক্কুর ২৭, নাদিফ ০, মাহমুদুল ৩৭, শুভাগত ০, আবু হায়দার ৫৩*, আসিফ ১*; সাইফ ৪-১-৩৪-২, তানজিম ৪-০-৩০-১, মেহেদি রানা ৪-০-২৯-০, মোসাদ্দেক ৩-০-১৪-২, সানি ৪-০-১৮-১, আফিফ ১-০-৭-০)
ফল: আবাহনী ৬০ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম