গাজীর জয়, মোহামেডান ম্যাচ পরিত্যক্ত

বিকেএসপিতে পাশাপাশি দুটি মাঠ। একই সময়ে শুরু হওয়া দুই ম্যাচের একটিতে ফল হলো, অন্যটি পরিত্যক্ত। বোলিং-ব্যাটিংয়ে নিজেদের মেলে ধরে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে  হারাল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে পরিত্যক্ত হলো মোহামেডানের ম্যাচ। 

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2021, 01:13 PM
Updated : 15 June 2021, 08:54 AM

পারটেক্সকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার চার নম্বরে উঠে এলো গাজী। তাদের পয়েন্ট ১২। এই হারে নিশ্চিত হয়ে গেল পারটেক্সের রেলিগেশন লিগে খেলা। ১১ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আছে মোহামেডান। এক পয়েন্ট কম নিয়ে ছয়ে ব্রাদার্স।  

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স-পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে সোমবার ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ৯ উইকেটে জিতেছে মাহমুদউল্লাহর দল।

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মন্থর ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেটে ১০৯ রান করে পারটেক্স। রান তাড়ায় গাজী গ্রুপকে বিধ্বংসী শুরু এনে দেন মেহেদি। ৩ ওভার ৩ বলে তারা তুলে ফেলে ৪৩ রান।

এরপর বৃষ্টি নামলে খেলা কমিয়ে আনা হয়ে ৮ ওভারে। গাজী গ্রুপের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৭ রানের। পরের চার রান করতে দলটির খেলতে হয় ১২ বল!

দুর্দান্ত বোলিং করেন গাজীর বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। ৪ ওভারে রান দেন কেবল ৬, উইকেট অবশ্য পাননি।

২ ওভারে ১০ রান দিয়ে এক উইকেট নেওয়া মেহেদি ঝড় তুলে ১৩ বলে করেন ৩৩ রান। জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া গাজী গ্রুপকে তৃতীয় বলেই সাফল্য এনে দেন মেহেদি। ফিরতি ক্যাচে আব্বাস মুসা আলভিকে শূন্য রানে ফেরান এই অফ স্পিনার।

শুরুর ধাক্কা সামাল দেন হাসানুজ্জামান ও জয়রাজ শেখ। মহিউদ্দিনকে ওভারে দুই ছক্কা মেরে রানের চাকায় দম দেন হাসানুজ্জামান। পরে মুমিনুল হককে মারেন আরেকটি।

শেষ পর্যন্ত মুমিনুলই থামান এই ব্যাটসম্যানকে। ২৫ বলে ২৬ করেন ৩ ছক্কা ও এক চারে। জয়রাজ মন দেন উইকেট ধরে রাখায়। তার ৩৩ বলে ২৪ রানের প্রতিরোধ ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ।

দলকে টানতে পারেননি ধীমান ঘোষ, মইন খান। নাজমুল হোসেন মিলন এক ছক্কায় ১৯ বলে করেন ২১ রান। রাজিবুল ইসলামের অপরাজিত ২১ রানের ইনিংসে কোনোমতে একশ পার করে পারটেক্স।

রান তাড়ায় রীতিমত তাণ্ডব চালান মেহেদি। সুব্রত শেখরকে ছক্কায় ওড়ানোর পর মইনের উপর ঝড় বইয়ে দেন তিনি। এই অফ স্পিনারকে মারেন টানা তিন ছক্কা।

এরপরই নামে বৃষ্টি। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর খেলা শুরু হলে প্রথম বলেই ফিরে যান মেহেদি। ১৩ বলে ৪ ছক্কা ও এক চারে ৩৩ রান করেন তিনি। বাকি কাজ সারেন সৌম্য সরকার ও জাকির হাসান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পারটেক্স: ২০ ওভারে ১০৯/৭ (মুসা ০, হাসানুজ্জামান ২৬, জয়রাজ ২৪, ধীমান ৪, মইন ৮, নাজমুল ২১, রাজিবুল ২১*, জয়নুল ০, শাহবাজ ১*; মেহেদি ২-১-১০-১, নাসুম ৪-০-৬-০, মাহিউদ্দিন ৩-০-৩৬-৩, মুমিনুল ৩-০-১৩-১, মাহমুদউল্লাহ ৪-০-১৬-১, মুকিদুল ৪-০-২৬-১)।

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: (লক্ষ্য ৮ ওভারে ৪৭) ৫.৩ ওভারে ৪৭/১ (মেহেদি ৩৩, সৌম্য ১১*, জাকির ২*; জয়নুল ২-০-১৫-০, সুব্রত ২-০-১২-০, মইন ১.৩-০-২০-১)।

ফল: ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ৯ উইকেটে জয়ী গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।

ম্যান অব দা ম্যাচ: মেহেদি হাসান।

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব-ব্রাদার্স ইউনিয়ন

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে মোহামেডান ও ব্রাদার্সের ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। বৃষ্টি থামলেও সময়মতো মাঠ প্রস্তুত করতে না পারায় মোহামেডান ইনিংসের পর মাঠে গড়ায়নি বল।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা মোহামেডান ৯ উইকেটে করে ১৪৩। এরপরই বৃষ্টি নামলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে সুপার সিক্সের লড়াইয়ে থাকা দুটি দল।  

শুরুতেই পারভেজ হোসেনকে হারানোর ধাক্কা সামাল দেন আব্দুল মজিদ ও মাহমুদুল হাসান। দ্বিতীয় উইকেটে তাদের পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি মোহামেডানকে দেয় শক্ত ভিত। রান আউটে কাটা পড়ে ৩৫ রান করা মজিদ ফিরলে ভাঙে ৫৪ রানের জুটি।

এরপর বড় কোনো জুটি পায়নি দলটি। বেশিক্ষণ টিকেননি মাহমুদুল, ৩১ বলে ২৮ করে ফিরেন আব্দুল গাফফারের বলে।

ভালো শুরু ধরে রাখতে পারেননি গত ম্যাচে ফিফটি করা ইরফান শুক্কুর। একটি করে ছক্কা-চারে ১৩ বলে ১৯ করা এই ব্যাটসম্যানকে কট বিহাইন্ড করে দেন মানিক খান। সুজন হাওলাদারকে এক ওভারে দুই ছক্কায় ওড়ান শুভাগত হোম। দল পায় দেড়শ কাছাকাছি পুঁজি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মোহামেডান: ২০ ওভারে ১৪৩/৯ (মজিদ ৩৫, পারভেজ ৯, মাহমুদুল ২৮, ইরফান ১৯, শামসুর ৯, নাদিফ ১২, শুভাগত ১৫, তাসকিন ২, ইয়াসিন ৭*, আসিফ ১; আলাউদ্দিন ৪-০-২৭-২, সুজন ৩-০-২৩-১, রাহাতুল ৪-০-২৯-২, মানিক ৪-০-২৬-১, মাইশুকুর ২-০-১৭-০, নাঈম জুনি. ১-০-৩-০, গাফফার ২-০-১৩-১)।

ফল: ম্যাচ পরিত্যক্ত