আবাহনীর জয়ে আবার উজ্জ্বল মুশফিক

ছোট্ট একটি বিধ্বংসী ইনিংস খেলে আকাশে উড়ছিলেন আলাউদ্দিন বাবু। কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়লেন তিনি ফিল্ডিংয়ে। তার হাত থেকে পড়ল সহজ ক্যাচ। দলের সম্ভাবনারও সেখানেই ইতি। জীবন পেয়ে আরও একবার আবাহনীকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দিলেন মুশফিকুর রহিম।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2021, 12:28 PM
Updated : 5 June 2021, 02:03 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৯ উইকেটে হারিয়ে আবাহনী লিমিটেড ধরে রাখল জয়ের ধারা।

১১ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে আলাউদ্দিন ও জাহিদুজ্জামানের দুর্দান্ত দুটি ক্যামিওতে ব্রাদার্স তোলে ১০১ রান। আবাহনী সেই চ্যালেঞ্জ টপকে যায় ৭ বল বাকি রেখে।

ব্যাটিংয়ে নামা আবাহনীর তিন ব্যাটসম্যানই রাখেন উল্লেখযোগ্য অবদান। ঝড়ো সূচনায় রান তাড়ায় গতি এনে দেন মুনিম শাহরিয়ার। মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও মুশফিকের জুটি শেষ করে ফেরে কাজ।

আবাহনীর এটি টানা তৃতীয় জয়। মুশফিক বড় অবদান রাখলেন দুটিতেই। এটির আগে প্রথম ম্যাচে বৃষ্টিবিঘ্নিত রান তাড়ায় সেরা হয়েছিলেন আবাহনী অধিনায়ক।

অথচ তিনি আউট হতে পারেন ১৭ রানে, আবাহনীর জয় তখনও ছিল বেশ দূরে। সুজন হাওলাদারের বলে স্লগ করে তিনি ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। আলাউদ্দিন মুঠোয় নিয়েও ফেলে দেন শেষ মুহূর্তে। আর সুযোগ দেননি মুশফিক।

টি-টোয়েন্টি অভিষেকে দুর্দান্ত বোলিং করেন তানজিম হাসান সাকিব।

অধিনায়কের আগে আবাহনীকে রান তাড়ায় এগিয়ে নেন মুনিম শাহরিয়ার। ইনিংসে তৃতীয় ওভারে তিন বাউন্ডারি মারেন তিনি আব্দুল গাফফারকে। পরে ছক্কায় ওড়ান হাবিবুর রহমানকে। স্লগ করতে গিয়ে তিনি বোল্ড হয়ে যান পরের বলেই। তবে ১২ বলে ২৫ রানের ইনিংসটিতে দলের চাওয়া তিনি পূরণ করে যান।

সেখান থেকে নাঈম ও মুশফিকের জুটিতে আবাহনীর এগিয়ে চলা। জীবন পাওয়ার শটটি ছাড়া মুশফিক ছিলেন প্রায় নিখুঁত। টাইমিং, প্লেসমেন্ট আর উদ্ভাবনী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীতে হতাশ করেন ব্রাদার্সকে। নাঈম তাকে সঙ্গ দেওয়ার ফাঁকে ফায়দা নেন বাজে বলের। জয় ধরা দেয় তাই অনায়াসেই।

ম্যাচের প্রথম ভাগে টস হারা ব্রাদার্সকে ব্যাটিংয়ে নামার আগে লম্বা সময় অপেক্ষায় রাখে বৃষ্টি। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার এগোতে থাকেন দুই গতিতে। অধিনায়ক মিজানুর রহমান ২০ করেন ১৪ বলে। সমান রান করতে জুনায়েদ সিদ্দিক খেলেন ২৩ বল!

এই দুজনকেই থামান তানজিম হাসান সাকিব। পরে তিনি নেন হাবিবুর রহমানের উইকেটও। মাঝে মাইশুকুর রহমান ও রাহাতুল ফেরদৌসকে পরপর দুই বলে ফেরান আরাফাত সানি।

৮ ওভার শেষে ব্রাদার্সের রান ছিল ৫ উইকেটে ৫১। শেষ তিন ওভারে তাণ্ডব চালান আলাউদ্দিন ও জাহিদুজ্জামান। তাইজুল ইসলামকে দুটি স্লগ সুইপে গ্যালারিতে বল পাঠান আলাউদ্দিন। সাইফ উদ্দিনকে পুল শটে আছড়ে ফেলেন গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের সিঁড়িতে।

টি-টোয়েন্টি অভিষেকে দারুণ গতি ও আগ্রাসনে ২ ওভারে ৯ রানে ৩ উইকেট নেওয়া তানজিম পাননি আরেক ওভার। শেষ ওভার মেহেদি হাসান রানার বলে দুটি করে চার ও ছক্কা মারেন জাহিদুজ্জামান। শেষ তিন ওভার থেকে আসে ৫১ রান।

শেষ রক্ষা তবু হলো না ব্রাদার্সের। তাদের আক্ষেপ হয়ে রইল আলাউদ্দিনের ক্যাচ মিস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ব্রাদার্স: ১১ ওভারে ১০১/৫ (মিজানুর ২০, জুনায়েদ ২০, মাইশুকুর ০, রাহাতুল ০, হাবিবুর ৪, আলাউদ্দিন ২৪*, জাহিদুজ্জামান ২৫*; সাইফ উদ্দিন ৩-০-২৪-০, আরাফাত সানি ২-০-৫-২, মেহেদি রানা ২-০-৩৭-০, তানজিম ২-০-৯-৩, মোসাদ্দেক ১-০-৬-০, তাইজুল ১-০-১৫-০)।

আবাহনী:  ৯.৫ ওভারে ১০২/১ (নাঈম ৩৬*, মুনিম ২৫, মুশফিক ৩৭*; আলাউদ্দিন ২-০-২১-০, হাবিবুর ২-০-১৯-১, গাফফার ১-০-১৫-০, সুজন ২-০-১৭-০, নাঈম জুনিয়র ১-০-৯-০ মানিক ১.৫-০-২১-০)।

ফল: আবাহনী লিমিটেড ৯ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: তানজিম হাসান সাকিব।