বেয়ারস্টো ঝড়ে জিতল ইংল্যান্ড

কঠিন সময়ে নেমে গড়লেন প্রতিরোধ। পাল্টা আক্রমণে উড়িয়ে দিলেন সব চাপ। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে মিলিয়ে দিলেন কঠিন হয়ে যাওয়া সমীকরণ। দক্ষিণ আফ্রিকায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার দিনে উজ্জ্বল জনি বেয়ারস্টো।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2020, 08:17 PM
Updated : 27 Nov 2020, 08:21 PM

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ইংল্যান্ড।

ফাফ দু প্লেসির ফিফটিতে ৬ উইকেটে ১৭৯ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। চার বল বাকি থাকতেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ওয়েন মর্গ্যানের দল।

ছক্কায় ম্যাচ শেষ করা বেয়ারস্টো ৪৮ বলে নয় চার ও চার ছক্কায় করেন ৮৬ রান। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই।

গত মার্চের পর এই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলল দক্ষিণ আফ্রিকা। করোনাকালে এটি ইংল্যান্ডের চতুর্থ সিরিজ। এর আগে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছে তারা।

কেপ টাউনের নিউল্যান্ডসে শুক্রবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই টেম্বা বাভুমাকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ধাক্কা সামলায় দলের সেরা দুই ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কক ও ফাফ দু প্লেসি।

পাঁচ ওভারে ৫০ স্পর্শ করে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। টম কারানের এক ওভার থেকেই ২৪ রান নেন দু প্লেসি। তার ছয় বাউন্ডারির চারটিই আসে সেই ওভারে।

খরুচে সেই ওভারের পর দুই ব্যাটসম্যানকে ডানা মেলতে দেননি ইংলিশ বোলাররা। ২৩ বলে ৩০ রান করা অধিনায়ক ডি কককে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ক্রিস জর্ডান।

৩৪ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টায় ছিলেন দু প্লেসি। পারেননি তিনি। স্যাম কারানকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়ে থামেন সাবেক এই অধিনায়ক। ৪০ বলে খেলা তার ৫৮ রানের ইনিংসে দুটি ছক্কার পাশে চারটি চার।

ছক্কায় এগোচ্ছিলেন রাসি ফন ডার ডাসেন। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের ইনিংস থামে ছক্কার চেষ্টাতেই। জফ্রা আর্চারের সাদামাটা এক ডেলিভারিতে টাইমিং করতে না পেরে সীমানায় ক্যাচ দেন তিন ছক্কায় ৩৭ রান করা ফন ডার ডাসেন।

শেষের দিকে হাইনরিখ ক্লাসেন (১২ বলে ২০) ও অভিষিক্ত জর্জ লিন্ডের (৬ বলে ১২) ব্যাটে ১৮০-এর কাছাকাছি যায় দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ।

দারুণ বোলিংয়ে স্যাম কারান ২৮ রানে নেন ৩ উইকেট। খরুচে বোলিংয়ে তার ভাই টম কারান ৫৫ রানে নেন একটি।

রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। অভিষেকে দ্বিতীয় বলেই উইকেট পান লিন্ডে। তাকে কাট করতে গিয়ে ডি ককের গ্লাভসবন্দি হন জেসন রয়। আরেক ওপেনার জস বাটলারকে থামান লুঙ্গি এনগিডি।

তিন চার মেরে ডানা মেলার আভাস দিয়েছিলেন দাভিদ মালান। তবে তাকেও বেশিদূর যেতে দেননি লিন্ডে। বেয়ারস্টো ও বেন স্টোকসের ব্যাটে শুরুর ধাক্কা সমাল দেয় ইংল্যান্ড। জুটিতে অগ্রণী ছিলেন বেয়ারস্টো, পরে রানের গতি বাড়ান স্টোকসও।

২৭ বলে এক চার ও তিন ছক্কায় ৩৭ রান করা স্টোকসকে বিদায় করে ৮৫ রানের জুটি ভাঙেন তাবরাইজ শামসি। তখনও ইংল্যান্ডের জন্য সমীকরণ ছিল বেশ কঠিন।

ষোড়শ ওভারে বিউরান হেনড্রিকসের ওভার থেকে ২৮ রান নিয়ে ম্যাচ নিজেদের মুঠোয় নিয়ে আসেন বেয়ারস্টো ও মর্গ্যান। বোলিংয়ে ফিরে মর্গ্যানকে ফিরিয়ে ২০ বলে গড়া ৪০ রানের জুটি ভাঙেন এনগিডি। স্যাম কারানকে নিয়ে বাকিটুকু অনায়াসে সারেন বেয়ারস্টো।  

দক্ষিণ আফ্রিকার লিন্ডে ও এনগিডি নেন দুটি করে উইকেট। খরুচে বোলিংয়ে ৫৬ রান দিয়ে উইকেটশূন্য হেনড্রিকস।

আগামী রোববার পার্লে হবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৭৯/৬ (বাভুমা ৫, ডি কক ৩০, দু প্লেসি ৫৮, ফন ডার ডাসেন ৩৭, ক্লাসেন ২০, ফন বিলিয়োন ৭, লিন্ডে ১২; স্যাম কারান ৪-০-২৮-৩, আর্চার ৪-০-২৮-১, টম কারান ৪-০-৫৫-১, রশিদ ৪-০-২৭-০, জর্ডান ৪-০-৪০-১)

ইংল্যান্ড: ১৯.২ ওভারে ১৮৩/৫ (রয় ০, বাটলার ৭, মালান ১৯, বেয়ারস্টো ৮৬*, স্টোকস ৩৭, মর্গ্যান ১২, স্যাম কারান ৭*; লিন্ডে ৪-০-২০-২, রাবাদা ৪-০-৩২-০, হেনড্রিকস ৪-০-৫৬-০, এনগিডি ৩.২-০-৩১-২, শামসি ৩-০-২৭-১, ক্লাসেন ১-০-১৪-০ )

ফল: ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: জনি বেয়ারস্টো।