করোনাভাইরাসের বিস্তার এড়াতে বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটারদের প্রায় সবাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন নিয়মিত। সবাইকে অনুরোধ ও উদ্বুদ্ধ করছেন সব নিয়ম ও নির্দেশনা মেনে চলতে।
গত বৃহস্পতিবারও নিজের ফেসবুক পাতায় করোনাভাইরাস নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন মাশরাফি। ২০১৬ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে একটি ম্যাচের সময় গ্যালারি থেকে এক ভক্ত মাঠে ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরেছিলেন মাশরাফিকে। সেই ছবিটি দিয়ে বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক লিখেছিলেন, “না, এভাবে কাছে আসা যাবে না। না, এভাবে নিজের পরিচিত বা দূরের কাউকে জড়িয়ে ধরা যাবে না।” সঙ্গে ছিল করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা নিয়ে বিশদ লেখা।
যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে দেখা না করে হোটেলে উঠেছেন সাকিব আল হাসান, নিয়ম মেনে কোয়ারেন্টিনে আছেন, ভিডিওতে নিজেই বলেছেন। নিজের অনুরোধ দিয়েই সবাইকে অনুরোধ করেছেন নিয়ম মানতে।
আরেকটি ভিডিওতে রোববার মুশফিক দেখিয়েছেন, ফিটনেস ধরে রাখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঘরে বসেই।
তামিম ইকবাল এমনিতে নিজেকে ঘরে আটকে রাখতে পারেন কমই। অনুশীলন, ফিটনেস নিয়ে কাজ করা তো বটেই, রেস্টুরেন্টে খাওয়া বা ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন। তিনিও এখন গৃহবন্দী করে রেখেছেন নিজেকে। গত শনিবার ভিডিও বার্তায় তামিম বলেছেন, “সবাইকে পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। দেশ, পরিবার ও সমাজের জন্য আমাদের সবাইকে কিছুদিনের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। সবাই মিলে এই লড়াইয়ে জিততে হবে।”
টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকও আহবান করেছেন, সবাই মিলে লড়াই করতে, “সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। দয়া করে সবাই ঘরে থাকুন। চলুন, লড়াই করি এই সময়ের সঙ্গে।”
নিজেদের ঘরে থেকেই একসঙ্গে লড়াই করার অনুরোধ জানিয়েছেন কিপার ব্যাটসম্যান এনামুল হক।
“আমরা নিজেদের সাহায্য করলেই আল্লাহর সাহায্যও পাব। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক সতর্ক থাকতে হবে। অন্যদেরও সতর্ক করতে হবে। আলাদা বাসায় থেকেও একসঙ্গে এটি করতে হবে আমাদের। ইনশাল্লাহ, সবকিছু আবার ঠিক হয়ে যাবে।”
একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া ও ভীড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন সৌম্য সরকার। ক্রিকেটারদের আরও অনেকেই বার্তা দিয়েছেন ঘর থেকে বের না হতে।
রুবেল হোসেনের একটি বার্তা ছিল দারুণ সাহসী। এই দুঃসময়ে ও মানুষের আতঙ্কের সুযোগ নিয়ে যেসব ব্যবসায়ীরা দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাদের একহাত নিয়েছেন এই পেসার।
“লোভী ও নির্মম একটি জাতি আমরা। চীনে এত বড় বিপর্যয় গেল, মাস্কের দাম কমিয়ে দিল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। কারণ তারা মানুষ। আর করোনার নাম শুনেই আমাদের এখানে ৫ টাকার মাস্ক ৫০ টাকা, ২০ টাকার মাস্ক ১০০-১৫০ টাকা। কারণ আমরা লোভী অমানুষ।”
“শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি একাত্তরের সেই বীর সন্তানদের, যাদের মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। অথচ আজ এই বিপর্যয়ে আমরা কেন এক নই? কেন? মাস্ক, স্যানিটাইজার ও মুদি বাজারের সমস্ত জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। ধিক্কার জানাই ওই সমস্ত লোভী মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের, যারা কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে। তারাই আসলে দেশের করোনাভাইরাস।”